বাজিস-২ : বরিশালের বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছে গ্রামের মানুষ

294

বাজিস-২
বরিশাল-কমিনিউটি-ক্লিনিক
বরিশালের বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছে গ্রামের মানুষ
॥ শুভব্রত দত্ত ॥
বরিশাল, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ (বাসস) : জেলার গ্রামীণ জনপথের দোড়গোরায় বিনামূল্যে নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা সেবা পৌঁচ্ছে দিচ্ছে “কমিউনিটি ক্লিনিক”। দরিদ্র ও অসহায় মানুষ সহজেই এসব “কমিউনিটি ক্লিনিক” থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিভাগের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলার ৩’শ ৫২টি ইউনিয়নের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মাঝে মানসম্মত চিকিৎসা পৌঁচ্ছে দিচ্ছে প্রায় ১ হাজারেরও বেশি “কমিউনিটি ক্লিনিক”। এ ক্লিনিকগুলো থাকায় নিয়মিত স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। একই সাথে কমিউনিটি হেলথ কেয়ারের চিকিৎসকরা বেশ কয়েক ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে দিচ্ছেন। যার মধ্যে রয়েছে ৩০টি আয়রণ ট্যাবলেট, ৩০টি ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স ট্যাবলেট ও ৩০ টি ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাতৃত্বকালীন ৫টি বিপদের আশঙ্কা, গর্ভবর্তী মায়ের স্বাস্থ্যসেবা, প্রসূতি মায়ের ঝুুঁকিপূর্ণ অবস্থা এবং মা ও শিশুর শারীরিক যতœসহ স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন সুবিধা পাচ্ছে গ্রামীণ জনপথের নারীরা।
এছাড়াও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে সাধারণ স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি সময় মতো যক্ষ্মা, ডিফথেরিয়া, হুপিংকাশি, পোলিও, ধনুষ্টাংকর, হাম, হেপাটাইটিস-বি, নিউমোনিয়ার টিকাদানসহ শিশু-কিশোর-কিশোরীদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরো জানায়, চলতি বছর আগস্ট পর্যন্ত জেলার ১০টি উপজেলায় ২’শ ৮১টি কমিউনিটি হেলথ কেয়ার থেকে সর্বমোট প্রায় ৩ লাখ ৭৩ হাজার পুরুষ, ৮ লাখ ৫৫ হাজার মহিলা ও ১ লাখ ৩’শ শিশুকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয়েছে। বিনামূল্যে ৩০ প্রকার ওষুধ বিতরণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পরিবার-পরিকল্পনা ও পুষ্টি বিষয়ক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে ক্লিনিকগুলোতে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
এবিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা: মো: মনোয়ার হোসেন বলেন, গ্রামীণ জনপথের দরিদ্র ও সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় মানসসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পৌঁচ্ছে দেয়ার লক্ষ্যে কমিউনিটি হেলথ কেয়ারগুলো কাজ করছে। বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ পেয়ে সাধারণ মানুষ খুব খুশি।
এব্যাপারে বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডাঃ মোঃ শামসুল হক বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা সারা বিশ্বে একটি অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। প্রতিটি ক্লিনিকে আইসিটি জ্ঞান সমৃদ্ধি প্রশ্রিক্ষিণপ্রাপ্ত একজন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও একজন স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার কল্যাণ সহকারী সহযোগিতা করে থাকেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা-এর তদারকি করেন। প্রতিটি ইউনিয়নে অবস্থিত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে একটি কমিটি পরিচালনা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে এলজিইডি মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি, বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁেচ্ছ দিতে প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক গড়ে তোলা হয়েছে। অসহায় ও দরিদ্র গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাই এ কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য।
তিনি বলেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় বিশ্বে মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিক। মা ও শিশুর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় এক নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে এ প্রকল্প।
বাসস/সংবাদদাতা/১২১৫/-নূসী