বড়পুকুরিয়ায় কয়লা খনি দুর্নীতি মামলায় ২৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র প্রস্তুত

352

দিনাজপুর, ২২ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : দিনাজপুর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলায় ২৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অনুমোদিত অভিযোগপত্র আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দাখিল করা হবে। আদালতে অভিযোগপত্র গ্রহণের পর মামলাটি বিচারের জন্য সিনিয়র স্পেশাল জজ দিনাজপুর আদালতে প্রেরণ করা হবে।
অভিযোগপত্রে ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৫০১ টাকার কয়লা খনি থেকে খোয়া যাওয়ার ঘটনায় খনির ২৩ কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করেছে দুদক। দিনাজপুর সমন্বিত দুদক জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু হেনা মোহাম্মদ আশিকুর রহমান জানান, দুদক সদর দপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শামসুল আলম এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দুদকের ঢাকাস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযোগপত্র উপস্থাপন করলে কমিশন তা অনুমোদন দেয়। তদন্ত টিমে দুদকের আরও ৫ জন কর্মকর্তাকে সম্পৃক্ত করা হয়। এদের মধ্যে দিনাজপুর সমন্বিত দুদক জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আহসানুল কবির পলাশ সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। তিনি বলেন, ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে দুদকের তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারের জন্য চার্জশীট প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী বুধবার অথবা বৃহস্পতিবার এ চার্জশীট আদালতে দাখিল করা হবে।
অভিযোগপত্রে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি প্রকল্পের সাবেক ৭ জন এমডিসহ ২৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। আসামিরা হলেন- সাবেক এমডি মোঃ মাহবুবুর রহমান, মোঃ আব্দুল আজিজ খান, প্রকৌশলী খুরশিদ আলম, প্রকৌশলী কামরুজ্জামান, মো. আনিসুজ্জামান, প্রকৌশলী এসএম নুরুল আওরঙ্গজেব ও প্রকৌশলী হাবিব উদ্দীন আহমেদ। এছাড়া সাবেক মহাব্যবস্থাপক (জিএম) শরিফুল আলম, মোঃ আবুল কাশেম প্রধানিয়া, আবু তাহের মোঃ নুরুজ্জামান চৌধুরী, ব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান হাওলাদা, মোঃ আরিফুর রহমান ও সৈয়দ ইমাম হাসান, উপ-ব্যবস্থাপক মোঃ খলিলুর রহমান, মোঃ মোর্শেদুজ্জামান, মোঃ হাবিবুর রহমান, মোঃ জাহিদুর রহমান, সহকারী ব্যবস্থাপক সতেন্ত্র নাথ বর্মন, মোঃ মনিরুজ্জামান, কোল হ্যান্ডেলিং ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপক মোঃ সোহেবুর রহমান, উপ-মহাব্যবস্থাপক একেএম খাদেমুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক অশোক কুমার হাওলাদার ও উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ জোবায়ের আলী।
এজাহারভূক্ত ব্যবস্থাপক মোঃ মোশাররফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক জাহিদুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক একরামুল হক, সাবেক ব্যবস্থাপক মোঃ আব্দুল মান্নান পাটোয়ারী ও মহাব্যবস্থাপক গোপাল চন্দ্র সাহাকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের জানুয়ারী মাস থেকে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯২ মেট্রিক টন কয়লা খোয়া গেছে। যার আনুমানিক মূল্য ২৪৩ কোটি ২৮ লাখ ৮২ হাজার ৫০১ টাকা ৮৪ পয়সা।
এই ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানীর ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোঃ আনিসুর রহমান বাদী হয়ে গত বছরের ২৪ জুলাই ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে পার্বতীপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি দুদকের তফশীলভুক্ত হওয়ায় দুদক কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়।