জাপানী বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০২১ সালের মধ্যে আড়াইহাজারে প্রস্তুত হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল

469

ঢাকা, ১৮ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : আগামী ২০২১ সালের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানী বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রস্তুত করা হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি (বেজা) প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
ভূমিতে মাটি ভরাটের কাজ এবছরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছরের প্রথমদিকে শুরু হবে। মাটি ভরাট সম্পন্ন হতে ১৫ মাস সময় লাগবে। জাপান আন্তর্জাতিক কোঅপারেশন এজেন্সির (জাইকা) বাংলাদেশ কার্যালয়ের প্রতিনিধি ওতারু ওসোয়া বাসস’কে এ কথা জানান।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, মাটি ভরাটের কাজ ২০২১ সালের প্রথম দিকে শেষ হয়ে যাবে এবং এরপর বেজা আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের মাঝে প্লট বিক্রি করা শুরু করবে।
ওতারু ওসোয়া বলেন, জাপানের অন্যতম বৃহৎ বাণিজ্যিক কোম্পানি সুমিটোমো করপোরেশন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বেজার সাথে অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি স্পেশাল পারপাস কোম্পানী (এসপিসি) প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বেজার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ চুক্তি সম্পাদন করেছে।
তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের জন্য সকল সুযোগসুবিধা নিশ্চিতের মাধ্যমে আগামী এক মাসের মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রস্তুত করার লক্ষ্যে কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠার করা হবে।
তিনি জানান, জাইকা অর্থনৈতিক অঞ্চলের অধীনে ‘ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন (এফডিআই)’ প্রকল্পে অর্থায়ণ করছে। প্রকল্পের আওতায় জাপানি এবং অন্যান্য এফডিআই কোম্পানিগুলোকে স্বল্প,মাঝারি ও দীর্ঘ মেয়াদে মূলধন বিনিয়োগ এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগ উন্নয়নে কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
প্রকল্পের আওতায় জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারী, জাপানিজ এবং বাংলাদেশি বা অন্যান্য বিদেশি যৌথ উদ্যোগ এবং বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীরা একশ’ কোটি ডলারের অধিক চুক্তি হবে বলে আশা করছে ।
অর্থনৈতিক অঞ্চলে সড়ক, বিদ্যুৎ প্লন্ট ও সাব-স্টেশনসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে জাইকা অর্থায়ন করবে বলে তিনি জানান। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নে এক থেকে দেড় বছর বছর সময় নিবে এবং আগামী ২০২২ সালের মধ্যে সবরকম উন্নয়ন কাজ শেষ হবে।
তিনি আশা করে বলেন এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে সবরকম সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে উচ্চ পর্যায়ের শিল্প কারখানা স্থাপন করা হবে।
এর আগে বেজা’র এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ১ হাজার একর জায়গায় গড়ে তোলা হবে। ইতোমধ্যে আমরা ৫ শ’ একর জমি অধিগ্রহণ করেছি। অবশিষ্ট জায়গার মধ্যে ২ শ’ একর অধিগ্রহণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। দরপত্রের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। মাটি ভরাটের জন্য শিগগিরই ডেভেলপার নিযুক্ত করা হবে বলে তিনি জানান।
অর্থনৈতিক অঞ্চলটি পরিকল্পিত ও পরিবেশ বান্ধব করে গড়ে তোরা হবে বলে কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেন। এটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পরিকল্পিত শিল্পায়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।
২০১৪ সালে বাংলাদেশ ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দুই দেশের সফর বিনিময়ের পর থেকে বাংলাদেশে দিন দিন জাপানি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে জাপানি ব্যবসায়ি সমাজের মধ্যে বাংলাদেশ পরবর্তী বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে নজর দেয়া শুরু হয়েছে।
বেজা অঞ্চলটিতে ২ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বৈদেশিক বিনিয়োগ আসবে বলে আশা করছে,যার বেশিরভাগই জাপানি বিনিয়োগ।
অঞ্চলটিতে কৃষি-খাদ্য, হালকা প্রকৌশল, রাসায়নিক, যানবাহন সংযোজন, তৈরি পোষাক এবং ওষুধ কারখানা স্থাপন হবে বলে আশা বেজার। জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে প্রায় এক লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।