দিনাজপুরের লিচু বাজারে উঠতে শুরু করেছে

599

দিনাজপুর, ১৯ মে, ২০১৯ (বাসস) : মধুমাস হিসেবে পরিচিত জ্যৈষ্ঠ মাসে দিনাজপুরের লিচু বাজারে উঠতে শুরু করেছে। এবার জেলায় লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে।
কৃষি বিভাগে সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার পাঁচহাজার দুই হেক্টর জমিতে ২৪ হাজার মেট্রিকটন লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে।
জেলায় কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক তৌহিদুল ইকবাল বলেন, ‘এবার জেলার ১৩টি উপজেলায় পাঁচহাজার দুই হেক্টর বাগানে লিচু চাষ হয়েছে। মোট ৩ হাজার ২৬৭টি লিচু বাগান রয়েছে। এছাড়া মানুষের বসতবাড়ি ও অন্যান্য স্থানে থাকা লিচু গাছে বাম্পার লিচু ফলন হয়েছে।’
তিনি জানান, এবারে জেলায় ঐতিহ্যবাহী বেদেনা, হাইব্রিড জাতের চায়না-২, ৩ ও ৪ জাতের লিচু ব্যাপকহারে চাষ করা হয়েছে। এছাড়া দেশী জাতের মাদ্রাজী, বোম্বাই ও কাঠালী লিচু রয়েছে।
সরেজমিন বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও ফল ব্যবসায়িদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মধু মাসের শুরুতেই মাদ্রাজী ও কাঠালী লিচু বাজারে উঠেছে। দেশী লিচুর দাম তুলনামূলক কম। দিনাজপুর শহরের কালিতলাস্থ সবচেয়ে বড় লিচু বাজারে দেশী লিচু মাদ্রাজী ও কাঠালী ব্যাপকহারে উঠতে শুরু করেছে। স্থানীয় ক্রেতারা ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় প্রতিশ’ লিচু ক্রয় করছেন। প্রতিদিন দিনাজপুর থেকে ঢাকাগামী দিবা ও নৈশ কোচগুলোতে লিচুর খাচা বোঝাই করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নেয়া হচ্ছে।
সদর উপজেলার মাসিমপুর, আউলিয়াপুর, পুলহাট, উলিপুর, চেরাডাঙ্গী, খানপুর ও রামসাগর এলাকায় ঐতিহ্যবাহী বেদেনা লিচুর বাগান বেশি। বেদেনা লিচু চাহিদা থাকায় বাগান থেকেই এই লিচু বিক্রি হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়। আগামী ১৫ জৈষ্ঠ্যের মধ্যে বেদেনা লিচু বাগানে এবং বাজারে পাওয়া যাবে।
১৫ মের পর থেকে ২০ জুন পর্যন্ত জেলার হাট-বাজারগুলোতে হাইব্রিড লিচু চায়না থ্রি ও চায়না ফোর জাতের লিচু পাওয়া যাবে। এই লিচুটি অন্যান্য লিচুর চেয়ে আকারে একটু বড় ও সুস্বাদু।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাজী জাতসহ দেশী জাতের কিছু লিচু বাদে চায়না থ্রি ও ফোর-সহ অন্য জাতের লিচুগুলো ঈদ-উল ফিতরের পরে বাজারজাত করতে পরিচর্যা চালিয়ে যাচ্ছেন বাগান মালিকরা।
দিনাজপুর বিরল উপজেলার বিজোরা গ্রামের হাসান আলী জানান, তার ৩টি লিচু বাগানে ৭ একর ১০ শতক জমিতে প্রায় সাড়ে ৫শ’ লিচুর গাছ রয়েছে। এর মধ্যে চারশ’টি চায়না থ্রি ও চায়না ফোর জাতের। বাকি দেড়শ’ গাছ দেশি প্রজাতির মাদ্রাজী ও বোম্বাই লিচুর বাগান।
তিনি জানান, ৩টি বাগান ২ বছরের জন্য ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন মুন্সিগঞ্জের ব্যবসায়ীর কাছে। তারা বাগান নেয়ার পর থেকে ভালো ফলনের আশায় পরিচর্যা চালিয়ে যাচ্ছে। এবারে লিচুর ভালো ফলন হয়েছে।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম বলেন, ‘লিচু বাগানে কোন কীটনাশক স্প্রে করে যাতে লিচু খাওয়ার অনুপযোগি করা না হয় সেজন্য লিচু বাগানীদের সাথে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে বৈঠক করে সচেতন করা হয়েছে। তারপরেও যদি কেউ করে তাহলে ওই ব্যবসায়ী বা বাগান মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’