বাসস দেশ-১৬ : হালদা দূষণ : ইটিপি চালু না হওয়া পর্যন্ত এশিয়ান পেপার মিলের উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ

120

বাসস দেশ-১৬
পেপার-মিল-বন্ধ
হালদা দূষণ : ইটিপি চালু না হওয়া পর্যন্ত এশিয়ান পেপার মিলের উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ
চট্টগ্রাম, ১৮ আগস্ট, ২০১৯ (বাসস) : হালদা নদী দূষণের দায়ে ইটিপি সার্বক্ষণিকভাবে চালু না হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম এশিয়ান পেপার মিলের সকল ধরনের উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে মহানগর পরিবেশ অধিদফতর।
বাইপাসের মাধ্যমে তরলবর্জ্য অপসারণ করে দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী দূষণের অভিযোগে আজ রোববার শুনানি শেষে পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক এই নির্দেশনা দেন।
পরিবেশ অধিদফতরের কার্যালয়ে হালদা নদী দূষণের অভিযোগের ওপর শুনানিতে চিটাগাং এশিয়ান পেপার মিলস (প্রা:) লিমিটেডের পক্ষে চিফ কেমিস্ট মোরশেদ আলম চৌধুরী, জেনারেল ম্যানেজার রঘুনাথ চৌধুরী এবং প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. শফিউল আলম অংশ নেন।
বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি এম এ সালামের মালিকানাধীন হাটহাজারী উপজেলার নন্দীরহাটস্থ পেপার মিলটিকে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ অনুযায়ী জরুরি ভিত্তিতে সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ইটিপি চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত কারখানার উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান অধিদফতরের চট্টগ্রাম মহানগরের সহকারি পরিচালক সংযুক্তা দাশ গুপ্তা।
প্রতিষ্ঠানটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খুবই নাজুক জানিয়ে সংযুক্তা দাশ বলেন, ‘ঈদুল আজহার ছুটির সময় এশিয়ান পেপার মিলস থেকে বর্জ্য হালদা নদীতে ফেলা হয়। এ সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়ার পর গত ১৪ আগস্ট আমরা পরিদর্শন করে এর সত্যতা পাই। পেপার মিলসটির স্লাজ খোলা স্থানে রাখা আছে। সেখানে থাকা বর্জ্য বৃষ্টির পানিতে গড়িয়ে পার্শ্ববর্তী মরাছড়া খাল হয়ে হালদা নদীতে পড়ে। ইতিপূর্বে বহুবার প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ আরোপ, সতর্ক এবং জরিমানাও করা হয়েছিল। কিন্তু তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এজন্য তাদের আজ ১৮ আগস্ট রোববার শুনানিতে হাজির থাকার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।’
এর আগে গত ১০ ও ১১ আগস্ট হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে মিলটিতে অভিযান চালানো হয়। এসময় হাতেনাতে ওই মিলের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পড়ে। পরে বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণসহ একটি অভিযোগ মহানগর পরিবেশ অধিদপ্তরে পাঠান তিনি।
ইউএনও মো. রুহুল আমিন বলেন, মিলটি দীর্ঘদিন থেকে বর্জ্য অপসারণে অনিয়ম করে আসছে। হাতেনাতে প্রমাণ পেয়ে আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানিয়েছি। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন।
এর আগে গত ১১ জুন একই অপরাধে এশিয়ান পেপার মিলসকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল পরিবেশ অধিদফতর। এছাড়া বর্জ্য তেল নি:সরণ করে হালদা দূষণের অভিযোগে ‘হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টের’ উৎপাদনও বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল পরিবেশ অধিদফতর।
হালদা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. মঞ্জুরুল কিবরীয়া বলেন, মিলটি আগে সবসময় নিয়মবহির্ভূতভাবে বর্জ্য অপসারণ করত। এখন বন্ধের সময়ে ও ভারী বর্ষণের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ১২ বছর ধরে বর্জ্য অপসারণ করছে।
বাসস/জিই/এসকেবি/১৮২৫/-অমি