সেলিম প্রধানের বাসা থেকে নগদ ২৯ লাখ টাকা ও ৮ কোটি টাকার চেক উদ্ধার

637

ঢাকা, ১ অক্টোবর, ২০১৯ (বাসস): অনলাইন বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রধান অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসার মূলহোতা সেলিম প্রধানের গুলশানের বাসায় অভিযান চালিয়ে নগদ ২৯ লাখ টাকা, ১২টি পাসপোর্ট, হরিণের চামড়া ও ৮ কোটি টাকার চেক উদ্ধার করেছে র‌্যাব।
এদিকে সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে থাই এয়ারওয়েজের (টিজি-৩২২) ফ্লাইট থেকে সেলিম প্রধানকে আটক করে র‌্যাব-১। পরে তাকে র‌্যাব-১ এর কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
দ্বিতীয় দিনের মত আজও সেলিম প্রধানের গুলশানের বাসায় র‌্যাব অভিযান চলিয়েছে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১০টা থেকে অভিযান শুরু হয়ে আজ বুধবার দুপুর ২টা পর্যন্ত অভিযান চলে বলে জানিয়েছে র‌্যাব । এই বাসাতেই সেলিম প্রধান পি-২৪ গ্যাম্বলিং নামে অনলাইন ক্যাসিনো পরিচালনা করতো বলে জানান র‌্যাব।
এর আগে সোমবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে রাজধানীর গুলশান ২ নম্বর অ্যাভিনিউয়ের ৯৯ নম্বর সড়কের ১১/এ নম্বর বাসা ও ২ নম্বর রোডের ২২ নম্বর বাড়িতে তার অফিসে অভিযান চালায় র‌্যাব-১।
র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক সিনিয়র এএসপি মো: মিজানুর রহমান ভুঁইয়া আজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম জানান সেলিম প্রধানের অনলাইন ক্যাসিনো থেকে আয়ের অবৈধ টাকা তিনটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জমা করা হত। এরপর সেসব টাকা হুন্ডি বা সঙ্গে করে বিদেশে পাচার করে আসছিলেন তিনি।
তিনি বলেন, অনলাইনে ক্যাসিনো খেলতে হলে গ্রাহকের নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার প্রয়োজন হয়। সেসব টাকা তিনটি গেটওয়েতে জমা হত। খেলায় জিতলে টাকা গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ফেরত যেত, অন্যথায় টাকাগুলো গেটওয়েতে থেকে যেত।
সেলিম প্রধানের সহকারী মো. আক্তারুজ্জামান প্রতি সপ্তাহে সেসব গেটওয়ের টাকা তুলে তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করতেন। এরপর সেসব টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বা ব্যক্তির সঙ্গে করে বিদেশে পাচার করা হত।
সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, সেলিম প্রধানের সঙ্গে কারা অভ্যন্তরীণ ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সখ্যতা ছিল। তাকে বিএমডাব্লিউ গাড়িও গিফট করেছিলেন সেলিম। এছাড়া আমরা জানতে পেরেছি, বিভিন্নভাবে লন্ডনেও টাকা পাঠিয়েছেন তিনি।
কি পরিমাণ টাকা লন্ডনে পাচার হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা গেটওয়ে থেকে প্রতি মাসে ৯ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছি। এমন আরও কিছু গেটওয়ে রয়েছে, সেগুলো আমরা যাচাই করে দেখছি।
লন্ডনে পাচারকৃত টাকা তারেক রহমানের কাছে যেত কিনা জানতে চাইলে সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখবো।
তিনি জানান, সেলিম প্রধান ক্যাসিনোর অর্জিত আয় বিদেশে পাচার করে আসছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র‌্যাব। এরপর পর্যায়ক্রমে রাজধানীর ধানমন্ডি, কলাবাগানসহ উত্তরা, গুলশান, তেজগাঁওয়ের বেশকিছু ক্লাবে একই ধরনের অভিযান চালায় পুলিশ ও র‌্যাব। এসব অভিযানে ক্যাসিনো সামগ্রীসহ প্রচুর পরিমাণে মদ ও অবৈধ অর্থ উদ্ধার করা হয়।