নিজের নয়, দলের পারফরমেন্সে উচ্ছ্বসিত কেন

464

কালিনিনগ্রাদ (রাশিয়া), ২৬ জুন ২০১৮ (বাসস) : বলতে গেলে অধিনায়ক হ্যারি কেনের দুর্দান্ত পারফরমেন্সেই বিশ্বকাপ ফুটবলে গ্রুপ পর্বে প্রথম দুই ম্যাচ জিতেছে ইংল্যান্ড। অথচ নিজের নয় দলের পারফরমেন্সকেই বড় করে দেখছেন কেন। প্রথম ম্যাচে তিউনিশিয়ার বিপক্ষে ২টি গোল এবং দ্বিতীয় ম্যাচে পানামার বিপক্ষে হ্যাট্টিক করেন তিনি। তার চোখ জুড়ানো পারফরমেন্সে এক ম্যাচ বাকী রেখেই হাসতে-হাসতে শেষ ষোলোতে ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে ইংল্যান্ড। তবে নিজেরটা নয়, দলের পারফরমেন্সকেই বড় করে দেখছেন কেন, ‘দলের সতীর্থদের জন্য আমি গর্বিত। আমরা খুবই ভালো খেলছি এবং এই পারফরমেন্স উপভোগ করছি। আমরা পরিকল্পনা ও কম্বিনেশন নিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছি। সবকিছু ঠিকভাবে কাজ করছে। দুর্দান্ত পারফরমেন্স প্রদর্শন করে শেষ ষোলোতে যাওয়াতে ভালো লাগছে আমাদের।’
বিশ্বকাপের ২১তম আসরে ‘জি’ গ্রুপে তিউনিশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে নিজেদের মিশন শুরু করে ইংল্যান্ড। ঐ ম্যাচে লড়াইটা ভালো করেছে তিউনিশিয়া। ভলগোগ্রাদে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে ইংল্যান্ড। তাই ১১ মিনিটে কেনের গোলের লিড নেয় ইংলিশরা। তবে ৩৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল পরিশোধ করে দেয় তিউনিশিয়া। এরপর ম্যাচের গতিপথ ছিলো ড্র’র দিকে।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি সময়ে প্রথম মিনিটেই গোল করে ইংল্যান্ডকে আবারো লিড এনে দেন কেন। ফলে ২-১ গোলে ম্যাচ জিতে নেয় ইংলিশরা।
নিজনি নভগোরোদে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পানামার সাথে ভয়ংকর রুপ নেয় ইংল্যান্ড। কেনের হ্যাট্টিকে গোল উৎসব করে ৬-১ গোলে ম্যাচ জিতে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে ইংলিশরা। কেনের হ্যাট্টিকের মধ্যে দু’টি পেনাল্টি ছিলো। বিশ্বকাপে এখন আজ পর্যন্ত পাঁচজন খেলোয়াড় পেনাল্টি মিস করেছেন। পেনাল্টি মিসের তালিকায় কিন্তু নাম রয়েছে স্প্যানিশ লিগের দুই সেরা খেলোয়াড় আর্জেন্টিনার অধিনায়ক লিওনেল মেসি ও পর্তুগালের দলপতি ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। মেসি-রোনাল্ডো যেখানে পেনাল্টি মিস করেছেন, সেখানে এক ম্যাচে দু’টি পেনাল্টি থেকে গোল করেন কেন। এ ব্যাপারে কেন বলেন, ‘পেনাল্টির জন্য আমার আলাদা রুটিন আছে। পেনাল্টি নিয়ে আমি অনেক অনুশীলন করি। লক্ষ্য করে রাখি গোলবারের ঘা ঘেষে বা গোলবারের কর্ণার। আমি মনে করি, পেনাল্টিতে আমি আগের চেয়ে অনেক বেশি দক্ষ হয়ে উঠেছি। পানামার বিপক্ষে সেটির প্রমাণ পেয়েছি।’
পানামার বিপক্ষে হ্যাট্টিক করে এবারের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় এখন সবার উপরে কেন। মোট পাঁচ গোল করেছেন তিনি। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাট্টিক করলেন কেন। ১৯৬৬ সালে জিওফ হার্স্ট ও ১৯৮৬ সালে গ্যারি লিনেকার হ্যাট্টিক করেছিলেন। হ্যাট্টিক নিয়ে কেন বলেন, ‘বিশ্বকাপে খুব বেশি খেলোয়াড় হ্যাট্টিক করতে পারেনি। আমি এবারের আসরে করতে পেরেছি। তাই আমি গর্বিত।’
হ্যাট্টিক করে বা সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকার শীর্ষে উঠে আবেগে ভাসতে চান না কেন। এখনও অনেক দূর যেতে হবে বলে মনে করেন তিনি। কেন বলেন, ‘নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। এখনও অনেক দূর যেতে হবে আমাদের। অনেক পরিশ্রম করতে হবে। নিজেদের লক্ষ্য অটুট থাকতে হবে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে।’
আগামী ২৮ জুন গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে বেলজিয়ামের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড।