বাসস ক্রীড়া-১০ : স্টোকসের বীরত্বে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় ইংল্যান্ডের

500

বাসস ক্রীড়া-১০
ক্রিকেট-টেস্ট
স্টোকসের বীরত্বে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় ইংল্যান্ডের
হেডিংলি, ২৫ আগস্ট ২০১৯ (বাসস) : দ্বাদশ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে নিশ্চিত হার থেকে বাঁচিয়ে শিরোপার স্বাদ দিয়েছিলেন অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। ১মাস ১১ দিনের ব্যবধানে আবারো ইংল্যান্ডকে অবিস্মরনীয় এক জয়ের স্বাদ দিলেন তিনি। অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টে স্টোকসের অসাধারন ইনিংসের কল্যাণে অস্ট্রেলিয়াকে ১ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। জয়ের জন্য ৩৫৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২৮৬ রানে নবম উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় ইংলিশরা। কিন্তু ইংল্যান্ডকে হারের স্বাদ নিতে দেননি স্টোকস। শেষ ব্যাটসম্যান জ্যাক লিচকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৭৬ রান যোগ করে ইংল্যান্ডকে ঐতিহাসিক জয়ের স্বাদ দেন স্টোকস। ১১টি চার ও ৮টি ছক্কায় ২১৯ বলে ৩৩০ মিনিট ব্যাট করে অপরাজিত ১৩৫ রান করেন স্টোকস। ১ ঘন্টা ব্যাট করে ১৭ বলে অপরাজিত ১ রান করে দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পারেন লিচ। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজের ১-১ সমতা ফিরলো। প্রথম টেস্ট অস্ট্রেলিয়া ২৫১ রানে জিতেছিলো। দ্বিতীয় টেস্ট ড্র হয়।
৩৫৯ রানের জয়ের লক্ষ্যে তৃতীয় দিন শেষে ইংল্যান্ড করেছিলো ৩ উইকেটে ১৫৬ রান। ফলে জয়ের জন্য বাকী ৭ উইকেটে ২০৩ রান দরকার ছিলো ইংল্যান্ডের। অধিনায়ক জো রুট ৭৫ ও স্টোকস ২ রানে অপরাজিত ছিলেন। আজ রুট ৭৭ রানে থামলেও উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টোকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন স্টোকস। এই জুটির কল্যানে লড়াইয়ে ফিরে ইংল্যান্ড। তবে এই জুটিকে ৮৬ রানের বেশি যোগ করতে দেননি অস্ট্রেলিয়ার পেসার জশ হ্যাজেলউড। ৩৬ রান করা বেয়ারস্টোকে শিকার করেন তিনি।
২৪৫ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে বেয়ারস্টোর বিদায়ের পর পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের ৪ উইকেট পড়ে মাত্র ৪১ রানে। অর্থাৎ ২৮৬ রানে নবম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ফলে জয় দেখতে পায় অস্ট্রেলিয়া। কারন বাকী ১ উইকেট হাতে নিয়ে জয় থেকে ৭৩ রান দূরে দাঁড়িয়ে ইংল্যান্ড।
এ অবস্থায় জয়ের আশা ছেড়ে দিয়েছিলো ইংল্যান্ড। কিন্তু হাল ছাড়েননি দ্বাদশ বিশ্বকাপের ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় স্টোকস। ঐ ফাইনালেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত খেলে অপরাজিত ৮৪ রান করে দলকে নিশ্চিত হার থেকে বাঁচিয়ে ম্যাচ টাই করে খেলার গতিপথ সুপার ওভারে নেন স্টোকস। শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারও টাই হলেও বেশি বাউন্ডারির মারার কারনে শিরোপা জিতে ইংল্যান্ড।
আজও ইংল্যান্ডকে নিশ্চিত হার থেকে বাঁচাতে এক প্রান্ত আগলে দুর্দান্তভাবে লড়াই শুরু করেন স্টোকস। সাথে থাকা শেষ ব্যাটসম্যান লিচ দারুনভাবে সঙ্গ দেন স্টোকসকে। ফলে এক পর্যায়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের অস্টম সেঞ্চুরি তুলে নেন স্টোকস। ১৯৯তম বলে বাউন্ডারি মেরে সেঞ্চুরির পর আরও মারমুখী মেজাজ নেন স্টোকস। এতে ভড়কে যায় অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। অবশ্য ব্যক্তিগত ১১৬ রানে ক্যাচ দিয়ে জীবন পান স্টোকস। ঐ সময় ১৭ রান দরকার ছিলো ইংলিশদের।
এই ব্যবধান কমিয়ে ১২৫তম ওভারের চতুর্থ বল পর্যন্ত ২ রানে নামিয়ে আনেন স্টোকস। এরপর ইংল্যান্ডের শেষ উইকেট তুলে নেয়ার ভালো সুযোগ পেয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। ঐ ওভারের পঞ্চম বলে রান আউটের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে অসিরা। আর শেষ বলে স্টোকসকে লেগ বিফোর ফাঁেদ ফেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার নাথান লিঁও। কিন্তু আম্পায়ার সাড়া দেননি। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় স্টোকস আউট ছিলেন। কিন্তু কোন রিভিউ ছিলো না অস্ট্রেলিয়ার। ঐ ওভারের শেষ দু’বলে এমন নাটকের পর আর পেছন ফিরে তাকাননি স্টোকস-লিচ জুটি।
পরের ওভারেই জয় নিশ্চিত করেন স্টোকস-লিচ জুটি। লিচ ১ রান নিয়ে ম্যাচ টাই করেন। আর বাউন্ডারি মেরে ইংল্যান্ডকে আরাবো ঐতিহাসিক জয় এনে দেন স্টোকস।
আগামী ৪ সেপ্টেম্বর ম্যানচেষ্টারে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের চতুর্থ টেস্ট।
বাসস/এএমটি/২১৩৫/স্বব