বাসস দেশ-১৬ : ৪২২ কোটি টাকা ব্যয়ে অটিস্টিক একাডেমি নির্মাণ করবে সরকার

180

বাসস দেশ-১৬
দশ-উদ্যোগ-শিক্ষা

৪২২ কোটি টাকা ব্যয়ে অটিস্টিক একাডেমি নির্মাণ করবে সরকার

॥ মোঃ জহির উদ্দিন বাবর ॥

ঢাকা, ৩০ জুন, ২০১৯ (বাসস) : অটিস্টিক শিশুদের শিক্ষার মূলধারায় অন্তর্ভূক্ত করতে ৪২২.৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে অটিস্টিক একাডেমি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে অটিজম ও স্নায়ুবিকাশজনিত সমস্যায় আক্রান্তদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ জাতীয় একাডেমি প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কিন্তু একাডেমির স্থায়ী ভবন নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি না পাওয়ায় এটি স্থগিত হয়ে যায়।
পরবর্তিতে প্রকল্প পরিকল্পনায় সংশোধনী এনে ‘ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজএ্যাবলিটিজ’ নামে উপস্থাপন করা হয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকেই বরাদ্দের এই টাকা যোগান দেয়া হবে। প্রকল্পটি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আওতায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর বাস্তবায়ন করবে।
মাউশির অধিনে‘ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজএ্যাবলিটিজ’ প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বও এর মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের আওতায় একাডেমিক কাম প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হবে ১টি । একাডেমি ভবনে অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হবে ১টি । থাকবে জিমন্যাশিয়াম ও সুইমিং পুল। জাতীয় একাডেমির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্টাফ কোয়ার্টার নির্মাণ করা হবে ১টি । ১০০ আসন বিশিষ্ট দু’টি পৃথক বয়েজ ও গার্লস হোস্টেল নির্মাণ করা হবে দু’টি। জাতীয় অটিস্টিক একাডেমির মহাপরিচালকের জন্য বাসভবন নির্মাণ করা হবে। একাডেমির নিজস্ব সাব-স্টেশন এবং পাম্প হাউস নির্মাণ করা হবে । এ ছাড়া, একাডেমির সীমানা প্রাচীর, আভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডঃ মোহাম্মাদ দিদারুল আলম বাসস কে বলেন,একাডেমীর স্থায়ী ভবন না হওয়া পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাতেই ভাড়া বাড়িতে একাডেমীর কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।আগামি দুই মাসের মধ্যে ভাড়া বাড়িতে একাডেমির কার্যক্রম শুরু করতে পারব। ইতোমধ্যে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে বাড়ি ভাড়া করার ছাড়পত্র পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (এএসডি) এবং নিউরো- ডেভেলপমেন্টাল ডিজএ্যাবলিটিজ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করতেই নির্মাণ করা হবে জাতীয় অটিস্টিক একাডেমি। এই একাডেমির মাধ্যমে এএসডি ও এনডিডি আক্রান্তদের বৃত্তিমূলক ও অন্যান্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষম করে গড়ে তোলা হবে। এএসডি ও এনডিডি আক্রান্তদের আবাসিক সুবিধা দেয়া হবে। একাডেমির আওতায় এএসডি ও এনডিডি আক্রান্তদের জন্য উপযুক্ত আইসিটি প্রশিক্ষণও নিশ্চিত করা হবে।
দিদারুল আলম বলেন, বাংলাদেশে তৃণমূলপর্যায়ে সহায়তা প্রদানের জন্য একটি বিশেষ শিক্ষক ও অভিভাবক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করা এবং খেলাধুলা, সংগীত, শিল্প এবং পেশাগত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এএসডি ও এনডিডি আক্রান্তদের বিকল্প দক্ষতা প্রদান করা হবে জাতীয় অটিস্টিক একাডেমির কাজ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, অটিজম ও স্নায়ু বিকাশজনিত সমস্যা বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের উদ্যোগ বাস্তবায়নে দেশের আট বিভাগে ইনক্লুসিভ শিক্ষার জন্য ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করেছে সরকার। এই আট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রথমে পাইলট হিসেবে ধরা হয়েছিল।বর্তমানে ৬৪ জেলায় মোট ৪০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এর আওতায় নেয়া হয়েছে। পরে দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় পর্যায়ক্রমে এই শিশুদের একীভূত শিক্ষার আওতায় নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এসব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পেশাগত মানোন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজঅ্যাবিলিটিস (এনএএএনডি) প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় ৪০০ জন মাস্টার ট্রেইনারকে নির্ধারিত বা বিশেষায়িত ট্রেইনিং অব ট্রেইনার্স (টিওটি) প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কারিকুলাম অনুযায়ী শিক্ষকদের শিক্ষা কারিকুলামে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের বিশেষ লিখন পদ্ধতি যতœ নেয়ার বিষয়ে নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
দিদারুল আলম জানান, অটিজম ও নিউরো- ডেভেলপমেন্ট ডিজঅ্যাবলিটিজ (এনডিডি) শিক্ষার্থীদের জন্য একীভূত শিক্ষা ব্যব¯’া নীতিমালার খসড়া প্র¯‘ত করা হয়েছে। এ নীতিমালা অনুযায়ী অটিজম ও নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটি (এনডিডি) শিক্ষার্থীদের স্কুল পরিচালিত হবে।
বাসস/দশ-উদ্যোগ/জেইউবি/১৮১৫/-আসচৌ/এমজে