কলম্বো, ২২ মার্চ, ২০১৮ (বাসস/এএফপি) : শ্রীলংকা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক অরবিন্দ ডি সিলভার মতে ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলসে ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে তার দেশের সাফল্য নির্ভর করছে দুই তারকা খেলোয়াড় অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ও দিনেশ চান্ডিমালের ওপর।
১৯৯৬ বিশ্বকাপ জয়ী শ্রীলংকা দলের সদস্য ডি সিলভা বলেন, ‘খারাপ ফর্ম, খেলোয়াড়দের ইনজুরি কাটিয়ে তারুণ্যনির্ভর লংকান দলকে আগামী বিশ্বকাপে সাফল্য পেতে হলে ম্যাথুজ-চান্ডিমালকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। আমি মনে করি বর্তমান দলে সবচেয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন অলরাউন্ডার ম্যাথুজ এবং চান্ডিমালের রয়েছে খুবই ভালো ক্রিকেটীয় জ্ঞান। আপনি অধিনায়ক থাকলেন কিনা সেটা কোন বিষয় নয়। যেভাবেই থাকেন না কেন অংশ হিসেবে দলের প্রয়োজনে আপনি একই ভুমিকা রাখবেন।’
গেল বছর যাচ্ছেতাই পারফরমেন্স করেছে শ্রীলংকা ক্রিকেট দল। ১৩ টেস্টে ৪ জয় ৭ হার ২টি ড্র, ২৯ ওয়ানডেতে ৫ জয় ২৩ হার ১টি পরিত্যক্ত এবং ১৫টি-২০তে ৫ জয় ১০ হারের স্বাদ নেয় লংকানরা। তবে গেল বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশের সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহকে দলের দায়িত্ব দিয়েই ঘুড়ে দাঁড়ায় শ্রীলংকা। চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হয় লংকানরা। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে দু’ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ও টি-২০ সিরিজ জিতে নেয় শ্রীলংকা।
বছরের শুরুতে দুর্দান্ত সব সাফল্য সঙ্গী করে দেশের মাটিতে স্বাধীনতার ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারতকে নিয়ে নিদাহাস ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজ আয়োজন করে শ্রীলংকা। ডাবল লিগ পর্বে ভারতের কাছে একবার ও বাংলাদেশের কাছে দু’বার হেরে ফাইনালেই উঠতে পারেনি লংকানরা।
তবে নতুন কোচ হাথুরুসিংহের অধীনে দল এগিয়ে যাবে মনে করেন ১৯৯৬ বিশ্বকাপের তারকা ব্যাটসম্যান ডি সিলভা, ‘সাধারণ কথায় তিনি সম্ভবত সেরা.. কেননা তিনি (হাথুরু) দলের খেলোয়াড়দের সাথে সহজেই মিশতে এবং সম্পর্ক গড়তে পারেন। আবার খেলোয়াড়রাও তার সঙ্গে অনায়াসে মিশতে পারে। এছাড়া ভাষা বা সংস্কৃতির কোন বাধা নেই, যা উভয়কেই অনায়াসে একে অপরকে বুঝতে সহায়ক হবে।’
-ফিট এবং উন্নতি-
গত জুলাইয়ে পতদ্যাগ করার পর এ বছরের শুরুতে আবারো শ্রীলংকা সিমিত ওভারের দলের নেতৃত্বে ফেরেন ৩০ বছর বয়সী ম্যাথুজ। তবে ইনজুরির কারণে মাত্র একটি ওয়ানডে খেলতে পেরেছেন তিনি। তার অবর্তমানে সিমিত ওভারে দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন টেস্ট অধিনায়ক দিনেশ চান্ডিমাল।
২০১৯ বিশ্বকাপের জন্য শ্রীলংকার খেলোয়াড়দের ফিট থাকাটা খুবই জরুরি। ঠিক তেমনি জরুরি নিজেদের পারফরমেন্সের আরও উন্নতি করা। কারন গেল বছর একের পর এক ম্যাচের হারের পর ফিটনেস নিয়ে শ্রীলংকার ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে দুয়োধ্বনি শুনতে হয়েছিলো ডান-হাতি পেসার লাসিথ মালিঙ্গাকে। জাতীয় দলের হয়ে গেল ১৪ বছরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ৪৯২ উইকেট শিকার করা মালিঙ্গাকে ‘অতিরিক্ত মোটা’ বলে অ্যাখায়িত করেন দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘খেলার জন্য ফিট হও নয়তো বের হয়ে যাও।’
তবে দলের ব্যর্থতায় শ্রীলংকা ক্রিকেট বোর্ডের কমিটি থেকে পদত্যাগ করা ডি সিলভার বিশ্বাস দল এখন ভাল খেলছে। ৫২ বছর বয়সী সিলভা বলেন, ‘আমি মনে করছি তারা এখন আগের চেয়ে ভাল ক্রিকেট খেলছে। আমার বিশ্বাস আর কিছুটা এক্সপোজার ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারলে একটা নতুন দল হিসেবে তারা ভাল করতে শুরু করবে।’
১৯৮৪-২০০২ সাল পর্যন্ত বর্ণাঢ্য কারিয়ারে একজন আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান ডি সিলভা নির্দিষ্ট করে বর্তমান উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান কুসল পেরেরাকে ভবিষ্যত তারকা হিসেবে চিহ্নিত করেন।
১৯ শতকের শেষ দিকে টপ অর্ডারে ব্যাটিং বিপ্লব ঘটানো নিজের সাবেক সতীর্থ সনাথ জয়সুরিয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জয়সুরিয়ার অনেক কিছু আমি তার (কুসল) মধ্যে দেখতে পাই। তার মত একজন খেলোয়াড়কে টেস্ট দল থেকে বাদ দেয়াটা এক প্রকাল অপরাধ বলে আমি মনে করি।’
সদ্য শেষ হওয়া নিদাহাস টি-২০ ত্রিদেশীয় সিরিজে লিগ পর্বের চার ম্যাচে তিনটি হাফ-সেঞ্চুরি হাকান পেরেরা। শ্রীলংকার হয়ে এখন পর্যন্ত ৭৩টি ওয়ানডে ও ৩৪টি টি-২০ ম্যাচে অংশ নিয়েছেন তিনি। তবে ২০১৫ সালে টেস্ট অভিষেকের পর লংকানদের হয়ে মাত্র ১০টি টেস্ট খেলেছেন পেরেরা।
ডি সিলভা বলেন, টি-২০ ক্রিকেট উঠতি খেলোয়াড়দের দক্ষতা অর্জনে ক্ষতিকর হলেও আধুনিক ব্যটসম্যানদের ব্যাটসম্যানদের উপকার করছে।
তিনি বলেন, ‘আক্রমণাত্মক ক্রিকেট সবসময়ই ভালো এবং আমি মনে করি টি-২০ স্ট্রোকপ্লের উৎকর্ষতা আরো বৃদ্ধি করেছে।’
বাসস/এএফপি/এএমটি/০৯২০/স্বব