ব্যবসায়ীরা হয়রানিমুক্ত পরিবেশে কর দিতে চান

309

ঢাকা, ২৭ জুন,২০১৯ (বাসস) : ব্যবসায়ীরা বলেছেন, তারা ঝামেলা ও হয়রানিমূক্ত পরিবেশে কর দিতে চান। তারা কর কর্মকর্তার জব্দকরণ ও আটক করার স্বেচ্ছা ক্ষমতা এবং ব্যাংক হিসাব বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) আয়োজিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা সভায় ব্যবসায়ীরা এসব দাবি করেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, রফতানিমূখী তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)’র সভাপতি ওসামা তাসীর, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রি (বিসিআই)’র সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি(সিসিআই)’র সভাপতি মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুত ও রফতানিকারক এসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) সভাপতি মো. জসীম উদ্দিন, এফবিসিসিআই সহসভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানসহ বিভিন্ন চেম্বার ও এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বর্তমান সরকার ব্যবসাবান্ধব উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন,ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের উন্নয়নে আমরা কাজ করছি। এর অংশ হিসেবে মাঠ পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা যেন ঝামেলা ও হয়রানিমূক্ত পরিবেশে কর দিতে পারেন, সে বিষয়ে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা কর ভীতিমূক্ত পরিবেশ গড়তে চলেছি।
তিনি মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকা অবমূল্যায়নের পক্ষে মত প্রকাশ করে বলেন, এটা করা গেলে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। এতে আমদানিকারকরা চাপের মুখে পড়বেন না।
তিনি বলেন, তৈরি পোশাক রফতানির ওপর যে ১ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে, সেটা যেন ব্যবসায়ীরা ঠিকমত এবং সময়মত পান সে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে। তিনি বলেন, কোন প্রক্রিয়াগত জটিলতায় ব্যবসায়ীরা যেন প্রণোদনা পেতে ভোগান্তির শিকার না হন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আরো কিভাবে ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব হওয়া যায়, সরকারের সেই প্রচেস্টা রয়েছে। তবে ব্যবসায় খরচ কমানোর জন্য দক্ষতাও বাড়াতে হবে। ব্যবসায়ীরা দক্ষতা না বাড়ালে রফতানি প্রতিযোগিতায় ঠিকে থাকতে পারবেন না। তিনি বলেন, বাজেট পাসের পরও ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধার্থে কোথাও প্রয়োজন হলে সংশোধনী আনা হবে।
অনুষ্ঠানে শেখ ফজলে ফাহিম এফবিসিসিআইয়ের বাজেট পরবর্তী প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলেন, ঝামেলা ও হয়রানিমূক্ত পরিবেশে ব্যবসায়ীরা কর দিতে চান। খেয়াল রাখতে হবে কর দিতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা যেন কোন ধরনের হয়রানির শিকার না হন। কর সংক্রান্ত কোন বিষয়ে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন বা এফবিসিসিআইকে অবহিত করার অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি শিল্পের সকল কাঁচামাল ও মূলধনী যন্ত্রপাতি থেকে আগাম কর প্রত্যাহারের দাবি জানান। একইসাথে তিনি যোগানদারের ক্ষেত্রে ভ্যাট ৭ দশমিক ৫ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে ব্যক্তি করমূক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়। কোম্পানীর ক্ষেত্রে করপোরেট করহার ২ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস এবং তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য রফতানিখাতে করপোরেট কর হার একই হারে কমানোর প্রস্তাব করে সংগঠনটি।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন রাজস্ব কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য বলেন, কোন ব্যবসায়ী কর ফাঁকি দিলে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করুণ। তবে কোন নিরীহ ব্যবসায়ী যেন অযথা হয়রানির শিকার না হন। তিনি বলেন, যারা বন্ডের অপব্যবহার করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করুন। তবে এই কারণে কোন খাতে ঢালাওভাবে বন্ড সুবিধা বন্ধ করে দেয়া ঠিক নয়।
তিনি সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের আয়কর আদায়ের হার ৫০০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে যৌক্তিক পর্যায়ে আনার সুপারিশ করেন।