প্রতিযোগিতা আইন বাস্তবায়ন হলে জিডিপি বাড়বে

269

ঢাকা, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান বাড়ানোর মৌলিক আইন হল প্রতিযোগিতা আইন। এই আইন বাস্তবায়নে কাজ করছে প্রতিযোগিতা কমিশন। এটি বাস্তবায়ন হলে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার কমপক্ষে ২ শতাংশ বাড়বে।
রোববার ইকোনমিক রিপোর্টার ফোরামের (ইআরএফের) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। প্রতিযোগিতা কমিশন ও ইআরএফ যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে। ইআরএফের সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শফিকুল ইসলাম, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন মো. আব্দুর রউফ, পরিচালক মো. খালেদ আবু নাছের, শ্রম ও উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের সাবেক মহাপরিচালক মুনির চৌধুরী এবং ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইর পরামর্শক মো. মঞ্জুর আহমেদ।
মো. আব্দুর রউফ বলেন, বিশ্বের ১৩০টির বেশি দেশে বিভিন্ন নামে প্রতিযোগিতা আইন ও কমিশন রয়েছে। যে সব দেশ আইনটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছে, ওই সব দেশে জিডিপি ২ থেকে ৩ শতাংশ বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ২০১২ সালে এই আইন হয়েছে। আর আইন বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালে কমিশন গঠিত হয়। কিন্তু এখনও বিধিমালা ও প্রশাসনিক কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। এছাড়াও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গেও সম্পর্ক বাড়ানোর কাজ চলছে।
তিনি বলেন,এই কমিশনের কাজ হল দেশে টেকসই অর্থনৈতিক পরিবেশ তৈরি করা। সার্বিকভাবে মানুষের জীবন যাত্রার মান বাড়ানো। তার মতে, উদ্যোক্তাদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকলে পণ্যের মান ও উৎপাদন বাড়ে। কারণ তখন উদ্যোক্তারা বাজার দখলের জন্য নতুন নতুন পণ্য নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, সুস্থ প্রতিযোগিতার জন্য পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে গণমাধ্যম বিশাল ভুমিকা পালন করতে পারে। মো. আব্দুর রউফ বলেন, দেশে অনেকগুলো কমিশন রয়েছে। কিন্তু ওই কমিশন সংস্কারের অংশ হিসাবে অন্য সংস্থা থেকে রূপান্তর হয়ে কমিশন হয়েছে। কিন্তু এই কমিশন একেবারে নতুন। ফলে এটি গুছিয়ে উঠতে সময় লাগছে।
মুনির চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে দেশের অর্থনীতিকে নিজস্ব শক্তিতে দাড়াতে হলে প্রতিযোগিতা কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আইনে এই কমিশনকে বিচারিক ক্ষমতা দেয়া আছে। ফলে দেশের যে কোনো ব্যক্তি হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ করা, তথ্য যাচাই ও পরিদর্শন করতে পারবে কমিশন। আর এ পর্যন্ত প্রতিযোগিতা কমিশনে কয়েকটি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে দুটি মামলা নিস্পত্তি হয়েছে। এছাড়াও আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে এই কমিশন।
সাইফ ইসলাম দিলাল বলেন, দেশের স্বার্থে যে কোনো ইতিবাচক উদ্যোগ বাস্তবায়নে ইআরএফের সদস্যরা পাশে থাকবে। রাশিদুল ইসলাম বলেন, দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল প্রতিযোগিতা কমিশন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির ওইভাবে মানুষের সামনে আসেনি। আগামীতে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কাজ করবে সাংবাদিকরা।
বক্তারা বলেন,দেশে উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকলেও তা সুস্থ নয়। এক্ষেত্রে পণ্যে ভেজাল দেয়ার প্রতিযোগিতা রয়েছে। খাবারের নামে মানুষ কী খাচ্ছে, তা কেউ জানে না। কিন্তু প্রতিযোগিতা আইন বাস্তবায়ন হলে ভেজাল নিয়ন্ত্রণ হবে। এতে পণ্যের দামও কমবে।