শিশু পার্কের ফলক থেকে জিয়াউর রহমানের নাম সরিয়ে ফেলা হবে : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

359

ঢাকা, ২১ মার্চ ২০১৮ (বাসস) : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজধানীর শাহবাগের শিশু পার্কের ফলক থেকে জিয়াউর রহমানের নাম সরিয়ে ফেলা হবে।
তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে শিশু পার্কের নাম ‘জিয়া শিশু পার্ক’ থেকে পরিবর্তন করে শুধু ‘শিশু পার্ক’ করা হয়েছে। এখন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নামফলকটিও পরিবর্তন করা হবে। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যে জায়গাটিতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল, সেখানে হবে একটি স্মৃতিস্তম্ভ।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আজ বুধবার সচিবালয়ে পিআইডির সম্মেলন কক্ষে গণহত্যা দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘শিশু পার্কটির নাম ইতোমধ্যে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুনভাবে ব্যাপক প্রচারের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আমরা যখন ব্যাপক প্রচারে নামব, তখন এর প্রতিফলন হবে।’
তিনি বলেন, ওই স্থানেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিল। গণমাধ্যমে জিয়াকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছিল, মুসলমানদের পরাজয়ের কোনো স্মৃতি চিহ্ন রাখতে নেই, তাই ওখানে শিশু পার্ক করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, এবারের স্বাধীনতা দিবস ভিন্ন আঙ্গিকে উদযাপন করা হবে। দ্বিতীয়বারের মতো ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হবে। ওই দিন রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশ ব্ল্যাকআউট থাকবে।
তিনি বলেন, ওই দিন আমরা যে যেখানে থাকবো, সেখানে দাঁড়িয়েই বাতিটি নিভিয়ে দেবো, চলন্ত গাড়ি থামিয়ে দেবো, হাঁটতে থাকলে থমকে দাঁড়াবো। এই বিষয়টি সব মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিতে ২৫ মার্চ রাত ৯টা বাজার ৩-৪ মিনিট আগে বিশেষ সাইরেন বাজিয়ে বা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে মানুষকে প্রস্তুত থাকতে বলা যায় কি না, সে বিষয়টি ভেবে দেখা হচ্ছে।
জাতিসংঘ ঘোষিত ৯ ডিসেম্বর গণহত্যা দিবস পরিবর্তন করে ২৫ মার্চ করার বিষয়ে জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চলছে জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ৯ ডিসেম্বর গণহত্যা দিবসের পেছনে কোনও ইতিহাস না থাকার কারণেই ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসাবে পালনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতি পর্যন্ত কোটা সুবিধা দেয়া উচিত কিনা সে বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি সরকারি সিদ্ধান্ত। সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় যা বর্ণনা করা আছে, আইনে যা বিদ্যমান আছে তা অব্যাহত থাকবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদেই যাচাই-বাছাই শেষে মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করা হবে। যদি কোনও কারণে সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব না হয়, তাহলে যতটুকু যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করা হবে, ততটুকুই প্রকাশ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব অপরূপ চৌধুরী, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন্নাহার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।