সরকারের যুগোপযোগী কর্মসূচির ফলে ব্যবসায়ে শিক্ষিত নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে : গবেষণার তথ্য

297

ঢাকা, ১৭ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গৃহিত নারী উন্নয়নে যুগোপযোগী নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে ব্যবসায়ে শিক্ষিত নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০০৯ সালে গ্রাজ্যুয়েট পর্যায়ে শিক্ষিত ২০ শতাংশ নারী ব্যবসায় সম্পৃক্ত ছিলেন। ২০১৭ সালে এসে তা বেড়ে ২৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতে নারী উদ্যোক্তা : বাংলাদেশ প্রেক্ষিত ২০১৭’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফলে এ তথ্য উঠে এসেছে। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আজ এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
এসএমই ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন প্রধান অতিথি ছিলেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন কে এম হাবিব উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন বিআইডিএস’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান, এসএমএই ফাউন্ডেশনের পরিচালক ইসমত জেরিন খান প্রমুখ মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।
গবেষণা ফলাফলে উল্লেখ করা হয়, সরকারের ব্যবসাবান্ধব নীতির কারণে ২০০৯ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া নারীরা শিল্পায়ন ও ব্যবসায় অধিকহারে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। একই সময়ে একজন নারী উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পথে সামাজিক ও পারিবারিক সমর্থনও আগের চেয়ে অনে জোরদার হয়েছে। ব্যবসায়িক ঋণ গ্রহণে নারী উদ্যোক্তারা বিশেষ সহায়তা পাচ্ছেন এবং তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে তারা অনেক এগিয়ে গেছেন।
গবেষণার ফলাফলে আরও জানানো হয়, ২০০৯ সালে ৪২ শতাংশ নারীকে পারিবারিকভাবে ব্যবসায় সম্পৃক্ত হতে নিরুৎসাহিত করা হতো। ২০১৭ সালে তা ৪ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০০৯ সালে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ২৮ শতাংশ নারীকে সামাজিক প্রতিবন্ধকতার মোকাবেলা করতে হয়েছে। ২০১৭ সালে এটি ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০০৯ সালে ১০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা ট্যাক্স দিতেন, যা ২০১৭ সালে ৫৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি ২০০৯ সালে ১০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা ব্যবসার জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করতেন, যা ২০১৭ সালের বেড়ে ৩৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এসবই বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক বলে গবেষণার ফলাফলে পাওয়া গেছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী এবং নারীদের বাদ দিয়ে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ বিবেচনায় অর্থনৈতিক কর্মকা-ে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কার্যকর গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্য অর্জনে সরকার অগ্রাধিকারভিত্তিতে নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যার সমাধান করছে। নারীদের নিয়ে এসএমই ফাউন্ডেশনের বড় ধরণের গবেষণা চালালে শিল্প মন্ত্রণালয় এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
নূরুল মজিদ বলেন, জাতিগঠনে বাংলাদেশের নারীদের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের নারীরা বিভিন্ন পেশায় যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে করে আগামী দশ বছর পর নারীদের আলাদা করে দেখার কোনো প্রয়োজন হবে না। বাংলাদেশের জনগণের ক্রয় ক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি দেশিয় বাজারের বিপুল চাহিদা মেটাতে মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদনের জন্য নারী উদ্যোক্তাদের প্রতি আহবান জানান।