বাসস বিদেশ-৫ : ইন্দোনেশিয়ার লাইটার কারখানায় আগুন লাগার ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তি গ্রেফতার

354

বাসস বিদেশ-৫
ইন্দোনেশিয়া-আগুন
ইন্দোনেশিয়ার লাইটার কারখানায় আগুন লাগার ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তি গ্রেফতার
জাকার্তা, ২২ জুন, ২০১৯ (বাসস ডেস্ক) : ইন্দোনেশিয়ায় এক লাইটার কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। এ আগুন লাগার ঘটনায় কয়েক শিশুসহ ৩০ জন নিহত হয়।
উত্তর সুমাত্রার রাজধানী মেডান থেকে পশ্চিমে ৭০ কিলোমিটার দূরবর্তী বেনজাই শহরে কারখানা হিসেবে ব্যবহৃত একটি ভাড়া বাড়িতে আগুন লাগার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় কারখানার মালিক ও সুপারভাইজার পরিচয়ের একজন পুরুষ ও এক নারী গ্রেফতার হয়েছে।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান নুগ্রহ ট্রি নুরায়ান্ত এফপিকে বলেন, এ ঘটনায় ‘অবহেলার’ অভিযোগ তদন্তে তাদের দুজনকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদন্ড হতে পারে।
প্রাথমিকভাবে কারখানাটি দিয়াশলাই-এর বলে জানা গেলেও তদন্তের পর জানা গেছে যে, কারখানাটি প্রকৃতপক্ষে লাইটারের। খবর এএফপি’র।
কারখানার একজন শ্রমিক উৎপাদিত পণ্য পরীক্ষা করে দেখতে গেলে গ্যাস লাইটারে বিস্ফোরণ ঘটলে, ভীত শ্রমিকরা তখন স্তুপকৃত পণ্যের ওপর ছুঁড়ে ফেলে। এ সময় অনেকে উৎপাদন সামগ্রী প্যাক করায় প্রস্তুত ছিল। এভাবে ভয়াবহ এ অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত ঘটে।
সামনের দরজা বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা আটকে পড়ে এবং বেশির ভাগ অবকাঠামো কাঠ নির্মিত হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
কারখানার ২৫ জন শ্রমিক যারা প্রত্যেকেই ছিল নারী, তারা এ দুর্ঘটনায় নিহত হয়। নিহত পাঁচ শিশুর মধ্যে চারজন মেয়ে।
নুরায়ান্ত জানান, নিহতরা সকলেই ছিল কারখানার আসপাশের স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা। কারখানার মালিক ও সুপারভাইজার মাসে একবার কারখানা মনিটর করতে আসতেন।
নুরায়ান্ত আরো বলেন, ‘আমরা এখনো শিশুরা কেন এই বিপজ্জনক জায়গায় ঢোকার সুযোগ পেল এবং কেনই বা দরজা বন্ধ ছিল তা নিয়ে তদন্ত করছি।’ পুলিশ কারখানাটি অবৈধভাবে পরিচালিত সন্দেহ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা কারখানাটির বৈধতার কোনো প্রয়োজনীয় তথ্য প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
শ্রমিকদের চারজনের মধ্যে একজন যে এ ঘটনার সময় কারখানার বাইরে অবস্থান করায় বেঁচে যায় সে জানায়, শিশুরা তাদের কারখানায় কর্মরত পিতামাতার সঙ্গে দেখা করতে আসতো।
নিহতদের শোক-সন্তপ্ত স্বজনদের মেডানের ওই হাসপাতালের চারপাশে মরদেহ সনাক্ত প্রক্রিয়ার জন্যে ডিএনএ স্যাম্পল নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায় কারণ নিহতরা গুরুতরভাবে পুড়ে যাওয়ায় তাদের চেনা এখন দুস্কর।
নিরাপত্তা ব্যাবস্থা দুর্বল হওয়ায় ইন্দোনেশিয়ায় এধরনের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা বিরল নয়। অবৈধ ব্যাবসা পসার লাভ করায় সেখানে প্রায়ই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। চলতি বছর একটি অনুমোদনবিহীন স্বর্ণখনিতে বিষ্ফোরণ ঘটলে সেখানে বিপুল সংখ্যক লোকের মৃত্যু হয়, ২০১৭ সালে জাকার্তার একটি দমকল কারখানার বহিরাঙ্গণে আগুন লেগে কমপক্ষে ৪৬ ব্যক্তি নিহত ও বেশ কিছু সংখ্যক আহত হয়। ২০১৫ সালে সুলাভেসি দ্বীপে একটি কারাওকি বারে অগ্নিকান্ডে অন্ততঃ ১৭ ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ২০০৯ সালে সুমাত্রা দ্বীপের মেডেনের একটি কারাওকি বারে আগুন লেগে ২০ জনের মৃত্যু হয়।
বাসস/অনু-জেজেড/২১০০/-কেএমকে