বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি) : মন্ত্রণালয়গুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

138

বাসস প্রধানমন্ত্রী-১ (দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
শেখ হাসিনা- পিএমও মিটিং
মন্ত্রণালয়গুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

দেশের কয়েকটি অঞ্চলে বন্যা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে বাংলাদেশে বৃষ্টি ও বন্যা হয় এবং এটা স্বাভাবিক। তবে, এতে জান-মালের ক্ষয়-ক্ষতি যেন কম হয় সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং বন্যা মোকাবেলায় আমরা যে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছি সেটাও বাস্তবায়ন করতে হবে।
বাংলাদেশ পলিবাহিত ব-দ্বীপ হওয়ায় এর মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি এবং ভ’গর্ভন্থ পানির স্তর রক্ষায় বন্যার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিন্তু এর ক্ষতিটা আমাদের কমিয়ে আনতে হবে। যে কোন পরিকল্পনায় মাথায় রাখতে হবে বন্যা বন্ধ করে নয় বরং বন্যার সঙ্গে বসবাস করা আমাদের শিখতে হবে।’
দেশে ডেঙ্গু সমস্যা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে আরো সচেতন থাকার এবং এ বিষয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, এবার শুধু আমাদের দেশেই নয়, আশপাশের অনেক দেশেই ডেঙ্গুটা দেখা গেছে। দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশে মহামারি আকারে যেমন ফিলিপাইনে মহামারি আকারে দেখা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় ডেঙ্গু প্রতিরোধে পিএমও এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় এবং সিটি কর্পোরেশনগুলোর প্রচেষ্টায় সন্তোষ প্রকাশ করে এ ব্যাপারে জনগণকে সতর্ক এবং পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, নিজের ঘর-বাড়ি এবং কর্মস্থলের চারপাশের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে নিজেকে সচেতন হতে হবে। যাতে কোথাও পানি জমে এই রোগ সৃষ্টিকারী লার্ভা জন্মাতে না পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনও এই রোগের প্রকোপ অনেকটা রয়ে গেছে এবং বিভিন্ন জেলাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। কাজেই এ ব্যাপারে আমাদের আরেকটু সতর্ক হতে হবে।
দেশের মানুষকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে আরো সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজের কাজটি নিজেই করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন, ‘পাশ্চাত্য বিশ্বের অনেক কিছুই আমরা অনুকরণ করতে চাই। কিন্তু তারা যেভাবে নিজেদের কাজটা নিজেরা করে তা আমরা অনুকরণ করি না।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘যারা একদা বাংলাদেশের স্বাধীনতার শুধু বিরোধিতাই করে নাই তারা বলেছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে একটা বটমলেস বাস্কেট হবে। সেই দেশটার থেকেও যেন আমাদের দারিদ্রের হার কমাতে হবে।’
‘তাদের চেয়ে অন্তত এক শতাংশ হলেও দারিদ্র কমাতে হবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। তারা উন্নত দেশ হতে পারে কিন্তু আমরা যে পারি সেটা আমাদের প্রমাণ করতে হবে’ যোগ করেন তিনি।
দারিদ্র বিমোচন এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে যেকোন কাজে তাঁর কাছে যেকোন সময় যে কাউকে আসার অনুমতি দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন,‘আমাকে জনগণ ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী করেছে এটা ঠিক, কিন্তু আমি জাতির পিতার কন্যা কাজেই সেই হিসেবে, মনে করি দেশের প্রতি আমার একটা দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। সেখানে প্রটোকলের বাধা আমি কখনও মানি না, মানতেও চাই না।’
শেখ হাসিনা বলেন,‘ আমি চাই সকলের সাথে মিশতে, জানতে এবং কাজ করতে। আমরা সকলে একটা টিম হিসেবে কাজ করবো যাতে দেশের উন্নয়নটা ত্বরান্বিত হয়।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষনের শুরুতে সকলকে পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়ে শোকের মাস এই অগাস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা এবং ১৫আগষ্টের শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
৭৫ এর ১৫ই আগস্টের নির্মম হত্যাকা-ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবার-পরিজন হারিয়ে এবং শোক ও ব্যথা নিয়ে জাতির পিতার আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্যই তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে সরকারি সফরের উল্লেখ করে বলেন, চোখের চিকিৎসার কারণে তিনি এবার দীর্ঘদিন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দেশের বাইরে থাকতে বাধ্য হন।
বাসস/এএসজি-এফএন/১৪৪০/এমএসআই