বাসস দেশ-২৩ : পিকেএসেফের সমৃদ্ধি কর্মসূচি এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক

174

বাসস দেশ-২৩
সমৃদ্ধি কর্মসূচি-পিকেএসএফ
পিকেএসেফের সমৃদ্ধি কর্মসূচি এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক
ঢাকা, ২৬ জুন, ২০১৯ (বাসস) : ক্ষুদ্রঋণ কখনোই দারিদ্র বিমোচনের একমাত্র পথ নয়। এর সঙ্গে জীবনমান উন্নয়ন সংক্রান্ত আরো কিছু বিষয় জড়িত থাকতে হয়। এই উপলব্ধি থেকেই পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ‘সমৃদ্ধি’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক লক্ষ্যমাত্রা সরাসরি অর্জিত হচ্ছে। পাশাপাশি অন্যান্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পরোক্ষভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে।
সম্প্রতি ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স (ডিএসসিই) এর উদ্যোক্ত অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরি ইউনিয়নে বাস্তবানাধীন সমৃদ্ধি কর্মসূচি পরিদর্শন করেন। ডিএসসিইর উদ্যোক্তা অর্থনীতি কোর্সের সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলীর নেতৃত্বে ৫৫ জন ছাত্র-ছাত্রী এই কার্যক্রমে অংশ নেন। এ সময় ডিএসসিইর উদ্যোক্তা উন্নয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সারাহ তাসনীম উপস্থিত ছিলেন।
পিকেএসএফের সহযোগি সংস্থা সোসাইটি ফর ডেভেলমেন্ট ইনিশিয়েটিভস (এসডিআই) স্বাস্থ্য কার্যক্রমের উঠান বৈঠক, সমৃদ্ধি কেন্দ্র, উদ্যমী সদস্য, বিশেষ সঞ্চয় সদস্য কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এছাড়া সমৃদ্ধ বাড়ি, কমিউনিটি উন্নয়ন কার্যক্রম,সমৃদ্ধি শিক্ষা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তারা। শাখা কার্যালয়ে সমৃদ্ধি কর্মসূচির কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য পরিদর্শক এবং শিক্ষকদের সাথেও মতবিনিময় করেন। এর ভিত্তিতে ছাত্র-ছাত্রীরা একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে, যা গতকাল প্রকাশ করা হয়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুব আলী বলেন, চলমান গবেষনার অংশ হিসেবে আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের মাঠ পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলাম। তারা ২০০ জন সুবিধাভোগিদের সঙ্গে আলাপ করেছে। প্রাথমিকভাবে এসডিজি ৪ ও ৮ লক্ষ্যমাত্রার বেশ কিছু সূচক অর্জনে কার্যকর ভূমিকা রাখছে সমৃদ্ধি কর্মসূচি। কি ধরনের ভূমিকা রাখছে সে বিষয়ে একটি চুড়ান্ত গবেষনা দ্রুতই প্রকাশ করা হবে। কর্মসূচিটি দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে একটি মডেল হিসেবে সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। পাশাপাশি এ কর্মসূচির জন্য আরো বেশি বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন বলে তিনি মত দেন।
পিকেএসএফের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ‘সমৃদ্ধি’ ২০১০ সাল থেকে বাস্তবায়িত হয়ে আসা এ কর্মসূচির পূর্ণ রূপ ‘দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে দরিদ্র পরিবারসমূহের সম্পদ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি’। দেশের ৪৩টি ইউনিয়নের দুই লাখ ৪৭ হাজার ৩২২টি খানা নিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়। ১১৬টি সহযোগি সংস্থার মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলার ১৬৪টি উপজেলার ২০২টি ইউনিয়নে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এ মানবকেন্দ্রিক কর্মসূচি। এ কর্মসূচির আওতায় দেশব্যাপী ১২ লাখ ৪৭ হাজার খানায় ৫৬ লাখ ৯২ হাজার জনসংখ্যাকে স্বাস্থ্য,শিক্ষা,পুষ্টিসহ মোট ৩০ টি বিভিন্ন সেবা দেয়া হচ্ছে।
পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও ডিএসসিইর গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ এ বিষয়ে বলেন, এ কর্মসূচির আওতায় ব্যক্তিকে লক্ষ্য না করে পরিবারভিত্তিক ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া হচ্ছে, যেন পুরো পরিবারেরই জীবনমানের উন্নয়ন হয়। সমৃদ্ধি কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্যই থাকে শুধু ব্যক্তিকে ঋণ দেয়া নয়, একটি পরিবারে কর্মসংস্থান তৈরি করা। যাতে করে ঋণ নিয়ে সে টাকা পরিশোধ করতে পারে। দরিদ্র পরিবারসমূহের সম্পদ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের মানব মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করাই এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।
সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় প্রথমে একটি দরিদ্র পরিবার চিহ্নিত করা হয়। কর্মসংস্থান তৈরিতে ওই পরিবার কী কাজ করতে চায়,তার মতামতকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। তারপর পরিবারের চাহিদার আলোকে ঋণ দেয়া হয়। সে ঋণের সুদের হার থাকে ৯ থেকে ১৭ শতাংশের মধ্যে। ঋণ নেওয়ার পর কখন থেকে ঋণের অর্থ পরিশোধ করা হবে সেটি ঋণগ্রহীতাই ঠিক করে দেয়। তা ছাড়া যে উদ্দেশ্যে ঋণ নেওয়া হয়েছে,সে অনুযায়ী কাজটি করা হয়েছে কি না তা নিয়মিত নজরদারি করা হয়। পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত ও হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের বৈকালিক পাঠদান, সুপেয় পানি নিশ্চিত করা ছাড়াও স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে।
বাসস/আরআই/১৯১০/কেএমকে