বিশ্বকাপের সাফল্য বেহরেনডর্ফকে আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে

255

লন্ডন, ২৬ জুন, ২০১৯ (বাসস) : পিঠের ইনজুরির কারনে দীর্ঘদিন দলের বাইরে থাকা অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলার জেসন বেহরেনডর্ফ কাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ৫ উইকেট দখল করেছেন। ইনজুরির কারনে ক্যারিয়ার শেষের শঙ্কায় থাকা বেহরেনডর্ফ মনে করেন এটা অনেকটা স্বপ্ন সত্যি হবার মতই ঘটনা।
২০১৫ সালের শুরুতে বাঁ-হাতি এই সীমারের স্ট্রেস ফ্র্যাকচার ধরা পড়ে। তখন থেকেই তিনি পিঠের সমস্যায় ভুগছিলেন। গত গ্রীষ্ম মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ান প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তিনি বিশ্রামে ছিলেন। এরপর সীমিত ওভারের ম্যাচে নিজেকে ফিরিয়ে আনলেও এখন টেস্ট দলে জায়গা করে নেয়াই তার মূল লক্ষ্য।
মঙ্গলবার লর্ডসে বিশ্বকাপের সাফল্য ইনজুরির সাথে দীর্ঘ লড়াইয়ের বিপক্ষেও একটি জয় বলে বেহরেনডর্ফ বিশ্বাস করেন। ২৯ বছর বয়সী এই বোলারের এটি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নির্ধারিত ১০ ওভারে তিনি ৪৪ রানে তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার ৭ উইকেটে ২৮৫ রানে জবাবে ইংল্যান্ডের ইনিংস ২২১ রানেই গুটিয়ে যায়। ৬৪ রানে জয়ের পর বেহরেনডর্ফ বলেছেন, ‘রিহ্যাবের সময় আমার প্রায়ই মনে হয়েছে একদিন ঠিকই ফিরে আসবো। এই ধরনের সাফল্য একজন খেলোয়াড়ের স্বপ্ন থাকে। অস্ট্রেলিয়ার জার্সি গায়ে লর্ডসে খেলতে নেমে ৫ উইকেট পাওয়া, সবই কেমন যেন মনে হচ্ছে। সত্যি বলতে কি এখনো বিশ্বাস হচ্ছেনা, কিন্তু এটা ঠিক যে দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।’
জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে বেহরেনডর্ফে। সিডনিতে ঐ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে তিনি ২ উইকেট দখল করেছিলেন। কালকের ম্যাচটি ছিল তার ক্যারিয়ারে অষ্টম ওয়ানডে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সংক্ষিপ্ত ক্যারিয়ারে বিশ্বকাপের মত আসরে ৫ উইকেট প্রাপ্তি সত্যিকার অর্থেই তাকে নতুনভাবে বিশ্ব ক্রিকেটে পরিচিত করেছে। দীর্ঘ পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় বিশ্বকাপে খেলার চিন্তা তো দুরে থাক ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যাবার শঙ্কা ছিল। কিন্তু বেহরেনডর্ফ জানিয়েছেন অধিনায়ক এ্যারন ফিঞ্চ ও নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিতে পেরে তিনি দারুন খুশী।
এই আসরেই শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বেহরেনডর্ফের বিশ্বকাপে অভিষেক হয়েছে। ঐ ম্যাচে তিনি ৫৯ রান খরচায় মাত্র ১ উইকেট দখল করেছিলেন। বেহরেনডর্ফ বলেন, ‘এটা নির্বাচকদের প্রতি অনেক বড় প্রতিদান। ভাল একটি শুরুর পর সেটা ধরে রাখাই মূল চ্যালেঞ্জ ছিল। কাল আমরা পুরো ইনিংসে সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছিলাম।’
বিশ্বকাপের এত বড় মঞ্চে তাকে সহযোগিতা করার জন্য সতীর্থ অসি পেসার মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্সেরও প্রশংসা করেছেন বেহরেনডর্ফ। তিনি বলেন, স্টার্ক ও কামিন্স দীর্ঘদিন ধরে ওয়ানডে ক্রিকেট খেলছে। মিডল ওভারে কিভাবে তারা নিজেদের এগিয়ে যান সেই অভিজ্ঞতাগুলো তারা আমার সাথে শেয়ার করেছে। বিষয়গুলো আমার জন্য সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।
সাত ম্যাচের ছয়টিতেই জয় তুলে নিয়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালে টিকিট নিশ্চিত করেছে। গত পাঁচটি বিশ্বকাপ আসরের চারটিতেই জয়ী হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু তারপরেও বেহরেনডর্ফ মনে করেন শিরোপা জয়ে শুধুমাত্র তারাই ফেবারিট নয়। তার মতে, প্রতিযোগিতা এখনও উন্মুক্ত। ইংল্যান্ড দারুন একটি দল। সম্ভবত স্বাগতিক হিসেবে এখনো তারা ফেবারিট। আশা করছি শেষ দুটি ম্যাচে জয়ী হয়ে শক্তিশালী অবস্থান নিয়েই আমরা সেমিফাইনালে খেলতে পারবো।