বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করবে

690

ঢাকা, জুন ১২, ২০১৯ (বাসস) – বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সহায়তায় জনগণের সাথে জনগণের সম্পর্ক বৃদ্ধির পাশাপাশি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার লক্ষে কাজ করতে সম্মত হয়েছে।
দুই সরকার নিরাপত্তা, উন্নয়ন, মানবিক সহায়তা, দুর্যোগ ত্রাণ এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার উপর গুরুত্ব আরোপ করে দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বের লক্ষ্যে তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। সোমবার ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত ৭ম মার্কিন-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব সংলাপের পর যুক্ত বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক ও মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারী ডেভিড হেইল যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক এলাকার সচেতনতা, জলদস্যুতা, এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা সমন্বয় বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
উভয় সরকার সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে মত বিনিময় করেছে এবং এই বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা অন্বেষণ করতে সম্মত হয়েছে।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সংকটের মূল কারণগুলি দূর করার প্রয়োজনীয়তার উপর এবং রোহিঙ্গাদের রাখাইনে স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, সম্মানের সঙ্গে এবং টেকসই উপায়ে প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তগুলি তৈরি করার বিষয়ে জোর দিয়েছে।
মিয়ানমারের এগার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অন্যদিকে বাংলাদেশ অব্যাহত সমর্থনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। এই সংকট মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র ৪৯৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি সহায়তা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য অতিরিক্ত সহায়তা জোরদার করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। উভয় সরকার রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতাদের প্রতি সমর্থন দেয়ার জন্য জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে এবং সংকট সমাধানের জন্য বার্মার (মিায়ানমার) উপর কার্যকর চাপ প্রয়োগের বিষয়ে একমত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং ২০২৪ সালে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়া প্রয়াসের প্রশংসা করেছে।
অবকাঠামো ও জ্বালানি প্রকল্পের সহায়তায় বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগ সহজতর করার পরিকল্পনা সম্পর্কে মতবিনিময় করেছে বাংলাদেশ। ঢাকা আশা প্রকাশ করেছে যে, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগ (এফডিআই) উৎসাহিত হবে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে সহায়তা দিতে মার্কিন ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখবে। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বজুড়ে শান্তিরক্ষা অভিযানে বাংলাদেশের প্রধান ভূমিকা স্বীকৃতি দিয়েছে। উভয় দেশ একমত হয়েছে যে, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ৮ম অংশীদারিত্বের সংলাপ পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।