পা হারানো রাসেলকে ক্ষতিপূরণের বাকি টাকা আজও দেয়নি গ্রিনলাইন : আদালতের ক্ষোভ

190

ঢাকা, ২২ মে, ২০১৯ (বাসস) : রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ফ্লাইওভারের ওপর গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসচাপায় পা হারানো প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারকে অবশিষ্ট ৪৫ লাখ টাকা এখনো দেয়নি মালিকপক্ষ। আদালত ও তাদের আইনজীবীর সঙ্গেও করেনি কোনো ধরনের যোগাযোগ।
আজ এমন তথ্য আদালতে জানিয়েছেন দুই পক্ষের আইনজীবী। আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খোন্দকার শামসুল হক রেজা ও আইনজীবী উম্মে কুলসুম স্মৃতি। গ্রিনলাইনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অজি উল্লাহ।
শুনানিতে আজ আইনজীবী অজি উল্লাহ বলেন, গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তাই আমি নিজেকে এই মামলা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আদালত এ সময় রাসেল সরকার এআদালআদালত আদালত আদালত বলেন, আমাদের কারো প্রতি কোনো রাগ, অনুরাগ, বিরাগ নেই। কিন্তু আমাদের কাছে গ্রিনলাইনের আচরণ
ভাল লাগেনি। আমরা কঠোর হতে চাই না। কিন্তু আমাদের বাধ্য করবেন না কঠোর হতে।
আমাদের নমনীয়তাকে দুর্বলতা মনে করার কারণ নেই।
এরপর বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ পরবর্তী আদেশের জন্য ২৫ জুন দিন ধার্য রেখেছে।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ফ্লাইওভারের ওপর গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসচাপায় পা হারানো প্রাইভেটকারচালক রাসেল সরকারকে বাকি ৪৫ লাখ টাকা দিতে (অন্তত আংশিক) ২২ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে গত ১৫ মে আদেশ দেয় হাইকোর্ট। গত ১০ এপ্রিল রাসেল সরকারকে পাঁচ লাখ দেয়া হয় টাকার চেক দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
একইসঙ্গে বাকি ৪৫ লাখ টাকা দিতে গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ এক মাস সময় দিয়েছিলো হাইকোর্ট।
গত বছরের ২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে কথা কাটাকাটির জেরে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসচালক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাইভেটকার চালকের ওপর দিয়েই বাস চালিয়ে দেন। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারের (২৩) বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করেন সংরক্ষিত আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি। এ রিটের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১৪ মে রাসেলকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। সম্প্রতি রাসেলের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, বাস কর্তৃপক্ষ তার কোনো খোঁজ-খবর নেয়নি।
পরে গত ১২ মার্চ এ হাইকোর্ট বেঞ্চ রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দেয়ার আদেশের পাশাপাশি রাসেলের অন্য পায়ে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হলে এবং কাটাপড়া বাম পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগানোর খরচও গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে দিতে আদেশ দেয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে এ পরিবহন কর্তৃপক্ষ। গত ৩১ মার্চ আবেদনটি নাকচ হলে হাইকোর্ট আদেশই বহাল থাকে। এপর হাইকোর্ট ৩ এপ্রিলের মধ্যে টাকা পরিশোধ করে ৪ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে টাকা না দেয়ায় ৪ এপ্রিল গ্রিন লাইন পরিবহনের ম্যানেজারকে হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। ম্যানেজার আব্দুস সাত্তার হাজির হয়ে গ্রিনলাইনের মালিক দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য রয়েছেন বলে আদালতকে অবহিত করেন। একইসঙ্গে মালিক ৯ এপ্রিল ফিরবেন বলে জানান। মালিক দেশে ফিরলে জরিমানার টাকা চেকে ৫ লাখ দিয়ে বাকীটার জন্য সময় নেন। বিষয়টি নিয়ে আজ আদালতে তারিখ ধার্য ছিল।