সরকার শিশুশ্রম মুক্ত বাংলাদেশ গঠনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে : শ্রম প্রতিমন্ত্রী

296

ঢাকা, ১৯ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস): শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেছেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ২০২৫ সালের মধ্যে শিশুশ্রম মুক্ত বাংলাদেশ গঠনকে সরকার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। সন্তানকে ভবিষ্যতের জন্য যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে বাবা-মায়ের ইচ্ছাশক্তি প্রবল থাকলে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে কোন শিশু থাকবে না।
আজ সকালে বরিশাল সার্কিট হাউজ সম্মেলনকক্ষে ‘ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন এবং গহকর্মী সুরক্ষা নীতি ২০১৫’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত বিভাগীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বরিশাল বিভাগীয় প্রশাসন, বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর এবং বরিশাল কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানর আয়াজন করে। কর্মশালায় সহযোগিতা করে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ একথা জানানো হয়।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে জনসচেতনতার পাশাপাশি প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিচ্ছে সরকার। এই লক্ষ্যে দুই’শ ৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে এক লাখ শিশুকে লক্ষ্য করে ছয় মাসের অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা এবং চার মাসের প্রশিক্ষণ দিয়ে শিশুশ্রম হতে প্রত্যাহার করা হবে। এই এক লাখ শিশুর বাবা-মা’কে প্রতিমাসে এক হাজার টাকা এবং প্রশিক্ষণ শেষে আত্মকর্মসংস্থানের জন্য এককালিন ১৫ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, উন্নত-সমৃদ্ধ শিক্ষিত জাতি গঠনে শিশুশ্রমকে না বলতে হবে। শ্রম আইন অনুযায়ী ১৪ বছরের নিচে কোন শিশুকে কেউ শ্রমে লাগাতে পারবেন না। চৌদ্দ থেকে আঠারো বছরের নিচে ঝুঁকিপূর্ণ নয় এমন কাজে লাগাতে পারবেন। একইসাথে শ্রম প্রতিমন্ত্রী গৃহকর্মীদের সাথে ভাল ব্যবহার এবং তাদের প্রতি মানবিক হওয়ার জন্য সমাজের বৃত্তবানদের প্রতি আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে সুনিদিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে গড়ে তুলতে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজে তাঁর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে তিনি আশ্বাস দেন।
মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আলী আজম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুদের প্রত্যাহার করতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির সাথে সাথে এ সকল শিশুদের নিরাপত্তাবলয় কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশুর প্রকৃত সংখ্যা জানতে খুব শীঘ্রই একটি বেইজ লাইন সার্ভেরও ব্যবস্থা করা হবে।
কর্মশালায় জানানো হয়, সরকার ঘোষিত ৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ কাজের মধ্যে ইতোমধ্যে গার্মেন্টসসহ তিনটি খাতকে শিশু শ্রম মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। শীঘ্রই আরো ১১টি খাতকে শিশুশ্রমমুক্ত ঘোষণা করতে কাজ করছে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মাদ ইয়ামিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড.মোল্লা জালাল উদ্দিন, শ্রম অধিদপ্তরর মহাপরিচালক এ কে এম মিজানুর রহমান, জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তৃতা দেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শিবনাথ রায়।
কর্মশালায় বরিশাল বিভাগের জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, শিশুশ্রমে নিয়োজিত শিশু, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।