বাসস দেশ-২৯ : কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করবে সরকার

185

বাসস দেশ-২৯
দশ-উদ্যোগ-কমিউনিটি ক্লিনিক
কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করবে সরকার
॥ বরুন কুমার দাস ॥
ঢাকা, ২৬ জুন, ২০১৯ (বাসস) : সরকার সারাদেশে সকল কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাভাবিক প্রসব ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এ কারনে দিনদিন কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবাগ্রহীতা ও সেবার মান বেড়েই চলেছে। মা ও শিশুর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় এক নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে এ প্রকল্প।
কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘কিছু কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকে এখন পর্যাপ্ত পরিমানে স্বাভাবিক ডেলিভারির সেবা দেয়া হচ্ছে। জনগনকে স্বাভাবিক ডেলিভারির বিষয়ে আকৃষ্ট করার জন্য আমরা সবক’টি কমিউনিটি ক্লিনিকে নিরাপদ প্রসব সেবা চালু করবো।’
বর্তমানে সীমিতসংখ্যক কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রসব সেবা চালু থাকলেও দেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিকে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্য স্বাভাবিক ডেলিভারি ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করতে যাচ্ছে সরকার।
তিনি বলেন,ইতোমধ্যেই আরো এক হাজার ক্লিনিক নির্মানের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সরঞ্জামাদিসহ স্বাভাবিক ডেলিভারির সব ব্যবস্থা থাকবে এসব ক্লিনিকে।
সে কারনেই কমিউনিটি ক্লিনিকের নতুন ডিজাইন করা হয়েছে। নির্মাণ করা হবে এক হাজারের বেশি নতুন কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন। বিদ্যুত সংযোগ নেই এমন কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ইতোমধ্যে সোলার প্যানেলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বর্তমানে নতুন মডেলে চার কক্ষবিশিষ্ট (স্বাভাবিক প্রসব কক্ষসহ) কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত হচ্ছে। পরবর্তীতে সকল ক্লিনিক নতুন মডেল অনুযায়ী নির্মিত হবে।
কমিউনিটি ক্লিনিক নিউজ লেটার থেকে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ১৩,৭৮০ কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে। নির্মান লক্ষ্য মাত্রা ১৪,৮৯০ টি। স্বাভাবিক প্রসব সেবা চালু আছে এমন ক্লিনিকের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৪ টি। এ পর্যন্ত স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ৬৬ হাজারের বেশি। ২০১৪ সালে ৬ হাজার ৯৪, ২০১৫ সালে ১০ হাজার ৮৬০, ২০১৬ সালে ১২ হাজার ৫৩৮, ২০১৭ সালে ১৪ হাজার ৯৩৪ এবং ২০১৮ সালে ২১ হাজার ৫৭৪ টি।
কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. আবুল হাসেম খান বাসস’কে বলেন, সারা দেশে ১৩ হাজার ৭৮০টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে। ২০২২ সালের মধ্যে নতুন করে আরো এক হাজার ২৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত হবে। চলতি বছরের মধ্যেই চারশ কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত হবে।
তিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে সাত লাখ মানুষ প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। জনগণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকার জনগণ এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় সাড়ে ৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাভাবিক প্রসব সেবা চালু আছে। শিগগিরই এক হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে লেবার টেবিলসহ প্রসব সেবার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন জিনিস সরবরাহ করা হবে। আস্তে আস্তে দেশের সকল কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রসব সেবা চালু করা হবে।
কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প থেকে জানা গেছে, নতুন করে ২০০৯ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো চালুর পর থেকে গত ১০ বছরে সেবা গ্রহনের সংখ্যা প্রায় ৯০ কোটির বেশি। এর মধ্যে নারী ও শিশু সেবা নিয়েছেন প্রায় ৭২ কোটি। প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন নারী, পুরুষ ও শিশু চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধনের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক সেবা কার্যক্রমের সূচনা করেন।
বর্তমানে সরকারের পাশাপাশি সামাজিক সংগঠন, বেসরকারি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় দেশের গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য পৌঁছানোর লক্ষে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট গঠন ও আনুষাঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন-২০১৮’ পাশ করা হয়েছে।
বাসস/উদ্যোগ-দশ/বিকেডি/-আসচৌ/১৯৪০/এমজে