ঢাকা, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন,অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ নিজস্ব কৌশল গ্রহণ করেছে। সহ¯্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে সাফল্যের পর বাংলাদেশ এখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে। শিল্পখাতের ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। শিল্পমন্ত্রী আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাচ্-বাংলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিবিসিসিআই) এবং এসএনভি নেদারল্যান্ডস্ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
ডিবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারওয়েজ,সুইডেনের রাষ্ট্রদূত সার্লোট্টা স্লাইটার ও বাংলাদেশে এসএনভি নেদারল্যান্ডস্ ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর জেসন বেলেঞ্জার বক্তৃতা করেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে দ্রুত এগিয়ে চলেছে। সরকারের শিল্পবান্ধব নীতির ফলে ইতোমধ্যে এ দেশ দক্ষিণ এশিয়ায় বিনিয়োগের সবচেয়ে আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, গভীর সমুদ্রবন্দর, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পদ্মা বহুমুখী সেতুসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর ফলে বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বেসরকারি খাতের বিকাশে শিল্প মন্ত্রণালয় ফ্যাসিলিটেটরের ভূমিকা পালন করছে। ফলে দেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসার প্রসার ঘটছে। পাশাপাশি এলাকাভিত্তিক কাঁচামাল ব্যবহার করে নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠছে। এ উদ্যোগ তৃণমূল জনগোষ্ঠিকে শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সম্মেলন দারিদ্র্য বিমোচন, অসমতা হ্রাস, সামাজিক অবিচার ও লিঙ্গ বৈষম্য প্রতিরোধসহ, এসডিজি’র সকল লক্ষ্য অর্জনে অংশীজনদের ভূমিকা জোরদার করবে। ফলে বাংলাদেশের শিল্পায়ন ও সামাজিক উন্নয়নে ইউরোপীয় দেশগুলোর অংশগ্রহণ বাড়বে বলে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসার প্রসারে সম্মানজনক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা জোরদার করতে হবে।
তারা উল্লেখ করেন, টেকসই প্রবৃদ্ধিও থারা অব্যাহত রাখতে নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন, সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকর সংস্কার এবং ব্যবসার সুযোগ সহজ করতে হবে। বক্তারা বলেন,দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এজন্য তারা ব্যবসা ও অর্থনৈতিক কর্মকা-ে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, শিল্প উদ্ভাবনে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান এবং উচ্চ উৎপাদনশীলতার কৌশল গ্রহণের সুপারিশ করেন।
উল্লেখ্য, দিনব্যাপী আয়োজিত এ সম্মেলনে ‘স্যানিটেশন ব্যবসায় জেন্ডার অন্তর্ভুক্তি’,কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা’, ‘তৈরি পোশাক কর্মীদের জন্য স্বাস্থ্য সেবার নিশ্চয়তা’ এবং ‘তৈরি পোশাক খাতে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণ’ শীর্ষক চারটি পৃথক প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সংশ্লিষ্টখাতের বিশেষজ্ঞ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, সুশীল সমাজ, ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।