বাজিস-১ : লক্ষীপুরে ৮০ হাজার মানুষকে ভাতা দিচ্ছে সরকার

138

বাজিস-১
লক্ষীপুর- ভাতা দিচ্ছে সরকার
লক্ষীপুরে ৮০ হাজার মানুষকে ভাতা দিচ্ছে সরকার
লক্ষ্মীপুর, ২৫ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস) : সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীনে জেলার ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষকে ভাতা দিচ্ছে সরকার। সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা, সুবিধাবঞ্চিত, হতদরিদ্র, বিধবা, অসচ্ছল, প্রতিবন্ধীসহ অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে আর্থিক এ সেবা দেয়া হচ্ছে।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্র জানায়, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীনে বর্তমানে ৯টি পর্যায়ে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে- মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা, বয়স্ক ভাতা, অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা, হিজড়াদের জন্য বিশেষ ভাতা, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর বিশেষ ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি, হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির শিক্ষা উপবৃত্তি এবং বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় শিক্ষা উপবৃত্তি। এতে মোট উপকারভোগীর সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার ৪২ জন।
মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা কর্মসূচির আওতায় জেলার ১ হাজার ৭৯৭ জন মুক্তিযোদ্ধা উপকারভোগ করছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫৯৮, রায়পুরে ২৯৯, রামগঞ্জে ৫২২, রামগতিতে ২৮৩ ও কমলনগরে ৯৫ জন রয়েছেন। প্রত্যেক উপকারভোগী প্রতি মাসে ১২ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন।
বয়স্ক ভাতা কর্মসূচির আওতায় জেলার ৪৭ হাজার ৫৬৭ জন নারী-পুরুষ উপকারভোগ করছেন। এর মধ্যে সদরে ১৬ হাজার ৩৬১, রায়পুরে ৭ হাজার ৯৫৮, রামগঞ্জে ৯ হাজার ১৯২, রামগতিতে ৭ হাজার ৯৮, কমলনগরে ৫ হাজার ২৪৯ এবং লক্ষ্মীপুর শহরে ১ হাজার ৭০৯ জন রয়েছেন। প্রত্যেক উপকারভোগীকে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।
বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা কর্মসূচির আওতায় প্রত্যেক উপকারভোগীকে মাসিক ৫০০ টাকা করে জেলায় মোট ১৭ হাজার ৫৫৮ জনকে ভাতা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সদরে ৪ হাজার ৯৪২, রায়পুরে ৩ হাজার ৪৯, রামগঞ্জে ৩ হাজার ৪৪৬, রামগতিতে ২ হাজার ৮২৭, কমলনগরে ২ হাজার ৮৩৯ ও লক্ষ্মীপুর শহরে ৪৫৫ জন উপকারভোগী রয়েছেন।
অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা কর্মসূচির আওতাধীন প্রত্যেক উপকারভোগীকে মাসিক ৭০০ টাকা করে জেলায় মোট ১১ হাজার ৫৬৫ জনকে ভাতা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সদরে ৩ হাজার ৯৭৭, রায়পুরে ১ হাজার ৮৩৮, রামগঞ্জে ২ হাজার ২০২, রামগতিতে ১ হাজার ৭২৩, কমলনগরে ১ হাজার ৩১০ ও লক্ষ্মীপুর শহরে ৫১৫ জন উপকারভোগী রয়েছেন।
এছাড়াও জেলার ৭৮৫ জন প্রতিবন্ধীকে শিক্ষা উপবৃত্তি হিসেবে ৪টি স্তরে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রত্যেক উপকারভোগী শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে প্রাথমিক স্তরে ৭০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৭৫০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৮৫০ টাকা ও উচ্চতর স্তরে ১ হাজার ২০০ টাকা ভাতা দেয়া হচ্ছে। উপকারভোগীর সংখ্যা সদরে ২২৯, রায়পুরে ১৭৩, রামগঞ্জে ১২২, রামগতিতে ১৫৫, কমলনগরে ৬১ ও লক্ষ্মীপুর শহরে ৪৫ জন।
প্রত্যেককে ৬০০ টাকা হারে জেলার ৫২ জন হিজড়াকে বিশেষ ভাতা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সদরে ৩০, রায়পুরে ৪, রামগঞ্জে ৮, কমলনগরে ৯ এবং লক্ষ্মীপুরে শহরে ১ জন রয়েছেন। এছাড়াও হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় জেলার আরও ৫৯ জনকে ৪টি স্তরে শিক্ষা উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে প্রত্যেক উপকারভোগী শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে প্রাথমিক স্তরে ৩০০ টাকা, মাধ্যমিকে ৪৫০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিকে ৬০০ টাকা এবং উচ্চতর স্তরে ১ হাজার টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। উপকারভোগীর সংখ্যা সদরে ৩২, রামগঞ্জে ১, কমলনগরে ১৮ এবং লক্ষ্মীপুর শহরে ৮ জন।
বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর বিশেষ ভাতা কর্মসূচির অধীনে প্রত্যেক উপকারভোগীকে মাসিক ৫০০ টাকা হারে জেলার মোট ৩১২ জনকে ভাতা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সদরে ১৫০, রায়পুরে ৬০, রামগঞ্জে ১২, রামগতিতে ৬০, কমলনগরে ১৮ ও লক্ষ্মীপুর শহরে ১২ জন রয়েছেন। এছাড়াও জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় জেলার আরও ৩৪৭ জনকে ৪টি স্তরে শিক্ষা উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে প্রত্যেক উপকারভোগী শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে প্রাথমিক স্তরে ৩০০ টাকা, মাধ্যমিকে ৪৫০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিকে ৬০০ টাকা এবং উচ্চতর স্তরে ১ হাজার টাকা হারে ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। উপকারভোগীর সংখ্যা সদর উপজেলায় ৭২, রায়পুরে ১০৯, রামগঞ্জে ১৫, রামগতিতে ৯৯, কমলনগরে ৩৭ ও লক্ষ্মীপুর শহরে ১৫ জন।
লক্ষ্মীপুর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী বাসসকে বলেন, সামাজিক সুরক্ষার ৯টি কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। তবে সমাজসেবা অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত ‘গভর্নমেন্ট টু পারসন (জিটুপি)’ পদ্ধতি পাইলটিং আকারে লক্ষ্মীপুরে চালু হলে জনগণের দোরগোড়ায় আরও দ্রুত সেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। একই সঙ্গে ‘চাইল্ড সেনসিটিভ স্যোসাল প্রটেকশন ইন বাংলাদেশ (সিএসপিবি)’ প্রকল্প উপকূলীয় এ জেলায় চালু করার মধ্য দিয়ে শিশু শ্রমিক তথা ঝুঁকিপূর্ণ কাজের সঙ্গে জড়িত শিশুদের সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনার দাবি জানান এ কর্মকর্তা।
বাসস/সংবাদদাতা/০৯৫০/নূসী