সাংবাদিকদের চাকরি রক্ষা করবে ‘সম্প্রচার আইন’: তথ্যমন্ত্রী

675

ঢাকা, ২৪ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস): তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার সম্প্রচার সাংবাদিক ও কর্মীদের চাকরি ও আনুসাঙ্গিক সুবিধার আইনি সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে।
সম্প্রচার গণমাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আসুন টেলিভিশন শিল্পকে বাঁচাতে সবাই এক সাথে কাজ করি। যদি ‘সম্প্রচার আইন’ পাশ হয়, তবে আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।’
পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের সভাপতিত্বে ব্রডকাস্টিং মিডিয়া সেন্টার (বিজেসি) ও প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) যৌথভাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের গণমাধ্যম খাতে বড় ধরনের বিপ্লব হয়েছে।
এ ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশে প্রথম কোন বেসরকারি টেলিভিশনকে লাইসেন্স দেন। এখন দেশে প্রায় ৩৪টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে এবং ৪৪টি চ্যানেল লাইসেন্স পেয়েছে।’
ড. হাছান বলেন, টেলিভিশন শিল্পটি বিস্তৃত হচ্ছে। বিজ্ঞাপন কমে যাওয়াসহ বেশ কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এখন শিল্পটিকে টিকে থাকতে হলে সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
মন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমি অক্লান্তভাবে সাংবাদিকদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু এ জন্য আমাকে সংশ্লিষ্ট সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা দরকার। সাংবাদিকরা সমাজের দর্পন। তাদের সুরক্ষা দেয়া আমাদের দায়িত্ব।’
গণমাধ্যম সম্প্রচারের ডিজিটালাইজেশন সম্পর্কে হাছান বলেন, ‘এই খাতে ডিজিটালাইজেশনের পর দেশের গণমাধ্যম ও এর কর্মীদের স্বার্থ নিশ্চিত হবে।’
তিনি বলেন, বিভিন্ন পদক্ষেপ অনুসরণের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কোন ধরনের অনিয়ম হলে সরকার ব্যবস্থা নেবে।
তিনি আরো বলেন, বিদেশের বিভিন্ন চ্যানেলে বাংলাদেশী বিজ্ঞাপন সম্প্রচার বন্ধ হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পাশাপাশি, ক্যাবেল অপারেটররা সম্প্রচারের দিনক্ষণ অনুযায়ী বাংলাদেশী টিভি চ্যানেলগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখছে। তালিকায় বাংলাদেশী চ্যানেলের পর বিদেশী চ্যানেলগুলোকে রাখা হচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, কোন কোন টেলিভিশন চ্যানেল বিদেশী টিভি সিরিজ বাংলায় ডাবিং করে সম্প্রচার করছে। এটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
ড. হাছান বলেন, ‘তাই মন্ত্রণালয় ডাবিংকৃত সিরিয়ায় সম্প্রচারের জন্য সরকারের অনুমোদন নিতে নির্দেশ দিয়েছে। এ ব্যাপারটি তদারকির জন্য শিগগিরই একটি প্রিভিউ কমিটি গঠন করা হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যমের উন্নয়নে ইতোমধ্যেই বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।’
তিনি বলেন, অনেক কোম্পানি বিশেষত মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলো বিদেশের দ্বিতীয় গ্রেডের মডেল দিয়ে বিজ্ঞাপন বানাচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশেই আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মডেল ও কলাকুশলী আছে। তাই সরকার বিজ্ঞাপনে বিদেশী শিল্পীদের নিষিদ্ধ ঘোষণার পরিকল্পনা করছে।’
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান বলেন, সরকার সম্প্রচার মাধ্যমগুলোতে শৃঙ্খলা আনতে গত ছয় মাসে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
মন্ত্রী বলেন, সরকার শুধু মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিচালনার জন্য মোবাইল কোম্পানিগুলোকে লাইসেন্স দিয়েছে। কিন্তু তারা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভিডিওর পাশাপাশি বিজ্ঞাপন সৃষ্টি করছে, এটা গ্রহণযোগ নয়। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ড. হাছান সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুত না করার জন্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাংবাদিকরা তাদের টিভি চ্যানেলের জন্য ২৪ ঘন্টা কাজ করে যাচ্ছেন।
সভায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন ছিলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে)’র সভাপতি মোল্লা জালাল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে)’র সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, বিজেসি ট্রাস্টি মোজাম্মেল বাবু, মুন্নী সাহা, মামুনুর রহমান খান এবং বিজেসি’র চেয়ারম্যান রেজাউন হক রাজা।