‘ব্লু ইকোনোমি’ কে সমর্থন দিতে চীনা বিনিয়োগের আহ্বান খসরুর

278

গুইয়াং (চীন), ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল মতিন খসরু বাংলাদেশের ‘ব্লু ইকোনোমি’তে বা সামুদ্রিক সম্পদে অংশ নেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
খসরু চীনে সফররত আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তিনি বাংলাদেশের রেলপথ খাত শক্তিশালী ও বঙ্গোপসাগরে প্রাকৃতিক সম্পদ আবিষ্কারে সহায়তার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আইন, বিচার ও পার্লামেন্ট বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খসরু মেডিকেল, আইসিটি ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের আরো বেশি বৃত্তি প্রদানের জন্য চীনের প্রতি অনুরোধ জানান।
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্যবৃন্দ কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না (সিপিসি)’র গুইঝোউ প্রাদেশিক কমিটির সদস্য ও সিপিসি গুইঝৌ প্রাদেশিক কমিটিরর পার্টি অর্গানাইজেশন ডিপার্টমেন্টের প্রধান লি ইফেই এর সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুইঝৌ পার্ক হোটেলে বৈঠককালে তিনি এ অনুরোধ জানান।
বৈঠকে সিপিসি’র অন্যান্য প্রদেশিক জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠককালে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য দু’দেশের মধ্যে পারস্পারিক স্বার্থে দারিদ্র দূরীকরণ ও পরিবেশ সুরক্ষার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ, অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময়ের প্রস্তাব দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি দেশব্যাপী কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম আরো জোরদার করতে চীনের সহায়তা চেয়েছেন।
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে খসরু বলেন, বাংলাদেশে এমনিতেই ঘন জনবসতিপূর্ণ দেশ। আর কোন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার মতো স্বক্ষমতা বাংলাদেশের নেই।
মিয়ানমার যেন তাদের নাগরিকদের নিরাপদে, সম্মানের সাথে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্ব প্রদানসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সেজন্য দেশটির উপর চাপ বাড়ানোর জন্য খসরু আবারো চীনের সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
তিনি বলেন, ‘দয়া করে আমাদের এই বার্তাটি কেন্দ্রীয় সরকার ও সিপিসি’র কেন্দ্রীয় নেতার কাছে উপস্থাপন করুন। রোহিঙ্গা সংকটের কারণে আমাদের জনগণ ও অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা অনির্দিষ্ট সময় ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে পারব না।’
খসরু আরো বলেন, শেখ হাসিনা সরকার ‘ব্লু ইকোনোমি’কে সর্বাধিক জোর দিচ্ছে। এখানে চীনও তার বিশেষজ্ঞ দিয়ে বাংলাদেশেকে সহায়তা করতে পারে। এছাড়াও চীন বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশের অংশে তেল ও গ্যাসের মতো অনাবিষ্কৃত প্রাকৃতিক সম্পদ সন্ধানে এগিয়ে আসতে পারে।
চীনকে বাংলাদেশের প্রধান উন্নয়ন সহযোগী উল্লেখ করে তিনি বলেন, দিনে দিনে বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।
খসরু বলেন, ‘চীনের জনগণের সাথে আমাদের জনগণের সম্পর্ক রয়েছে। এখন আমরা সিপিসি-আওয়ামী লীগের মতো দ’ুদেশের রাজনৈতিক দলের মধ্যে সম্পর্ক বাড়াতে চাইছি।’
একটি ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে সাবেক আইনমন্ত্রী খসরু বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশব্যাপী প্রায় ১শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। চীন সেখানে আরো বেশি সংখ্যক শিল্পকারখানা স্থাপন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে।
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফরের জন্য সিপিসি’র গুইংঝৌ প্রাদেশিক কমিটিকে আমন্ত্রণ জানায়।
আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুস সবুর, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য দিপঙ্কর তালুকদার এমপি, মো. আমিরুল আলম মিলন, মো. আজমতুল্লাহ্ খান, এবিএম রিয়াজুল কবির কাওসার, মো. রফিকুর রহমান, বাসন্তী চাকমা এমপি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সেলিম মাহমুদ ও তরুণ কান্তি দাস, ঢাকা উত্তর সিটি’র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয় সম্পাদক নাজমুল আলম ভূঁইয়া জুয়েল ও কামাল চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।