জামালপুর জোনে কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপনের আহবান জানালেন সালমান

375

ঢাকা, ২০ জুন, ২০১৯ (বাসস) : প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান চমৎকার বিনিয়োগ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প স্থাপনের জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘জামালপুর কৃষি প্রধান অঞ্চল। এখানকার অর্থনৈতিক জোনটি কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের জন্য উপযুক্ত। তাই ব্যবসায়ীরা জামালপুর জোনের চমৎকার পরিবেশে কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন করে লাভবান হতে পারবেন।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি বরাদ্দের প্রসপেক্টাস বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব একথা বলেন।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, জাতীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো. মোজাফফর হোসেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (ইআরবি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মইন উদ্দিন (অব:) প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, আমরা যে মধ্যম আয়ের দেশে যেতে চাই। আন্তর্জাতিক বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হতে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অঞ্চলের গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই অঞ্চলগুলোতে আমরা বিনিয়োগ উপযোগি পরিবেশ তৈরি করেছি। সব পরিসেবার উপযুক্ত ব্যবস্থা রয়েছে। ব্যবসায়ীরা সহজে এখানে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
তিনি বলেন, আমরা পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি। এখন দরকার শিল্পের জন্য মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা।
কিন্তু আমাদের সঞ্চালন লাইনে কিছুটা দূর্বলতা থাকায় সেটা চাহিদামত করা যাচ্ছে না। তাই শিল্পের জন্য যদি কেউ জাতীয় গ্রীড থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ নিতে চান,সে সুযোগ আমরা দিচ্ছি। যাতে শিল্প-কারখানা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পায়।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন চীন সফরে সেদেশের সঙ্গে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের যে ঋণ চুক্তি সই হবে, তার অধিকাংশই হচ্ছে সঞ্চালন লাইন শক্তিশালী করা।
শিল্পের জন্য ব্যাংক ঋণ প্রাপ্তির বিষয়টি উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন,বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে একটি সমস্যা হচ্ছে, ব্যাংকের অধিকাংশ আমানত স্বল্পমেয়াদি কিন্তু যে ঋণ দেয়া হচ্ছে,সেটা দীর্ঘমেয়াদি।এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। সরকার এই পরিস্থিতি উত্তোরণের চেস্টা করছে। বন্ড মার্কেট শক্তিশালীসহ বিকল্প দীর্ঘমেয়াদি ঋণের দিকে আমাদের যেতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মূখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন,জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি ও গ্যাস-পানিসহ অন্যান্য পরিসেবা প্রায় প্রস্তুত। পর্যাপ্ত বিদ্যুতের ব্যবস্থা রয়েছে। শিল্পের উপযুক্ত শ্রমিক এখানে পাওয়া যাবে। পাশাপাশি জামালপুরের সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন অত্যন্ত উন্নতমানের। তাই বিনিয়োগকারীরা এই জোনে শিল্প স্থাপন করে বেশি লাভবান হতে পারবেন।
সভাপতির বক্তব্যে পবন চৌধুরী বলেন, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নের কাজ আগামীবছর জুনের মধ্যে শেষ হবে এবং তখন থেকে শিল্প স্থাপন কাজ শুরু করা যাবে। গ্যাস সংযোগ লাইন ও ৩৩/১১ কেভিএ বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান।
এছাড়া ড্রেইনেজ সিসটেম,ভূমি উন্নয়ন,গ্রাউন্ড ওয়াটার রির্জাভার, প্রশাসনিক ভবন, ডরমেটরি, বাউন্ডারি ওয়াল, অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল ৪৩৬ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে ৩২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। জোনটি মূলত কৃষিভিত্তিক শিল্প ও গার্মেন্টস স্থাপনের জন্য উপযোগী।