বাজিস-৬ : ভোলায় ১০৯ কোটি টাকার মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা বিতরণ

130

বাজিস-৬
ভোলা-মুক্তিযোদ্ধা-ভাতা
ভোলায় ১০৯ কোটি টাকার মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা বিতরণ
॥ হাসনাইন আহমেদ মুন্না ॥
ভোলা, ২৫ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস) : বর্তমান সরকারের টানা ১১ বছরে (২০০৯-১০ থেকে ২০১৯-২০) জেলার ৭ উপজেলায় ১০৯ কোটি ১১ লাখ ২৪ হাজার টাকার মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা বিতরণ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের অধীনে জেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা কার্যালয়ের মাধ্যমে জেলার মোট ১ হাজার ৪৮৪ জন মুক্তিযোদ্ধার মাঝে এ ভাতা দেওয়া হয়েছে। বিগত সময়ে ৯০০ টাকা ভাতা থেকে বর্তমান সরকার ১২ হাজার টাকা বৃদ্ধি করায় আনন্দ প্রকাশ করেছে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় এ কার্যক্রমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মান প্রদর্শন ও সার্বিক জীবন মান উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।
জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম আজ বাসস’কে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে তার সনদপত্র ও প্রমাণসমূহসহ আবেদন করলে উপজেলা পর্যায়ে যাছাই-বাছাই হয়। পরে জেলা কমিটিতে নাম চূড়ান্ত হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধার নামে বই ও নির্দিষ্ট ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলা হয়। প্রত্যেক মাসেই নির্ধারিত ব্যাংক হিসাব নাম্বারে টাকা জমা হয়। একসময় সমাজের অসচ্ছল, অসহায়, দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এ ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে সকল পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী হিসাবে এ টাকা দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
সমাজসেবা কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০০৯-১০ বছরে ১১শ’ ১০ জনের মাঝে মাসে দেড় হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা। ২০১০-১১ অর্থবছরে ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করে ২ হাজার টাকা করা হয়। এবছর ভাতা দেয়া হয় ২ কোটি ৬৬ লাখ ৪০ হাজার টাকার। ২০১১-১২, ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে একই সংখ্যায় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে সমপরিমান অর্থ বিতরণ করা হয়।
এছাড়া ২০১৪-১৫ অর্থবছরে উপকারভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৪১৮ জন হয়। ভাতা বৃদ্ধি করা হয় মাসে ৫ হাজার টাকা করে। এবছর মোট ৮ কোটি ৫০ লাখ ৮০ হাজার টাকার ভাতা দেয়া হয়। ২০১৫-১৬ বছরে সম্মানী ভাতা আরো ৩ হাজার বাড়িয়ে ৮ হাজার টাকা নির্ধারণ হয়। ভাতার টাকা দেয়া হয় ১৩ কোটি ৬১ লাখ ২৮ হাজার টাকায়। ২০১৬-১৭ বছরে সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকায় রূপ নেয়। এবছর ১ হাজার ৪৬৩ জনের মধ্যে মোট ভাতা দেয়া হয় ১৭ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার। ২০১৭-১৮ বছরে ১ হাজার ৪৬৭ জনের মাঝে ১৭ কোটি ৬০ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৮৪ জনের মধ্যে প্রদাণ করা হয়েছে ১৭ কোটি ৮০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এছাড়া চলতি অর্থবছরে ভাতার টাকা বৃদ্ধি করে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে। আর এ বছরের জন্য বিতরণ চলছে ২১ কোটি ৩৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকা।
এ ব্যাপারে পৌর শহরের স্টেডিয়াম সড়কের বাসিন্দা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এম হাবিবুর রহমান বাসস’কে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। কোন সম্মান বা সম্মানীর প্রত্যাশায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করিনি। বর্তমানে আমাদের দেশে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স ৬০ বছরের অধিক। সকলেই যে আর্থিকভাবে সমান সচ্ছল এমনটা নয়। তাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ৯০০ টাকা থেকে ১২ হাজার টাকায় করা অত্যন্ত আনন্দের ব্যাপার। কোন কোন ক্ষেত্রে মাসে ১২ হাজার টাকা অনেক বড় কল্যাণ বয়ে আনে।
সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে এ দেশ স্বাধীন করেছে। তাই রাষ্ট্র তাদেরকে সম্মান হিসাবে এ অর্থ প্রদাণ করে। বিশেষ করে যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা অসচ্ছল তাদের দৈনন্দিন কাজে তথা সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ভাতার এ টাকা বলে জানান নজরুল ইসলাম।
বাসস/এইচ এ এম/১৩৩৫/নূসী