মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার প্রধান চ্যালেঞ্জ নিন্দা ও কুসংস্কার : সায়মা

904

জেনেভা (সুইজারল্যান্ড), ২২ মে, ২০১৯ (বাসস) : অটিজম নিউরোডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডার বিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন বলেছেন, নিন্দা ও কুসংস্কার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবেলার প্রধান চ্যালেঞ্জ।
সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় ৭২তম বিশ্ব স্বাস্থ্য সমাবেশের পাশাপাশি ‘মেন্টাল হেল্থ : টাইম টু স্কেল আপ’ শীর্ষক এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘নিন্দা ও কুসংস্কার বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবেলার ক্ষেত্রে দুটি প্রধান চ্যালেঞ্জ।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণপূর্ব এশিয়া অঞ্চলের অটিজম বিষয়ক শুভেচ্ছা দূত সায়মা ওয়াজেদ বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসইএআরও দেশগুলো যেসব অভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- নিন্দা ও কুসংস্কার, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পেশাজীবীর অপ্রতুলতা, স্বল্প বাজেট বরাদ্দ, মানসিক স্বাস্থ্য কর্মসূচি বাস্তবায়নে সমন্বয়ের অভাব ও বিশাল চিকিৎসা ঘাটতি।’
সায়মা অধিবেশনে বাংলাদেশে মানসিক চিকিৎসার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফ করেন।
সায়মা বলেন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পেশাজীবীর সংখ্যা খুবই কম। আমাদের মাত্র ৬০জন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট রয়েছেন। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সাধারণ চিকিৎসক রয়েছেন ১০ হাজার এবং নার্সের সংখ্যা ১২ হাজার। আর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সাধারণ চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৬০ জন।
তিনি বলেন, ‘সুখবর হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি যে মানসিক স্বাস্থ্য আইন পাস করেছে তাতে সংকট প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনায় মানসিক সহায়তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া এখন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য নীতিমালা চূড়ান্তকরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
ওয়ার্কিং গ্রুপকে সহায়তা দিতে যাওয়া বিশেষজ্ঞ টিমের নেতৃত্বস্থানীয় বিশেষজ্ঞ হিসেবে সায়মা বলেন, তার পরিকল্পনা হলো কৌশলগত পরিকল্পনার সার্বিক হওয়া নিশ্চিত করা এবং শৈশব থেকে রেজিলিয়েন্সি ও কমিউনিটির কল্যাণ বৃদ্ধির ওপর আলোকপাত করা, যা মানসিক সুস্থতা নিশ্চিতের মূল উপাদান।
তিনি বলেন, ‘এই জটিল ও বহুমুখী ইস্যু মোকাবেলা করতে হলে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় দরকার। আর বাংলাদেশ তা করতে প্রস্তুত হয়েছে। সামাজিক নিন্দা ও পেশাজীবীর অভাব সত্ত্বেও আমরা সমাজের কাছে পৌঁছার উদ্ভাবনী পদ্ধতি গড়ে তোলার ব্যাপারে আশাবাদী। বাংলাদেশের কর্ণধাররা মানসিক স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে এবং আমাদের সকল নাগরিকের কল্যার নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
জাহিদ মালেক তার পক্ষ থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে বাংলাদেশে মানসিক রোগীদের সঠিক চিকিৎসায় ঘাটতি কমাতে সহায়তা কামনা করেন।