ইপিজেডের সব কাঁচামাল অ্যাসাইকুডায় এন্ট্রি হবে

331

ঢাকা, ৫ সেপ্টেম্বর,২০১৯ (বাসস) : দেশের রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) কিছু প্রতিষ্ঠান অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের পরিবর্তে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হাতে লেখা বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল সংগ্রহ করছে। ফলে অডিটে এসব কাঁচামালের হিসাব অনেকক্ষেত্রে দেখানো হচ্ছে না। পাশাপাশি ম্যানুয়ালি বিল অব এন্ট্রির কারণে একদিকে প্রতিষ্ঠানের সময় বেশি লাগছে,অপরদিকে রাজস্ব ফাঁকিও হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ইপিজেডের সকল কাঁচামাল অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে এন্ট্রি দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং নির্দেশনা চেয়ে গত ২৭ আগস্ট ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনার এস এম হুমায়ুন কবীর এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি প্রেরণ করেছে। এতে বলা হয়, ইপিজেডে সরাসরি আমদানিকারকের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণে প্রচ্ছন্ন রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সরাসরি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান রফতানিকালে সংশ্লিষ্ট শুল্ক স্টেশনে শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পাদন করলেও প্রচ্ছন্ন রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানে ইপিজেডের গেইটে অবস্থিত শুল্ক কর্মকর্তারা ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে (হাতে লিখে) বিল অব এন্ট্রি (বি/ই) গ্রহণ করে শুল্কায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করে। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই রফতানিকারকদের শুল্কায়ন কার্যক্রম বিলম্বিত হওয়ার পাশাপাশি সার্বিক কার্যক্রমে নানা ধরনের অসংগতি ও অস্বচ্ছতার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের উন্নতি,শুল্কায়ন কার্যক্রম আধুনিকায়ন ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার স্বার্থে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দেশের সকল ইপিজেড অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ডের আওতায় আনার প্রয়োজনীয় নিদের্শনা প্রদানের অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য,দেশের ৮টি ইপিজেড থেকে বছরে প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকার পণ্য রফতানি হয়।এসব ইপিজেডে ৫২৭টি প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স রয়েছে। যার মধ্যে ৪৫৬টি প্রতিষ্ঠান সচল আছে এবং সচল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হাতে লেখা বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে কাঁচামাল সংগ্রহ করছে।
ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের একজন কর্মকর্তা বাসসকে বলেন,ইপিজেডসমূহ অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ডে বিল অব এন্ট্রি দাখিলের মাধ্যমে কাঁচামাল আমদানি ও পণ্য রফতানি করে। কিন্তু স্থানীয়ভাবে যেসব কাঁচামাল সংগ্রহ করা হয় তা বিল অব এন্ট্রিতে রফতানিতে দেখানো হয় না। এন্ট্রি না থাকায় অডিটের সময় তার হদিস পাওয়া যায় না। সম্প্রতি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আমরা এমন তথ্য পাওয়র প্রেক্ষিতে ইপিজেডের সকল কাঁচামাল অ্যাসাইকুডায় এন্ট্রি করার উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি জানান,আটটি ইপিজেড থেকে দেশের মোট রফতানির ২০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকার পণ্য রফতানি হয়। এই ৬৪ হাজার কোটি টাকার ১০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার কাঁচামাল স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা হয়। এসব পণ্য ম্যানুয়ালি বিল অব এন্ট্রি হয় বিধায় সরকার এ থেকে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছ। অ্যাসাকুডা ওয়ার্ল্ডে এন্ট্রি হয় না বলে অডিটে উঠে আসে না। ফলে প্রতিষ্ঠান সহজে রাজস্ব ফাঁকি দিতে পারে।
তিনি মনে করেন ইপিজেডের সকল কাঁচামাল অ্যাসাইকুডায় এন্ট্রি হলে সার্বিক আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে অধিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।