‘ডি মার্ক’ পদ্ধতিতে বেনাপোল বন্দরে দ্রুত পন্য খালাস হচ্ছে

337

ঢাকা, ১৫ মে, ২০১৯ (বাসস): দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে পণ্যের শুল্কায়নে ‘ডি মার্ক’ পদ্ধতির ব্যবহার শুরু হওয়ায় আগের তুলনায় অনেক কম সময়ে পণ্য খালাস হচ্ছে। এই বন্দর দিয়ে আমদানি করা ৮০ শতাংশ পণ্যের ক্ষেত্রে এখন ‘ডি মার্ক’ পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে। এসব পণ্য খালাসে সর্বোচ্চ তিন দিন সময় লাগছে। আগে যেখানে গড়ে ৩৩ দিন সময় লাগত। পণ্য খালাসের সময় সময় কমে যাওয়ায় আমদানিকারকদের এখন অতিরিক্ত মাশুল ও ট্র্যক ভাড়া গুনতে হচ্ছে না। এতে আমদানি ব্যয় কমেছে, যার সরাসরি প্রভাব পণ্যের মূল্যের ওপর বর্তায়।
গতবছরের অক্টোবর মাস থেকে স্বল্প পরিসরে বেনাপোল বন্দরে ‘ডি মার্ক’ পদ্ধতির ব্যবহার শুরু হয়।এখন সেখানে ৮০ শতাংশ পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার হচ্ছে। ‘ডি মার্ক’ পদ্ধতি হলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই আমদানি পন্য খালাস করা। এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার বেলাল চৌধুরী বাসসকে বলেন, ‘এক ধরনের পণ্যের ঘোষণা দিয়ে আরেক ধরনের পণ্য আমদানির অভিযোগ যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নেই তাদের পণ্য,সরকারি প্রকল্পের পণ্য এবং শিল্পখাতে সুনাম ভালো এমন আমদানিকারকদের পণ্যের চালানের ক্ষেত্রে সাধারণত ‘ডি মার্ক’ দেয়া হয়। আমদানিকারকদের হয়রানি কমাতে এবং ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ এর উন্নয়নে এই পদ্ধতি চালু করেছি।’
তিনি জানান, পণ্য খালাসের ‘ডি মার্ক’ পদ্ধতির আওতায় প্রতিদিন সকালে পণ্য চালানের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করে বন্দরের একটি সমন্বিত দল। ওই তালিকা দেখে কাস্টমস কর্মকর্তারা তালিকায় থাকা চালানের পাশে ইংরেজিতে ‘ডি’ অথবা ‘ই’ চিহ্ন বসিয়ে দেন।‘ডি’ মানে ডাইরেক্ট (সরাসরি) এবং ‘ই’ মানে ‘এক্সামিন’ পরীক্ষা।
এই পদ্ধতি চালুর পর এখন আমদানির দিনে (এক দিনে) গড়ে ৪০ শতাংশ পণ্য খালাস হয়ে যাচ্ছে। বাকী পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন দিন সময় লাগছে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউস সূত্র জানায়,গত মার্চ মাসে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিনিধিদল বেনাপোল বন্দর পরিদর্শনে এসে এই পদ্ধতিতে পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া দেখেন। এরপর সংস্থাটি তাদের একটি প্রতিবেদনে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে বেনাপোল কাস্টমস হাউস বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে বলে প্রশংসা করে। সংস্থাটির মতে, বেনাপোল বন্দরের এই পদক্ষেপ অন্য বন্দরগুলোর জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে।
উল্লেখ্য, আইন অনুযায়ী ১০ শতাংশ চালান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার বাধ্যবাধকতা আছে। বন্দরের কর্মকর্তারা সন্দেহমূক্ত মনে করলে ৯০ শতাংশ পণ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই খালাস দিতে পারেন। ফলে এই পদ্ধতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে আইনগত কোন সমস্যা নেই।