রংপুরে দু’দিনব্যাপী স্বর্ণ মেলা শুরু

665

রংপুর, ২৪ জুন, ২০১৯ (বাসস): রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (আরসিসিআই) মিলনায়তনে আজ সোমবার থেকে শুরু দু’দিনব্যাপী বিভাগীয় পর্যায়ের -২০১৯ স্বর্ণ মেলা-২০১৯ শুরু হয়েছে। এ মেলা রংপুর বিভাগের স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।
রংপুর জোনাল কর কমিশনারের অফিস আয়োজিত উক্ত মেলায় স্বর্ণ ও স্বণালংকার ব্যবসায়ীদেরকে তাদের অঘোষিত স্বর্ণ, স্বর্ণের অলঙ্কার, কাটা এবং পালিশ করা হীরা ও রৌপ্য দেখানো এবং নামমাত্র কর পরিশোধ করে সেগুলো বৈধ করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
রংপুর জোনাল কর কমিশনার মো: আবদুল লতিফের সভাপতিত্বে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
রংপুর জোনাল কর কমিশনার অফিস, বিভাগীয় কাস্টমস ও এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট অফিস এবং দু’টি বাণিজ্যিক ব্যাংক স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ীদেরকে তাদের অঘোষিত মূল্যবান ধাতু ও অলঙ্কারাদি সাদা করার জন্য প্রয়োজনীয় সেবা দেয়ার জন্য মেলায় ছ’টি স্টল স্থাপন করেছে।
রংপুর আয়কর অঞ্চলের আওতাধীন রংপুর বিভাগের আট জেলার বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য, জেলা ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ, জোনাল কর কমিশনার অফিস এবং বিভাগীয় কাস্টমস ও এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটর কর্মকর্তাসহ স্থানীয় সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
স্বাগত বক্তব্যে রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত কর কমিশনার শেখ মো: মনিরুজ্জামান বলেন, দেশের স্বর্ণশিল্প উন্নয়ন এবং সাধারণ স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ীদের মধ্যে কর সম্পর্কে ভীতি অপসারণের জন্য সরকার ঘোষিত স্বর্ণ নীতি-২০১৮ সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য মেলাটি আয়োজন করা হচ্ছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর জরীপ ও পরিদর্শন) মো: মেফতাহ উদ্দিন খান, আরসিসিআই সভাপতি মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু ও বিজেএস-এর রংপুর জেলা ইউনিটের সভাপতি এনামুল হক সোহেল বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
এনামুল হক সোহেল স্বর্ণ নীতি- ২০১৮ প্রণয়ন করার মাধ্যমে দেশের স্বর্ণ শিল্পকে উন্নত করার জন্য স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মেফতাহ উদ্দিন বলেন, স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ীদের অঘোষিত মূল্যবান এসব জিনিস আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বৈধ করার জন্য এনবিআর প্রতি ভরি সোনার জন্য নামমাত্র ১,০০০ টাকা, কাটা ও পালিশ করা প্রতি ক্যারেট হীরার জন্য ৬,০০০ টাকা এবং প্রতি তোলা রূপার জন্য মাত্র ৫০ টাকা কর ধার্য্য করেছেন।
তিনি বলেন, “এই অঘোষিত পণ্যগুলি বৈধ করার পরে কেউ আর স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ীদেরকে কোনপ্রকার হয়রানি করতে পারবে না। যদি কেউ হয়রানির শিকার হন, অভিযোগ পাওয়া মাত্র প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।”
তিনি স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ীদেরকে যথাযথভাবে ব্যবসায়ের হিসাব-নিকাশ বজায় রাখা, নিয়মিতভাবে রিটার্ণ জমা দেয়া এবং স্বর্ণ নীতি- ২০১৮ অনুসারে ভ্যাট প্রদানের জন্য আহ্বান জানান।
অর্থনীতি শক্তিশালী করার মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নের গতি আরো বাড়াানোর জন্য অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মত স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ীদেরও নিয়মিতভাবে কর প্রদান করা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এনবিআর ব্যবসায়ীদেরকে কোন কষ্ট না দিয়ে কর সংগ্রহ করতে নির্দেশ প্রদান করেছে।
যথাসময়ে প্রনীত স্বর্ণ নীতি- ২০১৮ কে একটি ব্যবসায়ী-বান্ধব ও যুগান্তকারী উদ্যোগ উল্লেখ করে মোস্তফা সোহরাব চৌধুরী টিটু বলেন, এর ফলে দেশে গহনা ব্যবসায় বিকাশের পাশাপাশি স্বর্ণ আমদানি-রপ্তানির একটি নতুন ব্যবসা খাত সৃষ্টি হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা আশা প্রকাশ করে বলেন, স্বর্ণ নীতি- ২০১৮ এর সঠিক বাস্তবায়ন দেশের স্বর্ণশিল্পের প্রসারে ও স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায় বিরাট গতিশীলতা আনবে।