বাসস দেশ-৩২ : ভূমধ্যসাগরে এক বাংলাদেশি নিহত, ৩৯ নিখোঁজ : মোমেন

339

বাসস দেশ-৩২
পররাষ্ট্রমন্ত্রী-নৌডুবি-নিহত
ভূমধ্যসাগরে এক বাংলাদেশি নিহত, ৩৯ নিখোঁজ : মোমেন
ঢাকা, ১৫ মে, ২০১৯ (বাসস) : পররাষ্টমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীবাহী নৌযানডুবিতে নিহত একজন বাংলাদেশি বলে সনাক্ত করা হয়েছে এবং আরো ৩৯ বাংলাদেশি নাগরিক নিখোঁজ রয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আজ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের কর্মকর্তারা এ পর্যন্ত নিহত একজন বাংলাদেশি বলে সনাক্ত করেছেন এবং আরো ৩৯ বাংলাদেশি নাগরিক নিখোঁজ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে তিউনিসিয়ায় অবস্থানরত লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তারা ডুবে যাওয়া নৌযানের উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের সাথে কথা বলে নিহত ও নিখোঁজ বাংলাদেশিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
মোমেন বলেন, ‘এ পর্যন্ত নিহত একজন বাংলাদেশি বলে সনাক্ত হয়েছেন। তার নাম উত্তম দাস। তার বাড়ি শরিয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায়।
তিনি জানান, নৌকাডুবির পর তিউনিসিয়ার জেলেদের উদ্ধার করা ১৬ জনের মধ্যে ১৪ জনই বাংলাদেশি।
এদর মধ্যে চারজন মারাত্মক আহত অবস্থায় তিউনিসিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকি ১৪ জন সেখানে রেডক্রিসেন্টের ক্যাম্পে অবস্থান করছেন।
আবদুল মোমেন বলেন, আমাদের কর্মকর্তারা নিখোঁজদের সম্পর্কে আরো তথ্য সংগ্রহে কাজ করছেন। ‘ঠিক কতজন বাংলাদেশি নিখোঁজ রয়েছেন তা এখনো অনিশ্চিত।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৩০ জন বাংলাদেশিসহ ১৫০ জন অভিবাসীকে নিয়ে একটি বড় নৌযান বৃহস্পতিবার রাতে লিবিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূলীয় জুওয়ারা ছেড়ে যায়। পরে তাদের দুটি ছোট নৌযানে তোলা হয়। এর মধ্যে একটি ইতালি উপকূলে পৌঁছলেও দ্বিতীয়টি ৭০-৮০জন যাত্রী নিয়ে তিউনিসিয়ার অদূরে ডুবে যায়।
তিনি বলেন, বেঁচে যাওয়াদের তথ্য মতে তাদের জোর করে ছোট নৌযানে তোলা হয়। কেউ কেউ ছোট নৌযানে উঠতে আপত্তি করলে তাদের এমনকি শারীরিক নির্যাতন করা হয়।
পররাষ্টমন্ত্রী বলেন, তিউনিসিয়ায় যখনই পাওয়া যাক, বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের মৃতদেহ দেশে নিয়ে আসবে।
তিনি বলেন আইনশৃংখলা বাহিনী ইতোমধ্যে অবৈধভাবে ইতালি যেতে প্ররোচণা দানকারী এখানকার মানবপাচারচক্রগুলো সনাক্ত করতে কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে সিলেটে ২৩টি প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সিকে মানবপাচারে জড়িত থাকার সন্দেহে সিল করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নোয়াখালীর তিন ভাইয়ের একটি সিন্ডিকেট এসব অভিবাসীদের কয়েজেনকে পাঠানোর জন্য দায়ী বলে সনাক্ত করা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনার পর রেড ক্রিসেন্টে’র সাথে যোগাযোগ রাখতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাগণ তিউনিশিয়া থেকে লিবিয়ায় গেছেন।
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ যুদ্ধ-বিধ্বস্ত লিবিয়ায় কোনো কর্মি পাঠায়নি। মানব পাচারকারীদের সহায়তায় তুর্কি ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের মাধ্যমে বাংলাদেশিরা লিবিয়া প্রবেশ করেছে।
তিনি আরো বলেন, “যেসব বাংলাদেশিরা তাদের পরিবারের জন্য অধিক অর্থ পেতে লিবিয়ায় গিয়েছে তারা পাচারকারীদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে। আমরা ওইসব পাচারকারীদের সম্পর্কে জানিয়েছি। তাদেরকে ওইসব গ্যাং লিবিয়ায় জিম্মি করে রেখেছে।”
মোমেন কোনো বাংলাদেশি যেন অবৈধ অভিবাসনের মাধ্যমে দেশের সীমান্ত ক্রস করতে না পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও অভিবাসন পুলিশের সমন্বয় গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
নিখোঁজ বাংলাদেশিরা হলেন, আব্দুল আজিজ, আহমেদ, লিটন, খোকন, আফজাল হোসেন, মোমিন আহমেদ, দিলাল আহমেদ, কাসেম, জিল্লুর রহমান, কামরান আহমেদ মারুফ, রোকন আহমেদ, আয়েজ আহমেদ, সুজন আহমেদ, ইন্দ্রজিত, জুয়েল, শোয়েব, সিলেটের সাজু, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, সুনামগঞ্জের নাজির আহমেদ,হাফিজ শামিম আহমেদ, মৌলভীবাজারের ফরহাদ আহমেদ, হবিগঞ্জের মুকতাদির, আলী আকবর, জাকির হাওলাদার, শাহেদ, নায়িম, স্বপন, নাদিম, মাদারিপুরের সজিব, সাব্বির, জালালুদ্দিন, কিশোরগঞ্জের সজল, আব্দুর রহিম, আওলাদার, নাসির আহমেদ, মুনির, রাজিব, পারভেজ, শরীয়তপুর থেকে সুমন ও নরসিংদীর জাহিদ।
বাসস/টিএ/অনুবাদ-এইচএন/এএএ/২০৫৫/কেএমকে/কেকে