দ্বিতীয় ম্যাচেই নক আউট পর্ব নিশ্চিত করতে চায় বেলজিয়াম

343

ঢাকা, ২২ জুন, ২০১৮ (বাসস) : প্রথম ম্যাচের উজ্জীবিত পারফরমেন্সের ধারাবাহিকতায় বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই নক আউট পর্ব নিশ্চিত করতে চায় তারকা সমৃদ্ধ বেলজিয়াম। আগামীকাল তিউনিশিয়ার বিপক্ষে গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে দলের তারকা ফরোয়ার্ড এডেন হ্যাজার্ড মনে করেন এবারের বিশ্বকাপটা তার।
রেড ডেভিলস খ্যাত বেলজিয়াম সোমবার প্রথম ম্যাচে ৩-০ গোলে পানামাকে উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করেছে। কিন্তু এই ফলও দেশের মাটিতে সমর্থকদের সমালোচনাকে রুখতে পারেনি। বিশেষ কওের প্রথমার্ধে গোলশুন্য ড্র কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেনা বেলজিয়াম ভক্তরা।
চেলমি ফরোয়ার্ড হ্যাজার্ড মনে করেন বেলজিয়ামের প্রতি এই ধরনের প্রত্যাশা কিছুটা অবাস্তব। যদিও শনিবার তিউনিশিয়ার বিপক্ষে দলের আরো ভাল পারফরমেন্স তিনিও আশা করছেন। গণমাধ্যমের কাছে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের কাছে সমর্থকদের প্রত্যাশা অনেক বেশী। কিন্তু আমরা এবারের বিশ^কাপে দেখেছি বেশীরভাগ দলই এক বা দুই গোলের ব্যবধানে জিতেছে, ব্যতিক্রম ছিল শুধুমাত্র সৌদি আরবের বিপক্ষে রাশিয়ার উদ্বোধনী ম্যাচটি। সে কারনেই আমি বলবো আমরা যে ৩-০ ব্যবধানে জিতেছি তা মোটেই খারাপ নয়। বেলজিয়ামের কাছ থেকে প্রত্যেকের প্রত্যাশাটা সবসময়ই একটু বেশী। কারন আমরা সবসময়ই সঠিক ফুটবল খেলি। আগের বিভিন্ন ম্যাচে ৮০ শতাংশ বল পজিশন আমাদের ছিল, আমরা গোলে ৫০টিরও বেশী শট নিয়েছি যার মধ্যে ৪০টি গোল এসেছে। কিন্তু পরিস্থিতি সবসময় এক রকম থাকেনা। কখনো কখনো ম্যাচের আবহ ভিন্ন হয়ে যায়। তখন হয়তবা ১-০ গোলে জয়টাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমরা প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছি। আমাদের দলে এত বেশী প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে যে সকলের প্রত্যাশার মাত্রাটা বিস্ময়কর কিছু নয়।’
এবারের বিশ্বকাপে যে কয়জন তারকার কাছ থেকে ভাল পারফরমেন্স আশা করা হচ্ছে তার মধ্যে হ্যাজার্ড অন্যতম। চেলসির এই তারকা নিজেও মনে করেন নিজের যোগ্যতা প্রমানের এটাই সবচেয়ে বড় মঞ্চ হতে পারে। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার মধ্যে একটি অনুভূতি প্রথম থেকে কাজ করছে, এটা আমার বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে। আমার বয়স এখন ২৭ বছর। এটি আমার দ্বিতীয় বিশ্বকাপ। ব্যক্তিগত ভাবে একটি দারুন মৌসুম কাটিয়ে আমি এখানে খেলতে এসেছি। একটি ভাল টুর্নামেন্ট খেলতে হলে সব নিয়ামকগুলোই একসাথে কাজ করে।
বেলজিয়ামের ডিফেন্ডারন থমাস ভারমালেন অনুশীলনে ফিরেছেন এবং ধারণা করা হচ্ছে আগামী ২৮ জুলাই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপ-জি’র শেষ ম্যাচে ফিট হয়ে তিনি দলে ফিরবেন। গত ১৩ মে বার্সেলোনার হয়ে খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়লেও কোচ রবার্তো মার্টিনেজ তাকে রেখেই বিশ্বকাপের দল ঘোষনা করেন। তবে তিউনিশিয়ার বিপক্ষে তার যে মাঠে নামা হচ্ছেনা এটা অনেকটাই নিশ্চিত। বিশেষ করে প্রতিপক্ষকে মাথায় রেখে এভারটনের সাবেক বস মার্টিনেজ ফিফাডটকমকে বলেছেন, ‘তিউনিশিয়া দলটি অনেক বেশী গতিশীল একটি দল। তাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে ভাল বোঝাপড়া আছে। বিশেষ করে কাউন্টার এ্যাটাকের দিক থেকে তাদের গভীরতা চোখে পড়ার মত। তারা সরাসরি ফুটবল খেলতে ভালবাসে।’
গ্রুপের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হ্যারি কেনের শেষ মুহূর্তের হেডের গোলে ২-১ গোলে পরাজিত হয়েছিল তিউনিশিয়া। কিন্তু তারপরেও থ্রি লায়ন্সদের বিপক্ষে তাদের পারফরমেন্স প্রশংসিত হয়েছে। বেলজিয়ামের বিপক্ষে দলে একটি পরিবর্তন আসছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। দলের এক নম্বর গোলরক্ষক মোয়েজ হাসেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কাঁধের ইনজুরিতে পড়ে দেশে ফিরে গেছেন। তার কাঁধে অস্ত্রোপচার করাতে হবে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
পানামার বিপক্ষে দুই গোল করা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকুর ওপর কালকের ম্যাচেও দৃষ্টি থাকবে। আর একটি মাত্র গোল করতে পারলেও বেলজিয়ামের খেলোয়াড় হিসেবে বড় কোন টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ গোলের মালিক হবেন লুকাকু। ইতোমধ্যে তার গোলসংখ্যা পাঁচ , যা ইয়ান সিউলেমান্সের থেকে মাত্র একটি কম।
এই নিয়ে চতুর্থবারের মত বেলজিয়াম ও তিউনিশিয়া একে অপরের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। এর আগে প্রত্যেকেই একটি করে ম্যাচ জিতেছে, বাকি ম্যাচটি ড্র হয়েছে। বেলজিয়াম বিশ^কাপের তাদের শেষ ১০টি গ্রুপ ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে। এর মধ্যে শেষ পাঁচটি ম্যাচে টানা জয়ী হয়েছে। বেলজিয়ামের শেষ ১১টি বিশ^কাপ গোল এসেছে দ্বিতীয়ার্ধে।
অন্যদিকে তিউনিশিয়া বিশ^কাপে তাদের শেষ ১২টি ম্যাচে জয়বিহীন রয়েছে। ১৯৭৮ সালে প্রথমবারের মত বিশ^কাপে খেলতে এসে সেখানে মেক্সিকোর বিপক্ষে সর্বশেষ ৩-১ গোলের জয় পেয়েছিল।
বাসস/এএসজি/নীহা/০৯৪৫/স্বব