সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে আইন মানার সংস্কৃতি চালু করতে হবে : ডিএমপি কমিশনার

428

ঢাকা, ৩১ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস) : সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন ও আইন মানার সংস্কৃতি চালু করতে হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।
তিনি আজ শনিবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস অডিটোরিয়ামে ‘ঢাকা মহানগরীর বাস ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে করনীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান। ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, সড়কগুলোতে ভৌত অবকাঠামের উন্নয়ন হলে অনেক পরিবর্তন চলে আসবে। ঢাকা আরিচা মহাসড়কে বিভিন্ন এলাকা খুবই দুর্ঘটনাপ্রবন ছিলো। রোড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে বেশ কিছু রাস্তার বাঁক সোজা করে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে ওই সড়কে ৯৫ ভাগ দুর্ঘটনা কমে গেছে।
তিনি বলেন,আমাদের মহানগরীর ওপর দিয়ে দূরপাল্লার গাড়িগুলো যাতায়াত করে। কয়েকটা বাইপাস হওয়ার পর কিছুটা কমেছে।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ডিএমপি কমিশনার হিসেবে আমি গত পৌনে পাঁচ বছরে বাস মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে বার বার বসেছি। বেশকিছু সমস্যা চিহ্নিত করে আমরা সেগুলো থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজেছি। কিন্তু কাঙ্খিত ফলাফল পাইনি।
তিনি বলেন, বাস ‘বে’ না থাকার কারণে গাড়িগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়েই যাত্রী উঠানামা করছে। এক্ষেত্রে হাজারো জরিমানা করে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ ১৬৭টি বাসস্ট্যান্ড চিহ্নিত করেছে। ফুটপাত দিয়ে যেন মোটরসাইকেল চলাচল করতে না পারে সেজন্য মেটাল পিলার স্থাপন করেছে ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ।
অধিকাংশ মানুষের আইন না মানার প্রবনতার কারণে পুলিশের দ্বারা আইন প্রয়োগ সম্ভব হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, মোবাইলে কথা বলে কিভাবে একজন সভ্য নাগরিক গাড়ি চালায়? রাস্তা পারাপারে ফুটপাথ, ওভারব্রিজ, আন্ডারপাস ও জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার না করে পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপারে দুর্ঘটনা হলে এতে কোন ড্রাইভার দায়ী নয়। তাই আমাদের সকলের মধ্যেই আইন মানার সংস্কৃতি চালু করতে হবে।
ট্রাফিক প্রসিকিউশন ও জরিমানা আদায় সম্পূর্ণ ডিজিটাল করা হয়েছে জানিয়ে কমিশনার বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিভিন্ন অপরাধে গাড়ি চালকদের প্রসিকিউশন দিয়ে জরিমানা করছি। গাড়ির মালিক-শ্রমিকদের মনে রাখতে হবে এটা শুধু ব্যবসা নয়, সেবা। পরিবহন ব্যবসায়ীদের সুনাম ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে বলেও ডিএমপি কমিশনার উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলে ভিডিও ফুটেজ দেখে যদি পথচারীর গাফিলতি পাওয়া যায়, তাহলে চালকের পাশাপাশি সেই দায় পথচারীকেও নিতে হবে বলে জানান তিনি।
ডিএমপি’র এই শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন,যত্রতত্র গাড়ি না থামানো, গাড়ির দরজা বন্ধ রাখা, বিনা কারণে হর্ন না বাজানো শুধু আন্তরিক হলেই এসব মেনে চলা যায়। আমরা সহযোগিতা করব কিন্তু মূল উদ্যোগটা মালিক-শ্রমিকদেরই নিতে হবে।
এ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ। আলোচনা সভায় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বাস মালিক ও শ্রমিক নেতৃৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।