সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মধ্যে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হবে : মিন্ট থোয়ে

584

কক্সবাজার, ২৮ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য তার সরকার নীতিগত যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এর প্রস্তুতি সম্পর্কে রোহিঙ্গাদের অবহিত করতেই তারা এখানে এসেছেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত দাবিগুলো জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের মধ্যে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান হবে।
মিন্ট থোয়ে রোববার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়ায় কুতুপালং ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, প্রত্যাবাসন শুরু করার ক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকার ৩টি নীতি গ্রহণ করেছে। এর একটি হচ্ছে রোহিঙ্গাদের সাথে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে তাদেরকে প্রত্যাবাসনে রাজি করানো।
রোহিঙ্গাদের সাথে যে আলোচনা হয়েছে তা আবারো হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একইসাথে আসিয়ান প্রতিনিধিদের সাথেও এ বিষয়ে আলোচনা চলবে।
অন্যদিকে রোহিঙ্গা নেতারা বলেছেন- মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের সাথে তাদের আলোচনা ফলপ্রসু হয়নি। তারা সেই পুরানো প্রস্তাবগুলোই আবার দিয়েছেন। রোহিঙ্গারা এসব প্রস্তাবে রাজি নয়।
রোববার সকালে কুতুপালং ক্যাম্প-৪ এ রোহিঙ্গাদের সাথে বৈঠক করেন মিয়ানমারের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল। বৈঠকে মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সে দেশের পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে। রোহিঙ্গাদের পক্ষে ৩০ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন মাস্টার মো. মুহিব উল্ল¬াহ। বৈঠকে যোগ দেন আসিয়ানের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদলও।
বৈঠকে মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের কাছে রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মো. মুহিব উল্ল¬¬াহ।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের নেতা তাদেরকে বুঝিয়েছেন, মিয়ানমার সরকার তার দেশের ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনের তিন নম্বর ধারা অনুযায়ী তাদেরকে (রোহিঙ্গা) বিদেশী হিসাবে বৈধতা দেয়া হবে। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে গেলে বিদেশি নাগরিক হিসেবে থাকার বৈধতা দেয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা বিদেশী হিসাবে সেখানে থাকতে চাই না।’
কুতুপালং ক্যাম্পে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সাথে বৈঠকের পরে ডি-৫ ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া হিন্দু রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মিয়ানমার ও আশিয়ান প্রতিনিধিদল। সেখানে আশ্রয় নেয়া একজন হিন্দু নেতা জানান, মিয়ানমারে ফিরে গেলে তাদেরকে নানা সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে বলে প্রতিনিধিদলের নেতা পররাষ্ট্র সচিব তাদের আশ্বাস দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে মিয়ানমারের প্রতিনিধিদল এর আগেও দুই বার কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে গেছেন।