পাঁচ মাসের মধ্যে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু হবে : সালমান রহমান

478

ঢাকা, ১৬ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, দেশের ব্যবসা বাণিজ্য সহজ করতে আগামী ৪ থেকে ৫ মাসের মধ্যেই ওয়ান স্টপ সেবা চালু হবে। আর রফতানি বহুমুখীকরণে গার্মেন্টসের মতো অন্যান্য রফতানিখাতও একই সুবিধা পাবে। এছাড়াও নতুন উদ্যোক্তা তৈরি জন্য উপজেলা পর্যায়ে কারিগরি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে। আর উদ্যোক্তাদের স্লোগান হচ্ছে,‘চাকরি চাই না,চাকরি দিতে চাই’।
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টন টাওয়ারে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএসসি) এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরফ) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালার বিষয় ছিল:বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণ।
ইআরএফের সভাপতি সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সিনিয়র ইকোনমিস্ট মাশরুর রিয়াজ এবং ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম।
সালমান বলেন, গার্মেন্টস শিল্পে বিকাশে অনেক সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এবারের বাজেটে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে,গার্মেন্টস শিল্পের মতো অন্যান্য শিল্পখাতও রফতানিতে একই সুবিধা পাবে। এক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য থাকবে না।
তিনি বলেন,সহজে ব্যবসা করার সূচকে উন্নতি করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু হলে ব্যবসায়ীরা এক ছাদের নিচে সব সেবা পাবেন। এছাড়াও দেশে উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে উপজেলা পর্যায়ে কারিগরি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি বলেন, রফতানি পণ্যের বহুমুখী করতে হবে, তবে সেটা পোশাককে বাদ দিয়ে নয়। পোশাকে আমরা দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছি। আরও উন্নতির সুযোগ আছে। পাশাপাশি অন্য খাতের রফতানি বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি আরো বলেন,পোশাকের মতো সব রফতানি খাত সমান সুযোগ পাবে। অতীতে আমরা সেই সুযোগ দিতাম না। এবার সে সুবিধা পাবে। এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সালমান রহমান বলেন, আমাদের গার্মেন্টস পণ্যের বহুমুখীকরণ হয়েছে। পাশাপাশি বাজারেরও বহুমুখীকরণ হয়েছে। আগে আমরা আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে রফতানি করতাম, এখন বিশ্বের অনেক দেশে গার্মেন্টস পণ্য রফতানি করা হচ্ছে।
সালমান রহমান বলেন,তবে শিল্পের এক খাত থেকে যখন আমরা অন্য খাতে যাচ্ছি,তখনই আমাদের অভিজ্ঞতার অভাব দেখা দেয়। এক্ষেত্রে শ্রমিক সংকট না হলেও ম্যানেজারের সংকট হয়।সেই অভিজ্ঞতার অভাবে আমরা বাইরে থেকে ম্যানেজার নিয়ে আসি। আশা করছি ভবিষ্যতে এ সংকট থাকবে না।
তিনি জানান, আগামী অক্টোবরের শেষ নাগাদ ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যখন ইজ অব ডুইং বিজনেসের (সহজে ব্যবসা সংক্রান্ত সূচক) র‌্যাংকিং ঘোষণা করবে। আশা করছি বাংলাদেশের র‌্যাংকিং ডাবল ডিজিটে (একশ’র নীচে) থাকবে। রফতানি পণ্য বহুমুখীকরণের ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখবে।
মাশরুর রিয়াজ বলেন, একই পণ্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে আমাদের রফতানি। এতে কর্মসংস্থান বাড়ছে না। তিনি বলেন, ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গার্মেন্টস পণ্যের রফতানি প্রবৃদ্ধি ১৪ শতাংশ। কিন্তু কর্মসংস্থানে প্রবৃদ্ধি মাত্র ৬ শতাংশ। ফলে কর্মসংস্থানই আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ।
সাইফ ইসলাম দিলাল বলেন,বাংলাদেশ থেকে বর্তমানে ৭৪৪টি পণ্য রফতানি হচ্ছে। কিন্তু রফতানি আয়ের ৮৪ শতাংশই আসে একটি মাত্র খাত পোশাক শিল্প থেকে। আমরা মনে করি- কেবল একটি পণ্যের ওপর এভাবে নির্ভরশীল হয়ে একটি দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। তাই রফতানি পণ্য বহুমূখীকরণের উদ্যোগ নেয়া এখন সময়ের দাবি।
ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলাম পণ্য বহুমূখীকরণের বাধা উত্তোরণে ব্যবসায় পরিবেশের উন্নয়ন ও বাণিজ্য সহজীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।