কোরিয়া বাংলাদেশে জ্বালানী ও আইসিটি খাতে সহযোগিতা করবে : প্রধানমন্ত্রী লি

485

ঢাকা, ১৪ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী লি ন্যাক-ইয়ন বলেছেন, বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে তার দেশ এদেশে জ্বালানী, অবকাঠামো ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণে আগ্রহী।
রোববার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত কোরিয়া-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) এবং কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এসোসিয়েশন (কেআইটিএ) যৌথভাবে বিজনেস ফোরামের আয়োজন করে।
ন্যাক-ইয়ন আশা প্রকাশ করে বলেন, কোরিয়া-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সহযোগিতা করবে।
বাংলাদেশের পণ্য উৎপাদন বহুমূখীকরণের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন,কেবলমাত্র তৈরি পোশাক ও শিপ বিল্ডিং এর নির্ভর না করে বাংলাদেশকে এখন রফতানি পণ্য বহুমূখীকরণের দিকে যেতে হবে।
কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ যাতে বহুমূখী পণ্য উৎপাদন করতে পারে এজন্য তার দেশ এদেশে হাই-টেক পার্ক স্থাপনে সহযোগিতা করবে।’
বাংলাদেশের জ্বালানী ও অবকাঠামোখাতে কোরিয়ার বিদ্যমান সহায়তার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি এসব খাতে তার সরকারের সহযোগিতা বাড়ানোর আগ্রহের কথা জানান।
ন্যাক-ইয়ন বলেন,বাংলাদেশ ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের দেশে যেতে চাই এবং এক্ষেত্রে তারা ডিজিটাল বাংলাদেশ শ্লোগানকে মূল স্তম্ভ হিসেবে বেছে নিয়েছে। কোরিয়ান সরকার বাংলাদেশের এই প্রচেস্টায় শামিল হতে তথ্য-প্রযুক্তিখাতে সহায়তা জোরদার করবে ।
তিনি জানান, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে সহায়তা করতে কোরিয়া বাংলাদেশে অধিকসংখ্যক আইসিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা এবং আইসিটি পেশীজীবিদের তার দেশে নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে। তিনি চট্টগ্রামে কোরিয়ান ইপিজেডের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাকে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেন।
বিজনেস ফোরামে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন,বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি,এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম ও কেআইটিএ চেয়ারম্যান ইয়াং জু কিম বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ দু’দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
মাত্র এক প্রজন্মের ব্যবধানে কোরিয়া উন্নত দেশের তালিকায় উঠে এসেছে উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বাংলাদেশ থেকে আরো জনশক্তি নিতে কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন,বাংলাদেশের যারা কোরিয়ায় কাজ করছেন তারা কেবল দেশে রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন তা নয়,এর সাথে কোরিয়া কিভাবে দ্রুততম সময়ে উন্নয়নের শীর্ষে গেছে সেটাও জানতে পারছে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্প্রসারণে কোরিয়ান ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান।
এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন,গত অর্থবছরে বাংলাদেশ এবং কোরিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্য ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌছেছে। বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ব্যবসা পরিচালনা সহজ করার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে বলে তিনি জানান।
বিজনেস ফোরামের শুরুতে ‘কোরীয় সরকারের নতুন দক্ষিণ নীতি ও কোরিয়া-বাংলাদেশ সহযোগিতা কৌশল এবং ‘কোরিয়া-বাংলাদেশ সহযোগিতার সর্বোত্তম চর্চা বিষয়ে দু’টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম সেশনে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য নাভাশ চন্দ্র মন্ডল এবং কোরিয়া পক্ষ থেকে কেটিএ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ডল সুন জু প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। দ্বিতীয় সেশনে কেইপিজেডের সভাপতি জাহাঙ্গীর সাদাত এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক জনাব মোহাম্মদ এনামুল কবির প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।