রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহায়তার আশ্বাস লুক্সেমবার্গের

425

ঢাকা, ১২ জুন, ২০১৯ (বাসস) : রোহিঙ্গা সংকটকে ‘সকলের দায়বদ্ধতা’ উল্লেখ করে লুক্সেমবার্গ আজ এ সংকটের একটি স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ সমাধানে বাংলাদেশকে অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণারয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লুক্সেমবার্গের উন্নয়ন সহায়তা ও মানবিকতা বিষয়ক মন্ত্রী পলেট লেনার্ট আজ রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ আশ্বাস দেন।
সচিব (দ্বিপক্ষীয় ও কনস্যুলার), মহাপরিচালক( পশ্চিম ইউরোপ ও ইউরোপ) ও পরিচালক (পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়) সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন। লুক্সেমবার্গের মন্ত্রী পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। প্রতিনিধি দলটির আজ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে কক্সবাজার যাওয়ার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুক্সেমবার্গের মন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের জন্য ধন্যবাদ জানান। এছাড়া মানবিক সহায়তাসহ রোহিঙ্গাসংকট সমাধানে সহায়তার জন্য লুক্সেবার্গ সরকািরকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশে বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতার কথা উল্লেখ করে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে লুক্সেমবার্গের প্রতি রোহিঙ্গারা নিরাপদে তাদের পৈত্রিক বাড়িঘরে ফিরে যাওয়ার জন্যে রাখাইন রাজ্যে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে আন্তরিক ও দৃশ্যমান পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানান। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করতে তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণেরও আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে বিদ্যমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা খুঁজে দেখতে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রতিনিধি দল বিনিময়কে উৎসাহিত করে ড. মোমেন দু’দেশের জন্য লাভজনক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে বেসরকারি খাতের ওপর গুরুত্ব দিয়ে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার জন্য লুক্সেমবার্গের মন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত লুক্সেমবার্গের আর্থিক সেবা খাতের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুক্সেমবার্গের আর্থিক সেবা কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশের সঙ্গে এবং বাংলাদেশের ভেতরে বাণিজ্য গড়ার জন্য উৎসাহিত করার আহ্বান জানান।
এশিয়ায় বাংলাদেশের অনুকূল ‘ভূ-কৌশলগত অবস্থান’-এর কথা উল্লেখ করে লুক্সেমবার্গের মন্ত্রী বাংলাদেশ ও লুক্সেমবার্গের মধ্যে ‘লজিস্টিক সার্ভিস’ সুবিধা প্রতিষ্ঠার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ও লুক্সেমবার্গের মধ্যে ‘এয়ার সার্ভিসেস এগ্রিমেন্ট’ দ্রুত সম্পাদনের আহ্বান জানান। লেনার্ট ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশের অভিযাত্রার জন্য ‘টেকসই অর্থায়ন’-এর প্রস্তাব করেন।
বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো গভীর ও বিস্তৃত করতে ড. আবদুল মোমেন বাংলাদেশে লুক্সেমবার্গের একটি আবাসিক মিশন স্থাপন অথবা কমপক্ষে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত লুক্সেমবার্গের দূতাবাসকে একইসাথে বাংলাদেশেরও দায়িত্ব অর্পণের জন্য লুক্সেমবার্গ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্ববান জানান। বর্তমানে ঢাকাস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাস লুক্সেবার্গ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাপ্তরিক কার্যাবলী দেখাশোনা করে থাকে। আবদুল মোমেন কারিতাসের মতো এনজিওর মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তার জন্য লুক্সেবার্গের প্রশংসা করেন।
প্রতিনিধি দল লুক্সেমবার্গ সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শনের জন্য সাভার, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম সফর করে।