এ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া দলের ‘কোন অজুহাত’ শুনতে চান না ওয়াহ

606

লন্ডন, ২৫ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে পরাজিত হওয়ায় রেকর্ড ষষ্ঠ বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের আশা পূর্ণ হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। তবে এই গ্রীষ্মে এখনো তাদের দ্বিতীয় লক্ষ্য পূরণের সম্ভাবনা আছেÑ সেটি হলো আসন্ন এ্যাশেজ সিরিজি জয় করা।
গত ২০ বছরে চারটি বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। তবে এ সময়ের মধ্যে ইংল্যান্ডের মাটিতে কেবলমাত্র একবার ২০০১ সালে স্টিভ ওয়াহর নেতৃত্বে এ্যাশেজ শিরোপা জিততে সক্ষম হয়েছে অসিরা। সে বছর ওয়াহর নেতৃত্বে ৪-১ ব্যবধানে ইংল্যান্ডের মাটিতে শিরোপা জয় করেছিল অস্ট্রেলিয়া।
তবে ওয়াহর মতে গত বছর মার্চে বল টেম্পারিং কেলেংকারির পর বর্তমান অধিনায়ক টিম পাইনের নেতৃত্বাধীন দলটি যথেষ্ঠ শক্তিশালী। তারা ১৮ বছরের জয় খড়া কাটাতে পারে এবং আবারো ব্যর্থ হওয়ার ‘কোন অজুহাত’ দেখাতে পারবে না।
স্কাই স্পোর্টসকে ওয়াহ বলেন, ‘তাদের প্রস্তুতিটা খুবই ভাল হয়েছে।’
কিংবদন্তী এ ক্রিকেটার আরো বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দল বেশ কিছু দিন যাবত এখানে খেলছে, আমাদের অনেক খেলোয়াড় আছে এবং গত এক বছর যাবত আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটে ডিউক বল ব্যবহার করছি। প্রস্তুতির কোন ঘাটতি রাখা হয়নি। কোন অজুহাত চলবে না।
‘সত্যিকারার্থেই আমাদের দলটি বেশ ভাল এবং মূলত স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার এবং ক্যামেরন বেনক্রফটের কারণে শক্তিশালী হয়েছে। আমাদের দলের গভীরতা বেশ ভাল এবং সিরিজ না জেতার কোন কারণ নেই। যদিও এখনো দল ঘোষণা করা হয়নি। তবে আমাদের হাতে বিকল্পের কোন কমতি নেই।’
বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির পর থেকে অস্ট্রেলিয়া টেস্ট দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন পাইন।
অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে নিজেদের মধ্যে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছে। এ ম্যাচের পারফরমেন্স বিবেচনা করেই এ্যাশেজের জন্য দল নির্বাচন করবেন অসি নির্বাচকরা।
নিউল্যান্ডসে বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির কারণে স্টিভ স্মিথ ও ওয়ার্নার এক বছর এবং বেনক্রফট নয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ ছিলেন। আগামী ১ আগস্ট এজবাস্টনের ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে পাঁচ টেস্টের এ্যাশেজ সিরিজ। প্রথম টেস্টের একাদশে এরা তিনজনই থাকতে পারেন।
স্মিথ ও ওয়ার্নার নিশ্চিতভাবেই সেরা একাদশে থাকবেন। পক্ষান্তরে কাউন্টি দল ডারহামের হয়ে দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখিয়ে বেনক্রফটও নিজকে শক্ত প্রার্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
ওয়াহ বলেন বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির পর স্মিথ ও ওয়ার্নার অস্টেলিয়া সেট আপে ‘রিসেট’ হয়ে গেছে। এক বছর আগে জাস্টিন ল্যাঙ্গার কোচের দায়িত্ব নেয়ার পরই তাদেরকে দলে ফেরানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন।
৫৪ বছর বয়সী ওয়াহ বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে মূল কারিগর হচ্ছেন ল্যাঙ্গার। তিনিই স্মিথ, ওয়ার্নার, বেনক্রফটদের নতুন জীবন দান করেছেন। তবে আমি মনে করি অধিনায়ক হিসেবে পাইন খুব ভাল করছে।’
‘আগ্রাসী ও ইতিবাচক হওয়া ক্ষেত্রে পাইন একটি ভারসাম্য খুঁজে পেয়েছে, তবে সীমা অতিক্রম করে নয়। এটা সব সময়ই একটা চ্যালেঞ্জ এবং সবার কাছ থেকে এটা পাওয়া যায় না।’
সিরিশ কাগজ কেলেঙ্কারির মূল হোতা হিসেবে বিবেচিত ওয়ার্নার কখনোই সবাইকে খুশি করতে পারবেন না। তবে ওয়াহর মতে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬৪৭ রান করা এ ওপেনার এগুলোকে পাত্তা দেবে না।
বিশ্বকাপে স্মিথ খুব ভাল করতে না পারলেও দ্রুত গতিতে ৩৭৯ রান করেছেন। তবে ২০১৭-১৮ মৌসুমে এ্যাশেজ সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-০ ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে পাঁচ টেস্ট সিরিজে তিনটি সেঞ্চুরিসহ ৬৮৭ রান করেছেন।
ওয়ার্নার সম্পর্কে ওয়াহ বলেন, ‘ওয়ার্নার শুধুমাত্র ক্রিকেট খেলতে ভালবাসে। নেতিবাচক কোন কিছু নিয়ে সে খুব বেশি চিন্তা করে না। এটা যেন হাসের গায়ে পানি লাগার মত এবং সে পারফর্ম করতেই উদগ্রীব থাকে।
স্মিথ সম্পর্কে ওয়াহর বক্তব্য, ‘স্মিথ সব সময়ই একজন প্রমানিত টেস্ট খেলোয়াড়। লংগার ভার্সনে গড়ে ৬১ রানের অসাধারন একটা রেকর্ড তার দখলে। সত্যিকারার্থেই কেউ তার ফর্ম বিশ্লেষন করতে পারবে না। তবে বড় ম্যাচের জন্য সে দারুণ একজন খেলোয়াড়, যে কিনা চাপের মধ্যে ম্যাচ ছিনিয়ে নিতে পারে। তার নজর কেবলই রান করার দিকে থাকে এবং আশা করছি আবারো এটা ঘটবে।’