বাসস ক্রীড়া-৯ : ইউরোপীয় আদলে নাইজেরিয়ার মোকাবেলা করতে চায় ক্রোয়েশিয়া

323

বাসস ক্রীড়া-৯
ফুটবল-বিশ্বকাপ-ক্রেয়েশিয়া-নাইজেরিয়া-প্রিভিউ
ইউরোপীয় আদলে নাইজেরিয়ার মোকাবেলা করতে চায় ক্রোয়েশিয়া
কালিনিনগ্রাদ (রাশিয়া), ১৫ জুন ২০১৮ (বাসস/এএফপি) : শনিবার ডি গ্রুপে পরস্পরের মুখোমুখি হবে বিশ্বকাপের সাবেক সেমিফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়া এবং আফ্রিকার পাওয়ার হাউজ নাইজেরিয়া। এদিনেই আয়োজকদের পরীক্ষা দিতে হবে বর্ণবাদ বিরোধী প্রস্তুতির।
২০ বছর আগে ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে সেরা চারে জয়াগা করে নিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা হারিয়ে দিয়েছিল জার্মানীকে। আক্রমণাত্মক একটি স্কোয়াড মাতিয়ে রেখেছিল সমর্থকদের।
অপরদিকে আফ্রিকান ফুটবলে দীর্ঘ সময় ধরে সফলতা ধরে রেখেছে নাইজেরিয়া। যাদের বেশ কিছু খেলোয়াড় নিয়মিতভাবেই খেলছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে। তারাই এই ম্যাচের মাধ্যমে বিশ্বকাপে অংশ নেয়া বিগত ১২ম্যাচে দ্বিতীয় জয় নিশ্চিত করতে চায়।
ফিফার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে এখনো ম্যাচের অনেক টিকিট অবিকৃত দেখা যাচ্ছে। অথচ ম্যাচ শুরুর আর মাত্র ২৪ ঘন্টাও বাকী নেই। এই ম্যাচ দিয়ে রাশিয়াকে বর্ণবাদ প্রতিরোধে সক্ষমতার প্রমাণের চ্যালেঞ্জও মোকাবেলা করতে হবে। কারণ এই ম্যাচে বর্ণবাদী আচরণ নিয়ে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বর্ণবাদী আচরণ বেড়েছে রাশিয়ায়। ১৯৯১ সালে সৌভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাবার পর ক্লাবগুলো যখন ঘরোয়া ফুটবলে বিদেশী খেলোয়াড় আনতে শুরু করল তখন এর প্রভাব দেখা যায়।
ফ্রান্সের বিপক্ষে গত মাসে একটি প্রীতি ম্যাচ চলাকালে কতিপয় দর্শকের বর্ণবাদী আচরণের জন্য ২৫ হাজার ইউরো জরিমানাও গুনতে হয়েছে রুশ ফুটবল ফেডারেশনকে। বর্ণবাদ ঠেকাতে তিন স্তরের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ফিফা।
এদিকে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছানোর জন্য বেশ সংগ্রাম করতে হয়েছে ক্রোয়েশিয়াকে। তবে যেভাবে তারা শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপের টিকিট সংগ্রহ করেছে সেটা অবশ্যই মনোমুগ্ধকর। অ্যান্টে ক্যাসিচের কাছ থেকে যখন নতুন কোচ হিসেবে জøাটকো ডেলিস দায়িত্ব গ্রহণ করেন তখন গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ বাকী। এর আগেই ইউক্রেনকে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে তারা। শেষ ম্যাচে গ্রীসের বিপক্ষে ৪-১ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া।
দলটির মধ্যমাঠে যেমন লুকা মদ্রিচ ও ইভান রাকিটিচের মতো তারকা খেলোয়াড়রা আছেন তেমনি আক্রমণ ভাগে আছেন নিকোলা কালিনিচ, আন্দ্রেই ক্রামারিচ, ইভান পেরিসিচ ও মারিও মানজুকিচের মতো ডাকসাইটে তারকা। যারা যে কোন শক্তিশালী রক্ষণভাগ ভেঙ্গে ফেলার যোগ্যতা রাখে।
