অস্ট্রেলিয়াকে ৩৬ রানে হারিয়েছে ভারত

369

লন্ডন, ৯ জুন, ২০১৯ (বাসস) : বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে সাবেক চ্যাম্পিয়ন ভারত। টুর্নামেন্টে আজ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত ৩৬ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। পক্ষান্তরে টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে প্রথম পরাজয়ের স্বাদ পেল অস্ট্রেলিয়া।
কেনিংটন ওভালে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হওয়া শিখর ধাওয়ানের সেঞ্চুরিতে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৫২ রান সংগ্রহ করে ভারত। ধাওওয়ান সংগ্রহ করেছেন ১১৭ রান। এ ছাড়া দলের হয়ে অধিনায়ক বিরাট কোহলি ৮২ এবং ওপেনার রোহিত শর্মা ৫৭ রান সংগ্রহ করেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মার্কাস স্টয়নিস ২টি উইকেট সংগ্রহ করেছেন।
দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান অসাধারণ ব্যাটিং দিয়ে প্রমান করেন টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে ভুল করেননি অধিনায়ক কোহলি। এই দুই ব্যাটসম্যান এমনভাবে ব্যাটিং করেছেন, যাতে মনেই হয়নি প্রতিপক্ষের নাম অস্ট্রেলিয়া। দলকে কোন রকম বিপর্যয়ে না ফেলেই গড়ে তোলেন পার্টনারশীপের সেঞ্চুরি। দলীয় সংগ্রহ ১২৭ রানে পৌঁছানোর পর এই জুটিকে বিচ্ছিন্ন করেন নাথান কালটার নাইল। অসি এই ডানহাতি পেসার উইকেট রক্ষক এ্যালেক্স ক্যারির সহায়তা নিয়ে যখন রোহিত শর্মার (৫৭) উইকেটটি শিকার করেন তখন ২২.৩ ওভারে ১২৭ রানে পৌঁছে গিয়েছিল ভারত। এরপর অধিনায়ক বিরাট কোহলি জুটি বাঁধেন আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে। এই জুটিও অসি বোলারদের শাসন করেছে অসাধারণ দক্ষতায়। এরই ধারবাহিকতায় দলকে পার করে দেয় দুই’শ রানের কোটা। শেষ পর্যন্ত এই জুটি ভাঙ্গেন মিচেল স্টার্ক। বদলী খেলোয়াড়ের ক্যাচের সহায়তায় তিনি যখন ধাওয়ানকে বিদায় করেন তখন ভারতীয় সংগ্রহ শালায় জমা পড়েছে ২২০ রান। এর আগেই ৯৫ বলে সেঞ্চুরি পুর্ন করেন ধাওয়ান। শেষ পর্যন্ত ১০৯ বলে ১৬ বাউন্ডারিতে ১১৭ রানে আউট হন তিনি।
এরপর ৫৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি পুর্ন করেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তিনি ব্যক্তিগত ৮২ রানে মার্কাস স্টয়নিসের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত হন। কামিন্সের হাতে ধরা পড়ে কোহলি যখন মাঠ ছাড়েন তখন ভারতীয় দলের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৫.৫ ওভারে ৩০১ রান। মাত্র ৭৭ বলে চারটি বাউন্ডারি ও ২টি ওভার বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল অধিনায়কের ইনিংস। এরপর হার্ডিক পান্ডিয়ার ২৭ বলে ৪৮ ও এমএস ধোনির ১৪ বলে ২৭ রানের বিধ্বংসি ইনিংস ভারতীয় দলকে ৩৫০ রানের স্তর পেরুতে সহায়তা করে। ৩ বলে ১১ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন কেএল রাহুল।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে স্টয়নিসের দুই উইকেট ছাড়াও একটি করে উইকেট নিয়েছেন প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক ও নাথান কালটার নাইল।
জয়ের জন্য ৩৫৩ রানের বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা কিছুটা ধীর গতিতে। দুই ওপেনার এ্যারন ফিঞ্চ ও ডেভিড ওয়ার্নার প্রথমে দেখে-শুনে খেলতে থাকে। ১৩,১ ওভারে দলীয় ৬৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ৩৫ বলে তিনটি বাউন্ডারি ও এক ওভার বাউন্ডারিতে ৩৬ রানে রান আউটের ফাঁদে পড়েন ফিঞ্চ। তবে তার বিদায়ের পর ওয়ার্নারের সাথে জুটি বাঁধেন সাবেক অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। এ জুটিতে ৭০ বলে ৭২ রান যোগ করেন। হাফ সেঞ্চৃুরি তুলে নেন ওয়ার্নার। তবে এরপর নিজের ইনিংসটি খুব বেশি বড় করতে পারেননি তিনি। দলীয় ১৩৩ ব্যক্তিগত ৫৬ রানে ওয়ার্নার আউট হলে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে। যুজবেন্দ্রা চাহালের প্রথম শিকার হওয়ার আগে ৮৪ বল মোকাবেলায় বাউন্ডারি মারেন পাঁচটি। এরপর স্মিথ ও উসমান খাজা জুটিবদ্ধ হয়ে দলেকে ম্যাচে ফেরানোর চেস্টা করেন। চতুর্ত উইকেট জুটিতে ৬২ বালে ৬৫ রান যোগ করার পর ব্যক্তিগত ৪২ রানে জসপ্রিত বৃমরাহর প্রথম শিকার হয়ে ম্ঠা ছাড়েন খাজা। তবে একপ্রান্তে অবিচল ছিলেন স্মিথ। তবে ৭০ বলে ৬৯ রান করে স্মিথ ভুবনেশ্বর কুমারের শিকার হলে ২৩৮ রানে চুতুর্থ উইকেট হারায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। এরপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ঝড়ো গতিতে শুরু কওে ১৪ বলে ২৮ রানে আউট হলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় অস্ট্রেলিয়া। শেষ দিকে উইকেটরক্ষক এ্যালেক্স ক্যারি ৩৫ বলে অপরাজিত ৫৫ রান করে কেবলমাত্র পরাজয়ের ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছেন। শেষ দিকে আর কোন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে না পারলে সব উইকেট হারিয়ে ৩১৬ রানে থামে অস্ট্রেলিয়া ইনিংস।
কুমার এবং বুমরাহ তিনটি করে এবংচাহাল শিকার করেন ২ উইকেট।