বাসস সংসদ-৫ : বিএনপি আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে : চিফ হুইপ

323

বাসস সংসদ-৫
বাজেট-আলোচনা
বিএনপি আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে : চিফ হুইপ
সংসদ ভবন, ২৭ জুন, ২০১৮ (বাসস) : প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেছেন, সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের লালন-পালন ও আশ্রয় দিয়ে বিএনপি আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি’র সময় এদেশ বহিঃবিশ্বে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি পায়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ বিকেল ৩টা ২০মিনিটে অধিবেশনের শুরুতে মন্ত্রীদের জন্য প্রশ্ন-জিজ্ঞাসা-উত্তর টেবিলে উপস্থাপন শেষে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
গত ৭ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট আলোচনার দশম দিনে আজ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী শাহজাহান কামাল, রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, সরকারি দলের ডা. মোহাম্মদ আমানুল্লাহ, মো. সলিম উদ্দিন তরফদার, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, ইকবালুর রহিম, শরীফ আহমেদ, গোলাম দস্তগীর গাজী, বেগম শিরিন নাঈম, আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, জয়া সেন গুপ্তা, বেগম হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির শেখ হাফিজুর রহমান ও জাতীয় পার্টির নূরুল ইসলাম মিলন অংশ নেন।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামী করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেন, জিয়াউর রহমান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে সংসদে আইন করে সেই হত্যার বিচার বন্ধ করে খুনীদের পুনর্বাসিত করেছে। তেমনিভাবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নির্দেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা করে আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে।
তিনি বলেন, তারা গণতন্ত্রের জন্য মায়া কান্না করে। গণতন্ত্র বলতে বিএনপি কি বুঝাতে চায়। আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা করে মানুষ হত্যা কি গণতন্ত্র?
চিফ হুইপ বলেন, শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে অবশ্যই উন্নত দেশে পরিণত হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মহাকাশ, সমুদ্র ও স্থলসীমানা জয় করেছে। এখন মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৭৫২ ডলার, যা বিএনপির আমলে ছিল মাত্র ৯শ’ ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৮ গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতুর কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে, কর্ণফুলী টানেল, ফ্লাইওভার, মেট্রোরেলসহ সকল ক্ষেত্রে অভাবনীয় উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।
রেলপথ একটি নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উল্লেখ করে রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক বলেছেন, বর্তমান সরকার রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করে ধ্বংস প্রায় রেলের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করে রেলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। রেলপথ উন্নয়নে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ে এখন বিশ্বমানের সেবা দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করছে।
তিনি বলেন, পদ্মাসেতু রেল সংযোগসহ ঢাকা চট্টগ্রাম ডাবল লাইনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, খুলনা-মংলা রেললাইনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, দোহাজারী-কক্সবাজারের কাজ এগিয়ে চলছে। আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন নির্মাণ কাজ চলছে। ঢাকা থেকে পদ্মাসেতু অতিক্রম করে যশোর পর্যন্ত রেললাইন যাবে। যাত্রীসেবা বাড়ানোর জন্য নতুন-নতুন এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা হয়েছে।
মুজিবুল হক বলেন, ২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। তখন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম সরাসরি বুলেট ট্রেন চালু করা হবে। এই ট্রেনে ২ ঘন্টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়া যাবে।
চলতি বছরে বিমানের লোকসানের কথা উল্লেখ করে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী শাহজাহান কামাল বলেন, বিমানকে যদি আবারো মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেয়া হয় তাহলে অবশ্যই এটিকে লাভজনক করা সম্ভব। বিমানবন্দরে বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিমানের সকল অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা দূর করে বিমানবন্দরে শৃংখলা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। খুলনা অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে বর্তমান সরকার খান জাহান আলী বিমানবন্দর স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে জমি অধিগ্রহণের জন্য টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সিলেট থেকে সরাসরি ঢাকা হয়ে লন্ডন বিমান চলাচলের জন্য ৪৫০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ৬টি বোর্ডিং ব্রীজ স্থাপন করা হয়েছে। ক্রমবর্ধমান যাত্রী চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ২০২২ সাল নাগাদ এই টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শেষ হবে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের উন্নয়ন কাজও চলমান রয়েছে।
বাসস/এমআর/এমএসএইচ/২০৩৫/বেউ/-আসচৌ