বিশাখাপত্নম টেস্ট : এলগারর-ডি ককের জোড়া সেঞ্চুরিতে লড়াই করলো দক্ষিণ আফ্রিকা

314

বিশাখাপত্নম, ৪ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস) : ওপেনার ডিন এলগার ও অধিনায়ক ডি ককের জোড়া সেঞ্চুরিতে ভারতের বিপক্ষে বিশাখাপত্নম টেস্টে দুর্দান্ত লড়াই করছে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। এলগারের ১৬০ ও ডি ককের ১১১ রানের উপর ভর করে প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ৮ উইকেটে ৩৮৫ রান করেছে প্রোটিয়ারা। ফলে ২ উইকেট হাতে নিয়ে ১১৭ রানে পিছিয়ে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
দুই ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ২১৫ ও রোহিত শর্মার ১৭৬ রানের কল্যাণে ৭ উইকেটে ৫০২ রানে ইনিংস ঘোষনা করে ভারত। দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে ভারত ইনিংস ঘোষনার পর নিজেদের ব্যাটিং শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০ ওভার ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে বিপদে পড়ে প্রোটিয়ারা। স্কোর বোর্ডে ৩৯ রান উঠতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওপেনার আইডেন মার্করাম ৫, তিউনিস ডি ব্রুইনা ৪ ও ড্যান পিট খালি হাতে প্যাভিলিয়নে ফিরেন। এলগার ২৭ ও তেম্বা বাভুমা ২ রানে অপরাজিত থেকে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেন।
তৃতীয় দিনের সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই বাভুমাকে শিকার করেন ভারতকে সাফল্য এনে দেন পেসার ইশান্ত শর্মা। ১৮ রান করেন বাভুমা। দলীয় ৬৩ রানে বাভুমার বিদায়ে ক্রিজে এলগারের সঙ্গী হন অধিনায়ক ফাফ ডু-প্লেসিস। উইকেটের সাথে দ্রুত মানিয়ে নিয়ে ভারতীয় বোলারদের সামনে রুখে দাড়ান এলগার ও ডু-প্লেসিস। ফলে দলের স্কোর একশ ছাড়িয়ে দেড়শও অতিক্রম করে ফেলে। এলগারের হাফ-সেঞ্চুরির পর অর্ধশতকে পৌঁছান ডু-প্লেসিসও। কিন্তু টেস্ট ক্যারিয়ারের ২০তম হাফ-সেঞ্চুরির পর নিজের ইনিংসটা বড় করতে পারেননি ডু-প্লেসিস। অশ্বিনের তৃতীয় শিকার হবার আগে ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ১০৩ বলে ৫৫ রান করেন ডু-প্লেসিস। চতুর্থ উইকেটে এলগারের সাথে ১১৫ রান যোগ করেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক।
অধিনায়কের বিদায়ে এলগারের সাথে জুটি বাঁধেন উইকেটরক্ষক ডি কক। উইকেটের আচরন বুঝে ও ভারতীয় বোলারদের বোলিং লাইন-লেন্থ বুঝে খেলার চেষ্টা করেন ডি কক। অনপ্রান্তে সেঞ্চুরির দিকে হাটচ্ছিলেন এলগার। শেষ পর্যন্ত ভারতের অশ্বিনকে ছক্কা মেরে ১৭৫তম বলে বড় ফরম্যাটে এক ডজন সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।
এলগারের সেঞ্চুরির পর দক্ষিণ আফ্রিকার রানের চাকা ঘুড়াতে থাকেন ডি কক। ওভার প্রতি ৩-এর সামান্য বেশি রান তুলে দলের স্কোরকে বড় করতে থাকেন তারা। ঁ এই দু’জনের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ৩শ রানের কোটা পেরিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। পাশাপাশি নিজের দেড়শ রানও পূর্ণ করেন এলগার। তবে শততম ওভারের তৃতীয় বলে ভারতের রবীন্দ্র জাদেজার বলে চেতেশ্বর পূজারাকে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যার এলগার। ১৮টি চার ও ৪টি ছক্কায় ২৮৭ বলে ১৬০ রান করেন এলগার। ডি ককের সাথে ষষ্ঠ উইকেটে ১৬৪ রান যোগ করেন এলগার।
এলগার যখন ফিরেন তখন অন্যপ্রান্তে ৮৯ রানে দাড়িয়ে ডি কক। এলগারের মত অশ্বিনকে ছক্কা মেরে টেস্টে পঞ্চম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ডি কক। সেঞ্চুরির পর ডি কককে বড় ইনিংস খেলতে দেননি অশ্বিন। ১১১ রানে থাকা ডি কককে বোল্ড করেন অশ্বিন। ১৬৩ বল মোকাবেলা করে ১৬টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন ডি কক।
দলীয় ৩৭০ রানে ডি ককের আউটের পর ক্রিজে গিয়ে দ্রুতই ফিরেন ভারনন ফিলান্ডার। তাকে শুন্য হাতে ফিরিয়ে দেন অশ্বিন। যার মাধ্যমে টেস্ট ক্যারিয়ারে ২৭তমবারের মত পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নিলেন অশ্বিন। ফিলান্ডারের আউটের পর দক্ষিণ আফ্রিকার আর কোন উইকেটের পতন হয়নি। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা সেনুরান মুতুসামি ১২ ও কেশব মহারাজ ৩ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন। অশ্বিন ১২৮ রানে ৫টি, জাদেজা ১১৬ রানে ২টি ও ইশান্ত ৪৪ রানে ১টি উইকেট নিয়েছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ভারত : ৫০২/৭ ডি, ১৩৬ ওভার (আগারওয়াল ২১৫, রোহিত ১৭৬, মহারাজ ৩/১৮৯)।
দক্ষিণ আফ্রিকা : ৩৮৫/৮, ১১৮ ওভার (এলগার ১৬০, ডি কক ১১১, অশ্বিন ৫/১২৮)।