বাজিস-১২ : দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের কাজ

161

বাজিস-১২
খুলনা- রেল প্রকল্প
দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের কাজ
খুলনা, ১৩ জুলাই, ২০১৯ (বাসস): দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের কাজ। এখন পর্যন্ত এ প্রকল্পের আওতাধীন রূপসা রেলসেতুর শতকরা ৫৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে, ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেললাইনের ৪০ কিলোমিটারের নির্মানকাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, এই প্রকল্পের আওতায় নির্মানাধীন রূপসা রেলসেতুর ৯২৮ টি পাইলের মধ্যে ৮৭৬টির কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর পশ্চিমপাড় বটিয়াঘাটা উপজেলার পুটিমারী ও পূর্বপাড় খাডাবাদে দিন-রাত চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ।
জানা গেছে, খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে রেললাইনের জন্য একহাজার ১৪৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা এবং সেতুর জন্য একহাজার ৭৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। বাকী টাকা জমি অধিগ্রহণে ব্যয় করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন (জিওবি) ও ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় এই রেলপথটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টাব্র রূপসা নদীর ওপর মূল রেলসেতুর কাজ সম্পন্ন করছে। ২০২২ সাল নাগাদ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে মোংলা বন্দরের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ি এগিয়ে চলছে দেশের প্রথম সুপার স্ট্রাকচারের রেলসেতুর নির্মাণ কাজ।এই রেলসেতুটি হবে দেশের দীর্ঘতম রেলসেতু।
রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের নির্বাহি প্রকৌশলী আবদুর রহিম বলেন, গতবছর রূপসা রেলসেতুর পাইলিং ডিজাইনের সমস্যা দূর হওয়ার পর খুলনা এবং মোংলা উভয়দিক থেকে রেললাইনের কাজ চলছে। ইতিমধ্যে ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেললাইনের খুলনার দিক থেকে মোট ১২ কিলোমিটার এবং মোংলার দিক থেকে ২৮ কিলোমিটারের নির্মানকাজ সম্পন্ন হয়েছে।
খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটির কাজ ৩টি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে। একটি রেলসেতু, অপরটি রেললাইন এবং অন্যটি টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনার ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৮টি স্টেশন হচ্ছে।এগুলো হচ্ছে- ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদনগর, কাটাখালী, চুলকাঠি, ভাগা, দিগরাজ ও মোংলা।
রূপসা রেলসেতুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন ম্যানেজার সুব্রত রায় জানান, দ্রুততার এগিয়ে চলছে খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্পের কাজ। সিঙ্গেল ব্রডগেজের এ সেতুর দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটার। ৯২৮টি পাইলের মধ্যে কাজ শেষ হয়েছে ৮৭৬টির। পিয়ার ক্যাপ ১৩৬টির মধ্যে ৮১টির কাজ শেষ হয়েছে। ১৪৩টি স্প্যানের মধ্যে ৬৯টি বসানো হয়েছে। পাইল ক্যাপ হয়েছে ১৪৪টির মধ্যে ৮১টির। গত সোমবার পর্যন্ত সেতুর মোট ৫৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
এদিকে, গত ৪ জুলাই মোংলায় রেলপথ বিভাগ ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠকে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ২০২২ সালের মধ্যেই মোংলা-খুলনা রেললাইন চালু হবে।মোংলা সমুদ্রবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে খুলনা থেকে বাগেরহাটের মোংলা পর্যন্ত রেললাইন নির্মান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘খুলনা-মোংলা রেলপথে যাত্রী পরিবহণসহ মালামাল পরিবহণ করা হবে।এছাড়া পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা হয়ে ভারতের শিলিগুড়ির সাথে এ রেল যোগাযোগ সরাসরি সংযুক্ত হবে। ফলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সাথে রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।’
২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন করে। পরে ২০১২ সালের নভেম্বর প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পায় ভারতের সিইজি নিপ্পন কোয়ি জেভি প্রতিষ্ঠান। ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর রূপসা রেলসেতুর পাইলিংয়ের কাজের উদ্বোধন করা হয়।
বাসস/জেডএইচ/১৯২০/এমকে