বেস্ট আয়োডাইজড সল্ট মিলস্ পুরস্কার পেল নয় লবণ মিল

409

ঢাকা, ২৬ জুন, ২০১৮ (বাসস) : গুণগতমানের আয়োডিনযুক্ত ভোজ্য লবণ উৎপাদনের স্বীকৃতি হিসেবে প্রথমবারের মত ‘বেস্ট আয়োডাইজড সল্ট মিলস্ অ্যাওয়ার্ড-২০১৭’ অর্জন করেছে দেশের নয়টি লবণ মিল। তিন ক্যাটাগরিতে এ নয়টি মিল পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছে।
আজ রাজধানীর রেডিসন হোটেলে বিসিকের সার্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ প্রকল্পের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নির্বাচিত মিলগুলোর মালিকদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদ বিতরণ করা হয়।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিশেষ অতিথি ছিলেন।
পুরস্কারপ্রাপ্ত মিলগুলো হচ্ছে- (ক) ভ্যাকুয়াম ক্যাটাগরিতে (১) এসিআই সল্ট লিমিটেড, রূপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ (২) মোল্লা সল্ট ত্রিপল রিফাইনারী ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, নারায়ণগঞ্জ (৩) সোনারগাঁও সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড; (খ) মেকানিক্যাল ক্যাটাগরিতে (১) গাফ্ফার ফুড লিমিটেড, খুলনা (২) ইফাদ সল্ট অ্যান্ড কেমিক্যালস্ লিমিটেড, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা (৩) রমনা সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, খুলনা; (গ) সনাতন ক্যাটাগরিতে (১) মোল্লা সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ (ইউনিট-২), নারায়ণগঞ্জ (২) মোল্লা সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ, নারায়ণগঞ্জ ও (৩) পুবালী সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ, নারায়ণগঞ্জ।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে মেকানিক্যাল ক্যাটাগরিতে চূড়ান্তভাবে মনোনীত (১) রাজাপুর সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, খুলনা এবং (২) তিস্তা সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, খুলনার মালিকদের মাঝেও সনদ বিতরণ করা হয়।
বিসিক চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এনামুল হক, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেইগবেডার, নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর জাকী হাসান এবং গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর রুদাবা খন্দকার বক্তব্য রাখেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, আয়োডিনযুক্ত লবণের ব্যবহার বাড়িয়ে বুদ্ধিদীপ্ত জাতিগঠনের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার সার্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের শতকরা ৮৪ ভাগ পরিবার আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের আওতায় এসেছে। দারিদ্র্যতা আয়োডিন ঘাটতির অন্যতম কারণ হলেও বর্তমান সরকার গৃহিত উদ্যোগের ফলে দারিদ্র্যের হার ৩১.৫ শতাংশ থেকে ২৪.৩ শতাংশ এবং অতি দারিদ্র্যের হার ১৭.৬ শতাংশ থেকে ১২.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। আর্থসামাজিক অগ্রগতির ইতিবাচক পরিবর্তনের ফলে জনগণের মধ্যে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের সচেতনতা বাড়ছে। সরকার-বেসরকারি অংশীদারিত্বে শতভাগ আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে। জনগণের গড় আয়ু ইতোমধ্যে ৭১ বছরে উন্নীত হয়েছে এবং জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতীয় ওষুধের চাহিদার শতকরা ৯০ ভাগ এখন দেশে উৎপাদিত ওষুধ থেকেই পুরণ করা সম্ভব হচ্ছে। আয়োডিনযুক্ত লবণের ব্যবহারের ফলে গলগ-, বামনত্ব, শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধীসহ শিশুদের অনেক জটিল সমস্যার সমাধান হয়েছে। তিনি বুদ্ধিদীপ্ত জাতিগঠনে আয়োডিনযুক্ত লবণ মিল মালিকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন। এ প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা শতভাগ আয়োডিনযুক্ত ভোজ্য লবণের ব্যবহার নিশ্চিত করতে দ্রুত লবণ আইন পাসের তাগিদ দেন। তারা বলেন, এ আইন পাস হলে আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদন ও বিপণন নিশ্চিত করতে মিল মালিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের তদারিক সহজ হবে। এর ফলে দেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে আয়োডিন ঘাটতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কার্যকর সাফল্য আসবে বলে তারা উল্লেখ করেন।