বাজিস-৫ : হবিগঞ্জে জনসেবা দিবসে স্বীকৃতি পেলেন সেবাদানকারী ১১ কর্মী

180

বাজিস-৫
হবিগঞ্জ-স্বীকৃতি
হবিগঞ্জে জনসেবা দিবসে স্বীকৃতি পেলেন সেবাদানকারী ১১ কর্মী
হবিগঞ্জ, ২৩ জুন, ২০১৮ (বাসস) : আব্দুর রাজ্জাক। হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা। সকাল হলেই তিনি চলে যান মাঠে। বাড়ি ফেরেন সন্ধ্যায়। কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে ভাল ফসল ফলানোই তার নেশা। দেশে কৃষি বিভাগের ফসল ফলানোর দক্ষতার মাত্রা হলো ১৯৪ শতাংশ। হবিগঞ্জ জেলার দক্ষতার হার হলো ১৭৬ শতাংশ। সেখানে আব্দুর রাজ্জাকের সফলতার হার ২১২ শতাংশ।
প্রত্যন্ত এলাকায় নীরবে কাজ করে যাওয়া এই কৃষি পাগল লোককে স্বীকৃতি দিয়েছে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসন। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আন্তর্জাতিক জনসেবা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা শেষে তার হাতে সম্মাননা স্বারক এবং সনদপত্র তুলে দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, তার মতো প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করা আরো ১০ সেবাদানকারী কর্মী পেয়েছেন এ ধরনের স্বীকৃতি।
লাভলী রাণী চন্দ্র মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় পরিবার পরিকল্পনা সহকারী হিসাবে কাজ করেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তিনি চষে বেড়ান চা বাগান অধ্যুষিত এলাকার মানুষের বাড়ি বাড়ি। লোকজনও তাকে আপনজন এবং বিশ্বস্থ মনে করে। লাভলী নিছক বেতন পাওয়ার জন্য কাজ করেন না। মানুষের সেবা করাই তার ব্রত। তিনিও পেয়েছেন তার কাজের স্বীকৃতি।
একইভাবে আন্দিউড়া উম্মেতুননেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী শিক্ষক মানসুরা আক্তার প্রতি বছরই শতভাগ পাশের হার নিয়ে আসায় পেয়েছেন স্বীকৃতি। নবীগঞ্জ উপজেলার হাওর এলাকা খলিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিরিয়া বেগমও পান এই সম্মাননা।
আরো যারা নিজের কর্মের স্বীকৃতি পেয়েছেন তারা হলেন- সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর উজ্জ্বল উল্লা খান, আজমিরীগঞ্জ থানার কনস্ট্রেবল শফিউল্লাহ, লাখাই উপজেলার প্রাণী সম্পদ সহকারী নিজামুুল ইসলাম, পুটিজুড়ি ইউনিয়নের দফাদার নূরুল ইসলাম, হবিগঞ্জ পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী লোকমান মিয়া, চুনারুঘাট উপজেলার মিরাশী ইউনিয়নের উপ সহকারী ভূমি কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম এবং হবিগঞ্জ সদর ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক শাহাবুদ্দিন নীরবে কাজ করার স্বীকৃতি পেয়ে তারা সবাই আনন্দিত।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ বলেন, বিভিন্ন দিবস উদযাপনের জন্য জাতীয়ভাবে কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়। কিন্তুনিবেদিত প্রাণ এই কর্মীদের সম্মাননা জানানো তার নিজস্ব চিন্তাা থেকে করা হয়েছে। এখন থেকে প্রত্যেক মাসে বিভিন্ন বিভাগের সেরা কর্মীদেরকে পুরস্কার প্রদান করা হবে।
এর আগে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শনিবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নিম তলা থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মো. সফিউল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফজলুল জাহিদ পাভেল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ আলী, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মর্জিনা খাতুন, সাংবাদিক মো. আলমগীর খান, এডভোকেট শাহ ফখরুজ্জামান, রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন, ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জ্বল, জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল কবির, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অনীল কৃষ্ণ মজুমদার, হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মোঃ ছোলায়মান মিয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জান্নাত আরা লিসা।
বাসস/সংবাদদাতা/১৬৩৫/মরপা