বাসস দেশ-২৬ : দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে

674

বাসস দেশ-২৬
বাজেট-দারিদ্র বিমোচন
দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে
ঢাকা, ১১ জুন, ২০১৮ (বাসস) : সত্যিকার অর্থে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য সুশাসন নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করে প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বিষয়ে আজ এক জাতীয় সংলাপে বক্তারা বলেন, মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম কমাতে সরকার থেকে সামাজিক নিরাপত্তাজাল কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের কাছে তাদের ভাতা সরাসরি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
তারা বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তাজাল কর্মসূচির বরাদ্দ যথাযথ ও সঠিকভাবে সঠিক জায়গায় কাজে লাগানো গেলে দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচি স্বার্থক হবে এবং দারিদ্র বিমোচনে সরকার নির্ধারিত সময়ের আগেই লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে। কিন্তু মধ্যসত্ত্বভোগীদের কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে।’
জাতীয় সংসদের মন্ত্রী হোস্টেলের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় সংসদের অতিদারিদ্র এবং নগরের দরিদ্র পথবাসী সম্পর্কিত সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রপ (এপিপিজিএস) আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত বাজেট ২০১৮-’১৯ : দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশা ও সামিাজিক নিরাপত্তাজাল কর্মসূচি’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এপিপিজিএস’র সভাপতি মো. ইসরাফিল আলমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল শিশির শীলের সঞ্চালনায় সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, আব্দুল ওয়াদুদ, নাজমুল হক প্রধান, এডভোকেট সানজিদা খানম, ফিরোজা বেগম চিনু, সেলিনা জাহান লিটা, কনসার্ণ ওয়ার্ল্ড ওয়াউড’র বাংলাদেশ প্রধান একেএম মুসা, সরকারের সচিব এএফএম মসাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এপিপিজিএস’র সিনিয়র পলিসি এডভাইজার টিআইএম জাহিদ হোসেন। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি মোস্তফা কাইয়ুম খান, খন্দকার রেবেকা সুলতানা, আশফাকুর রহমান ও ময়মনসিংহ পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম তরিকুল আলম আলোচনায় অংশ নেন।
ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেন, স্থায়ী দারিদ্র বিমোচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি বাড়ি একটি খামার, আশ্রয়ন প্রকল্পের মতো বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। সরকারের এসব কর্মসূচির কারণে দেশে উল্লেখযোগ্য হারে দারিদ্র বিমোচন হয়েছে। এ কর্মসূচিগুলো সঠিক বাস্তবায়নে প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সকলের সদিচ্ছা।
তিনি বলেন, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ফলে এখন এই ক্ষেত্রে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান সংকোচিত হয়ে আসছে। এদের জন্য এখন বাস্তবমূখী কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। ম্যানুফেকচারিং খাতে এদের কর্মসংস্থানের জন্য কর্মমূখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
ফখরুল ইমাম এমপি বলেন, ‘সুশাসনের অভাবের কারণে মধ্যসত্ত্বভোগীরা নিরাপত্তাজাল কর্মসূচির টাকা পকেটস্থ করছে। সত্যিকার অর্থে দারিদ্র বিমোচন করতে হলে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। সরকার থেকে সুবিধাভোগীদের কাছে সরাসরি ভাতা চলে গেলে মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম কমে যাচ্ছে।’
মূল প্রবন্ধে টিআইএম জাহিদ হোসেন বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নগর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে ক্ষদ্র ঋণের আওতায় ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় পথ শিশুদের পূনর্বাসন কর্মসূচিতে ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া সামজিক নিরাপত্তাজাল কর্মসূচির আওতা ও ভাতা বাড়ানো হয়েছে। বেদে ও হিজড়া সম্প্রদায়কে এর আওতায় আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণায়ের অধীনে ছোট ছোট প্রকল্প বাদ দিয়ে বড় প্রকল্প গ্রহণ গ্রহণ করে অপারেটিং কষ্ট কমিয়ে আনতে পারলে বেশি সংখ্যক দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা জাল কর্মসূচির আওতায় আনা সম্ভব হবে।
এপিপিজিএস বস্তিবাসী ও ভাসমান মানুষসহ নগরের অতি দারিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্য সেবা, নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্য আরো বেশি তহবিল বরাদ্দের জন্য সুপারিশ করে।
বাসস/এএসজি/এমএসএইচ/২০৫৪/কেএমকে