অপরদিকে আফ্রিকা অঞ্চল থেকে প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত টিকিট পেয়েছে নাইজেরিয়া। দলটি এমন এক গ্রুপ থেকে উঠে এসেছে যেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে ছিল আফ্রিকা অঞ্চলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ক্যামেরুন, সাবেক চ্যাম্পিয়ন জাম্বিয়া এবং ২০১০ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা আলজেরিয়া।
গত নভেম্বরে একটি প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে ৪-২ গোলে হারিয়েছিল সুপার ঈগলরা।
দলে রয়েছে বেশ কজন প্রতিশ্রুতিশীল ফুটবলার। তবে গোটা দলটি মধ্যম মানের। শক্তিশালী আক্রমনভাগের সামনে সহজেই ভেঙ্গে পড়তে পারে তাদের দূর্বল রক্ষণ। ক্রোয়েশিয়ার দুর্দান্ত মিডফিল্ডারদের সামনে টিকে থাকা কঠিন হবে সুপার ঈগলসদের জন্য।
এবারের বিশ্বকাপে ‘ডেথ গ্রুপ’ হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছে ডি গ্রুপটি। এই গ্রুপ থেকে অবশ্য যে কোন দলই দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছে যেতে পারে। যদিও নিজেদের আসল দক্ষতা এখনো দেখাতেই পারেনি আর্জেন্টিনা। সেটি হলে তাদের সঙ্গে পাল্লা দেয়া যে কোন প্রতিপক্ষের জন্য কঠিন হবে। তবে সম্ভাবনার কথা বাদ দিলে এই মুহূর্তে সেরা হিসেবে ক্রোয়েশিয়াকেই ধরা যেতে পারে।
ক্রোয়েশিয়া
গোলরক্ষক : ড্যানিয়েল সুবাসিচ (২৩), লভরে কালিনিচ (১২), ডোমিনিক লিভাকোভিচ (১)।
রক্ষণভাগ : ভেড্রান কোরলুকা (৫), ডোমাগো ভিদা (২১), ইভান স্ট্রিনিচ (৩), ডেজান লভরেন (৬), সিমে ভার্সালিকো (২), জোসিপ পিভারিচ (২২), টিন জেডভাজ(১৩), ডুয়ে চ্যালেটা-কার এজ (১৫)।
মিডফিল্ডার : ইভান পেরিসিচ (৪), লুকা মদ্রিচ (১০), ইভান রাকিটিচ (৭), মাতেও কোভাচিচ (৮), মিলান বাদেলি (১৯), মার্সেলো ব্রোজোভিচ (১১), ফিলিপ ব্রাডারিচ (১৪)।
ফরোয়ার্ড : মারিও মানজুকিচ (১৭), নিকোলা কালিনিচ (১৬), আন্দ্রেই ক্রামারিচ (৯), মার্কো পিয়াচা (২০), এ্যান্টে রেবিচ (১৮)।
কোচ : জøাটকো ডেলিচ
নাইজেরিয়া
গোলরক্ষক : ফ্রান্সিস উজোহো (২৩), ইকেচুকুয়া এজেনবা (১), ড্যানিয়েল আকপেয়ি (১৬)।
রক্ষণভাগ : কেনেথ ওমেরু (২২), এলডারসন এচিয়েজিলি (৩), লিয়ন বালোগান (৬), উইলিয়াম ট্রুস্ট-ইকোং (৫), শেহু আব্দুল্লাহি (১২), টাইরোন এবুয়েহি (২১), ব্রায়ান ইড ু(২), চিয়েদোজি আওয়াজিয়েম (২০)।
মধ্য মাঠ : উইলফ্রেড এনদিদি (৪), ওজেনায়ি ওনাজি (১৭), মিকেল ওবি (১০), জন ওগু (১৯), ওঝেনেকারো এটেবো (৮), জোয়েল ওবি (১৫)।
আক্রমণ ভাগ : সিমিওন এনওয়ানকে া(১৩), ভিক্টর মসেস (১১), ওডিয়ন ইঘালো (৯), কেলেচি ইহেনাচো (১৪), আহমেদ মুসা (৭), এ্যালেক্স আইওবি (১৮)।
কোচ: গার্নট রোহর
বাসস/এএফপি/এমএইচসি/১৬০৫/মোজা/নীহা