মাদক ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে : তথ্যমন্ত্রী

348

চট্টগ্রাম, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ দেশে মাদক ও অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান হচ্ছে উল্লেখ করে বলেছেন, ঢাকায় অভিযান চলছে, চট্টগ্রামেও শুরু হবে। এটি অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, “এখন মাদকের বিরুদ্ধে ঢাকায় অভিযান চলছে। যেখানে অন্যায় অনিয়ম সেখানেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কে কোন দলের, কোন মতের সেটা দেখা হচ্ছেনা এবং এটি অব্যাহত থাকবে। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে আমরা বাংলাদেশকে একটি সুন্দর দেশে রূপান্তরিত করতে চাই।”
তথ্যমন্ত্রী আজ বিকেলে থিয়েটার ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম (টিআইসি) মিলনায়তনে আন্তঃস্কুল জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন, চট্টগ্রাম কেন্দ্র দেশের ৪৮টি বিদ্যালয়ের বিতর্ক দল নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এর মধ্যে ১০টি চট্টগ্রামের। বাকি দলগুলো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অংশ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুনুর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খাঁন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আজহারুল হক, অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রচার) নুরুল করিম। আফরোজা চৌধুরী দিনার উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিটিভি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক নিতাই কুমার ভট্টাচার্য।
মন্ত্রী বলেন, এ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বিটিভি, চট্টগ্রাম কেন্দ্র বড় কাজ হাতে নিয়েছে। প্রতিযোগিতা যেন চট্টগ্রামে সীমাবদ্ধ না থাকে। এটি জাতীয় টেলিভিশন কেন্দ্র। দেশে অনেক টেলিভিশন থাকলেও সবাই বিতর্ক প্রতিযোগিতা করে না। তিনি বলেন “আমরা যুক্তিভিত্তিক সমাজ গঠনে বিশ্বাস করি। বিতর্ক ছাড়া সেটি সম্ভব নয়। স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা এক্ষেত্রে সহায়ক। ”
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি মনে করি শুধু মেধা বিকাশে ভালো মানুষ গড়া সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষক ও অভিভাবকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি শিক্ষকদের অনুরোধ জানাবো, আমরা উন্নত দেশ রচনা করতে চাই। ১০-১৫ বছর পর এ শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নেবে। তাদের মধ্যে মূল্যবোধ ও দেশপ্রেমের বীজ বপন করতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সময় শুনি ছেলেরা বড় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী হচ্ছে। কিন্তু মা বাবার খবর নিচ্ছে না। তোমরা মনে রাখবে, মা বাবা কোলে পিঠে করে মানুষ করেছে। তোমরা যখন বড় হবে তখন তারা তোমাদের সন্তানের মতো হয়ে যাবে। তাদের সেবা করবে।’
তিনি বলেন, আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম তখন দেশে একটি টেলিভিশন ছিল। সেখানে বিতর্ক ছিল প্রেসট্রিজিয়াস। আমার হলের পক্ষ থেকে সেই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলাম। অনেক বছর, দেড় দশক বন্ধ ছিল। আমাকে প্রধানমন্ত্রী তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার পর আবার চালু করেছি। বাংলাদেশ টেলিভিশন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রও বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে- যাতে ঢাকারও কয়েকটি বিদ্যালয় অংশ নিচ্ছে।
ওয়াসিকা আয়েশা খান বলেন, যুক্তি দিয়ে বিশ্ব জয় করা যায়। যৌক্তিক প্রজন্ম বিপথে যেতে পারে না। ইন্টারনেটে প্রচুর তথ্য আদান প্রদান হয়। সব তথ্য যৌক্তিক নয়। যারা যুক্তিবাদী তারা বিতর্কিত ইতিহাস বিশ্বাস করে না, সাম্প্রদায়িক হয় না, জঙ্গিবাদে বিপথে পা বাড়ায় না। তারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়।
মো. নুরুল করিম বলেন, আউটডোরে বিতর্ক প্রতিযোগিতা ঢাকায়ও হয়নি, চট্টগ্রামে প্রথম হচ্ছে। বিতর্ক গ্রিক সময়ের। গুরু শিষ্যের মধ্যেও বিতর্ক হতো। বিতর্ক শিক্ষার্থীদের মেধার উৎকর্ষ ঘটাবে।
নিতাই কুমার ভট্টাচার্য বলেন, এ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠান সম্প্রচারে যাচ্ছি আমরা। বিতর্ক হচ্ছে মুক্তবুদ্ধির চর্চা। যুক্তি তর্কের মাধ্যমে নিজেদের শাণিত করবে শিক্ষার্থীরা।
জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরুর পর ‘ধন ধান্য পুষ্পভরা’, ‘মাঠের সবুজ থেকে সূর্যের লাল, বাংলাদেশের বুক এতই বিশাল’, ‘লাল সবুজের বিজয় নিশান’ গানের সঙ্গে বর্ণিল নৃত্য পরিবেশন করেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির খুদে নৃত্যশিল্পীরা। ‘দৃষ্টি চট্টগ্রাম’ আয়োজনে সহযোগিতা করে ।