বরগুনায় আলোচিত রিফাত হত্যা মামলা বিষয়ে পদক্ষেপের প্রতিবেদন হাইকোর্টে পেশ

247

ঢাকা, ৪ জুলাই, ২০১৯ (বাসস) : বরগুনায় চাঞ্চল্যকর রিফাত হত্যার ঘটনায় আনা মামলায় নেয়া পদক্ষেপের প্রতিবেদন হাইকোর্টে পেশ করা হয়েছে।
বর্বরোচিত ওই হত্যার ঘটনায় নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক ও পুলিশের প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার আদালতে তুলে ধরা হয়। বিচারপতি এফআরএম নাজমুল হাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (বাশার) আদালতকে ওই ঘটনায় আনা মামলায় সর্বশেষ আসামি গ্রেফতারের অবস্থা সম্পর্কেও অবহিত করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান, এ মামলায় ১২ আসামির মধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এজাহারের বাইরেও কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার মূল আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডকে ধরার সময় তিনি পুলিশের গুলিতে মারা গেছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামী ধরতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়। তখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পাল্টা গুলি ছুঁড়ে। সেখানে তিনি (নয়ন বন্ড) মারা যান।
এ সময় আদালত আরও বলেন, আমরা এক্সটা জুডিশিয়াল কিলিং (বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড) পছন্দ করি না।
বরগুনায় রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যায় জড়িতরা যাতে পালাতে না পারে সেজন্য সীমান্ত এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারির নির্দেশ দিয়ে গত ২৭ জুন আদেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তাও জানতে চান আদালত।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এ হত্যার ঘটনায় প্রকাশিত বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনলে আদালত বিষয়টি আমলে নেন।
গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে দশটার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের পাশে রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার স্ত্রীর সামনে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে কয়েকজন যুবক। সে সময় নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেও বাঁচতে পারেনি রিফাত।
ওই ঘটনার একটি ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে তা ব্যাপক ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক রিফাতকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একের পর আঘাত করছে। আর তাদের হাত থেকে স্বামীকে রক্ষার চেষ্টা করছেন রিফাতের স্ত্রী মিন্নি এবং তিনি চিৎকার করে সাহায্য চাচ্ছেন। কিন্তু ঘটনাস্থলে অনেকে উপস্থিত থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
নৃশংস এ ঘটনায় নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তাতে বরগুনা শহরে চিহ্নিত সন্ত্রাসী নয়ন বন্ড এবং তার সহযোগী রিফাত ফরাজী ও তার ছোট ভাই রিশান ফরাজীসহ ১২ জনকে আসামি এবং আরও চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।